স্কুলগামী সন্তানদের বেলায় যা করতে হবে

ফ্লোরিডার পার্কল্যান্ডের মার্জরি স্টোনম্যান ডগলাস হাইস্কুলে বন্দুকধারী সাবেক ছাত্রের গুলিতে ১৭ শিক্ষার্থীর করুণ মৃত্যু আমেরিকার অভিভাবকদের নিঃসন্দেহে শঙ্কায় ফেলেছে। শঙ্কা দুই দিক থেকেই। প্রথমত সন্তানদের নিরাপত্তার বিষয়ে, যা ভাবিয়ে তুলছে প্রশাসনের উচ্চ পর্যায় থেকে শুরু করে সব মানুষকে। একই সঙ্গে নিজের সন্তানও এমন সহিংস আচরণ দেখাবে কিনা তা নিয়েও শঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের চাইল্ড অ্যান্ড অ্যাডলসেন্ট সাইকিয়াট্রি বিভাগের ‘স্ট্রেস, ট্রমা অ্যান্ড রেসিলিয়েন্স’ পরিচালক ড. ডেনিয়েল স্কেটার বলেন, ‘আমরা কেউই বলতে পারছি না, এ ধরনের ঘটনা কখনো হবে না। এই শঙ্কার পরিবেশ মা-বাবার জন্য অনেক বড় চাপের কারণ। এটি খুবই দুঃখজনক।’

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে শিশু-কিশোরদের মা-বাবার উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘মা-বাবাকে মনে রাখতে হবে যে, তাদের সন্তান জীবনের সবচেয়ে আবেগী সময়টি অতিক্রম করছে। তাদের সঙ্গে কথা বলার আগে জানতে হবে যে, তারা এ জটিল বিষয়ে কথা বলতে রাজি কিনা। আগে তাদের কথা শুনুন। অনেক সময় কিশোররা হয়তো কথাই বলতে চাইবে না। সে ক্ষেত্রে তাদের আচরণগত বৈশিষ্ট্যগুলো পর্যবেক্ষণ করুন।’
স্কেটারের পরামর্শ, সন্তানদের সঙ্গে কথা বলার আগেই ঠিক করুন আলাপের বিষয়। সহিংসতার বিষয়ে তাদের মতামতটি আগে শুনতে হবে। এ বিষয়ে তারা কী জানে, কী ভাবে তা জানাটা খুব জরুরি। বিদ্যালয়ে গোলাগুলির ঘটনায় তাদের নিজস্ব প্রতিক্রিয়াটি কী, তা না জেনে কথা বলাটা উল্টো সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। সবচেয়ে বড় কথা হলো মানুষ হিসেবে সন্তানদের আচরণ করাটা শেখাতে হবে। মানবিক করে তোলা ছাড়া এই সমস্যার কোনো সমাধান নেই।
তাঁর মতে, সন্তানদের, বিশেষত যারা গোলাগুলির কারণে বিদ্যালয়ে যেতে ভয় পায়, তাদের ক্ষেত্রে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কী ধরনের পরিকল্পনা রয়েছে, তা জানতে হবে। তাদেরকে নিরাপত্তামূলক বিষয়াদি জানাতে হবে। এটা মনে রাখতে হবে যে, ফ্লোরিডার মার্জরি স্টোনম্যান ডগলাস হাইস্কুলে হামলার সময় অনেক শিক্ষার্থীই বেঁচে গিয়েছিল শুধু নিরাপত্তা সম্পর্কিত বিষয়ে ভালো ধারণা থাকার কারণে।
স্কেটার মনে করেন, ফ্লোরিডার স্কুলে হামলার মতো মর্মান্তিক ঘটনাগুলো হঠাৎ করে শিশুদের সামনে আনা উচিত নয়। এটা তাদের মনে গভীর রেখাপাত করে। ঘটনার জটিলতা অনুভব ও অনুধাবন করার মতো বয়স হওয়ার আগে সন্তানদের নিয়ে টেলিভিশনে খবর দেখা ঠিক নয়। মা-বাবাকে খেয়াল রাখতে হবে, এ ধরনের ভয়ংকর ঘটনার পর সন্তানদের আচরণে কোনো পরিবর্তন আসছে কিনা। এটি তাদের ভীত করছে নাকি সহিংসতার অনুকরণে প্রভাবিত করছে। দুই ক্ষেত্রে ভিন্ন পন্থায় ব্যবস্থা নিতে হবে।