অপরাহ্ উইনফ্রেকে ধুলেন ট্রাম্প

ডোনাল্ড ট্রাম্প  ও  অপরাহ্‌ উইনফ্রে
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও অপরাহ্‌ উইনফ্রে

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবার চটেছেন অপরাহ উইনফ্রের ওপর। শুধুই চটেই থেমে থাকেননি তিনি, উগড়েও দিয়েছেন। ঘটনার কেন্দ্রে রয়েছে ১৮ ফেব্রুয়ারি রাতে সিবিএস টেলিভিশনে প্রচারিত ‘সিক্সটি মিনিটস’ অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানের সঞ্চালক অপরাহ্ উইনফ্রে, যিনি এবারের অনুষ্ঠানটি সাজান ট্রাম্পের এক বছর পূর্তিতে মিশিগানের কিছু ভোটারের প্রতিক্রিয়া নিয়ে। এতে অনেক ভোটারই ট্রাম্প সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করেন, যা ক্ষুব্ধ করেছে প্রেসিডেন্টকে। আর নিজের টুইটার পোস্টে অপরাহ্‌কে একরকম ধুয়ে সেই ক্ষোভ মেটান ট্রাম্প।

অপরাহ্‌’র টেলিভিশন অনুষ্ঠানটি শেষ হওয়া মাত্রই টুইট করে নিজের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান ট্রাম্প। অপরাহকে রীতিমতো ধুয়ে দিয়ে ট্রাম্প ওই পোস্টে লেখেন, ‘টেলিভিশনে ষাট মিনিটের অনুষ্ঠানে এবারের অপরাহকে দেখে এক সময়ের চেনা অপরাহকে মেলাতে পারলাম না। ওঁর নিজের প্রতি আস্থা তলানিতে পৌঁছেছে বলে মনে হলো। নিজের প্রতি বিশ্বাস না উঠে গেলে অমন করে কেউ অন্যের নামে মিথ্যা বলে নিজেকে ওঠাতে চায়? অনুষ্ঠানের পুরো সময় পক্ষপাতমূলক প্রশ্নে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য হাজির করেছে সে। নির্বাচনে আসতে চাইলে অপরাহকে আমি স্বাগত জানাই। নির্বাচনের মাঠে নামলেই বোঝা যাবে, কে কার মুখোশ খুলে দেয়! ওকেও হারাব যখন, তখন ও বুঝবে; মিথ্যার বেসাতি ছড়িয়ে আগেও আমার বিরুদ্ধে অনেকে হালে পানি পায়নি।’
নিউইয়র্ক ডেইলির প্রতিবেদনে বলা হয়, টেলিভিশনের ওই সাক্ষাৎকারে ভোটারদের অনেকে ট্রাম্পকে ‘মাথা গরম’ প্রেসিডেন্ট বলে মত প্রকাশ করেন। অংশগ্রহণকারীদের একজন বলেন, ‘আমার পারমাণবিক বোতাম আরও বড়’ - যুদ্ধের উত্তাপ ছড়ানো টুইটে এ ধরনের গরম-গরম ভাষা আমেরিকার প্রধান নেতার কথাবার্তার ধরন হতে পারে না।
কর্মক্ষেত্রে নারীদের প্রতি যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে এ বছর #মি টু আন্দোলনে সরব হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। সারা বিশ্বে এর প্রভাব এতটাই ছিল যে, এবারের টাইম সেরা ব্যক্তিত্ব পুরস্কারটি কোনো ব্যক্তির হাতে না উঠে, উঠেছে এই আন্দোলনের মঞ্চে। এবারের গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কারে হলিউডের অভিনেত্রীরা সকলে কালো পোশাক পরে যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে তাঁদের প্রতিবাদ জানান। অপরাহ্ উইনফ্রেও এই প্রতিবাদের উচ্চকিত কণ্ঠ হয়ে পুরস্কার মঞ্চে হাজির হন। গোল্ডেন গ্লোবে প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী হয়ে সেসিল বি ডেমিল পুরস্কার নিতে অপরাহ্ বর্ণবাদ, যৌন নিপীড়ন ও অসাম্যের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেন। সারা আমেরিকা অপরাহর এই অনবদ্য বক্তৃতায় মুগ্ধতা প্রকাশ করে। তারপর থেকেই রব ওঠে, ২০২০ সালে ট্রাম্পকে হারাতে অপরাহ্ই হতে পারবেন যোগ্য প্রেসিডেন্ট প্রার্থী।
সিবিএস টেলিভিশনের এই অনুষ্ঠানেও অবশ্য দর্শকেরা অপরাহ্ প্রার্থী হবেন কিনা সেটি জানতেও চেয়েছেন। অপরাহ্ অবশ্য জানিয়ে দেন, রাজনীতি তাঁর ডিএনএতে নেই। তাঁর দ্বারা এই কঠিন কাজটি হয়তো সম্ভব হবে না।
ট্রাম্প অবশ্য অপরাহকে ছেড়ে দিতে নারাজ। ‘ধরি মাছ না ছুঁই পানি’ ভাব ছাড়তে অপরাহকে উপদেশ দেন তিনি। রাজনৈতিক পক্ষপাতমূলক জনমত তৈরির জন্য ‘টেলিভিশনে জনপ্রিয় ভাবমূর্তি কাজে লাগানোর সস্তা পথ না ধরে একেবারে যুদ্ধের ময়দানে নেমেই তবে লড়াইটা হয়ে যাক না!’ আহ্বান ট্রাম্পের। অপরাহ্ বা অন্য যে কেউ প্রার্থী হোন না কেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পই হবেন— এমন আত্মবিশ্বাস টুইটার প্রেসিডেন্টের।