পাঠকের কাছে পত্রিকা পৌঁছানোই তাঁদের আনন্দ

পাঠকের কাছে সংবাদপত্র পৌঁছাতে পারলেই তাঁরা আনন্দ পান। তাই তাঁরা দায়িত্ব নিয়েছেন সংবাদপত্র বিলির। এ কাজ করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি কাজটি তাঁরা উপভোগ করেন।
বাংলাদেশে সংবাদপত্রের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন জমির উদ্দিন। আমেরিকায় এসে বিভিন্ন জায়গায় কাজ করেছেন। এখন একটি ট্যাক্সিক্যাব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করছেন। সঙ্গে খণ্ডকালীন পত্রিকা সরবরাহের কাজ করেন। এতে তিনি আর্থিক দিকে থেকে লাভবান হন। বাংলাভাষী মানুষের কাছে নিজের
দেশের ও কমিউনিটির সংবাদ পৌঁছে দিয়ে আনন্দ পান।
নিউইয়র্ক থেকে প্রতি সপ্তাহে প্রায় ১৮টি সংবাদপত্র প্রকাশিত হয়। এসব পত্রিকা ম্যানহাটন, ব্রুকলিন, ব্রঙ্কস, জ্যাকসন হাইট্‌স, জ্যামাইকা, ওজোন পার্কসহ বিভিন্ন স্থানে বিলি করা হয়। বেশি পত্রিকা বের হওয়ার কারণে সরবরাহকারীর চাহিদাও বেশি। তাই অনেকে এটিকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন।
তাহের সরকার একজন সিটি পেশাজীবী। সপ্তাহের শনি ও রোববার সিটি অফিস বন্ধ থাকে। ছুটির দিনে ৪/৫ ঘণ্টা পত্রিকা বিলির কাজ করে কিছু অতিরিক্ত ডলার উপার্জন করেন। এই অর্থ দিয়ে পরিবারের একটা বিরাট অংশের খরচ মিটে যায়। বিগত ১০ বছর ধরে তিনি এই পেশায় নিয়োজিত।
আতাউল্যাহ দীর্ঘ ছয় বছর ধরে সপ্তাহে পাঁচ দিন সংবাদপত্র বিলির কাজ করছেন। এখন তিনি বয়সের কারণে কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়েছেন। নিজে পারছেন না বলে নিজের পড়ুয়া ছেলেকে পত্রিকা বিলির কাজে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি বেশ কয়েক বছর শুধু সংবাদপত্র বিলির কাজই করেছি। পেশাটি আমাকে খুব আনন্দ দেয়। শ্রম দিলে ভালো অর্থও উপার্জন করা যায়।’
মনিরুল ও মোবারক হোসেন বেশ কয়েক বছর যাবৎ বিভিন্ন অফিসে পত্রিকা বিলি করেন। পত্রিকা বিলির সময় অফিসে পরিচিতদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় হয়। তাঁরা বলেন, পত্রিকা বিলি করতে গিয়ে কখনো কখনো অফিসে বসে সেখানকার লোকজনের সঙ্গে বসে চা-নাশতা খাওয়া হয়। প্রবাসে বাংলা সংবাদপত্র মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারার আনন্দই আলাদা।
সজীব ও শাহজাহান দুই ভাই। দুজনই নিউইয়র্কে ক্যাব চালান। তাঁরা জানালেন, ‘শুক্রবার সকালে পত্রিকা নিয়ে আমরা বাংলাদেশি অধ্যুষিত বিভিন্ন এলাকায় যাই। দেখি লোকজন অপেক্ষা করছেন। প্রথম আলো পত্রিকা হাতে নিয়ে দূর দেশে থাকা লোকজন দ্রুত দেশের খবর, আমেরিকার খবর দেখেন। তখন সংবাদপত্রের একজন কর্মী হিসেবে নিজেকে খুব গর্বিত মনে হয়।
সব মিলিয়ে নিউইয়র্কে অনেকেই সংবাদপত্র বিলিকে পেশা হিসেবে নিয়েছেন। তাঁরা এ পেশায় কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। নিউইয়র্ক থেকে প্রতিদিনই কোন না কোন সংবাদপত্র প্রকাশিত হয়।