আমাদেরও চিন্তার বিষয়

ফ্লোরিডার স্কুলে বন্দুক হামলা এবং ১৭ জনের মৃত্যু আমাদের নতুন করে আতঙ্কিত করল। আমেরিকা দেশটিতে আমরা অধিকাংশ অভিবাসী
হয়েছিলাম আমাদের সন্তানদের কথা ভেবে। আমাদের সন্তানেরা এ দেশে নিরাপদ থাকবে। ভালো শিক্ষা পাবে। জীবনে আমরা যা পাইনি, যা করতে পারেনি সেটা তারা পাবে। কিন্তু দিন যত যাচ্ছে ততই যেন আতঙ্কিত হয়ে পড়ছি। আমাদের ছেলেমেয়েরা কখন, কোথায় আক্রান্ত হবে তা ভেবে এক মুহূর্ত স্থির থাকতে পারি না।
আমি আমার নিজের কথা বলতে পারি। দেশে থাকতে আমি সব সময় ভয়ে থাকতাম, আমার সন্তানেরা যেন মাদকে জড়িয়ে না পড়ে। সঙ্গ দোষে খারাপ কিছু না করে। তাই অনেক ভালো সুযোগ থাকা সত্ত্বেও আমি ও আমার স্ত্রী দেশ ছেড়ে এই নিউইয়র্কে স্থায়ী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। এতে আমাদের দুই পরিবারের সবাই খুশি হয়েছিল। তাদের ধারণা ছিল, আমরা স্বর্গের চাবি পেয়ে গেছি। আর চিন্তা কী!
কিন্তু এখানে এসে শুরুতেই যে ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে পড়ি, তার কথা আর নাই বলি। আমার মতো এমন অভিজ্ঞতা অসংখ্য প্রবাসীর হয়েছে। তাদের মতো আমিও লড়াই করে টিকে যাই। অনেক চেষ্টার পরে, একটু থিতু হয়েছি। এখানে এসে দ্বিতীয় সন্তানের পিতা হয়েছি। বড়টি এখনো স্কুল শেষ করিনি। ছোটটা যাওয়া শুরু করেছে।
আমি ও আমার স্ত্রী দুজনেই কাজে যাই। কিন্তু মন তো বসে না। দু দিন পরপর স্কুলে এ ধরনের প্রাণহানির খবর শুনলে, সত্যি বলতে মনে হয় দেশেই ভালো ছিলাম। আমার সন্তানেরা অন্তত জীবনে বেঁচে থাকতে পারত। এই উদ্বেগ নিয়ে কতক্ষণ থাকা যায়।
আমি বুঝতে পারি না, আর কত শিশুর মৃত্যু হলে আমেরিকান আইনপ্রণেতারা কঠোর অস্ত্র আইন করার পক্ষে মত দেবেন। প্রেসিডেন্ট নিজে এর পক্ষে মাঠে নামবেন। আমাদের বাঙালি কমিউনিটির নেতারা, পত্রিকাগুলো কী এ বিষয়ে ভূমিকা রাখতে পারে না?
আজম মাহমুদ
ব্রুকলিন, নিউইয়র্ক