লিবিয়ার মডেল উত্তর কোরিয়ার ক্ষেত্রে গ্রহণ করবেন না ট্রাম্প

কিম জং উন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প
কিম জং উন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প

পারমাণবিক কর্মসূচি পরিত্যাগ করলে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনকে সুরক্ষা দেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একই সঙ্গে সতর্ক করছেন, পারমাণবিক অস্ত্র নিরস্ত্রীকরণ চুক্তিতে সই না করলে ফলাফল ভালো হবে না।

গতকাল বৃহস্পতিবার ট্রাম্প বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার কর্মকর্তারা এখনো বৈঠকের প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছেন।

১২ জুন সিঙ্গাপুরে ওই বৈঠক হতে পারে বলে বিবিসি অনলাইনের এক খবরে জানানো হয়।

সিএনএন এক প্রতিবেদনে বলেছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে ঐতিহাসিক বৈঠক থেকে সরে যাওয়ার হুমকি দিয়েছে পিয়ংইয়ং। পারমাণবিক অস্ত্র পরিত্যাগে যদি যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে উত্তর কোরিয়াকে চাপ দেওয়া হয়, তবে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা হবে বলে জানিয়েছে পিয়ংইয়ং।

এর জবাবে ট্রাম্প বলেছেন, আলোচনা এখনো বন্ধ হয়নি। এখনো বৈঠকের কথাবার্তা চলছে।

ট্রাম্পের পক্ষ থেকে কিমকে আশ্বস্ত করে বলা হয়, পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি থেকে সরে এলে উত্তর কোরিয়ার নেতা ক্ষমতায় থাকতে পারবেন, আর যদি তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি প্রত্যাখ্যান করেন তবে উত্তর কোরিয়াকে ভেঙে দেওয়া হবে।

সিএনএন বলছে, কয়েক দফা বিবৃতির পর গত মাসে উত্তর কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র বৈঠক বিষয়ে সম্মত হয়। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত এটাই ট্রাম্পের সবচেয়ে ব্যাপক মন্তব্য বলে ধরা হচ্ছে।

উত্তর কোরিয়ার বিষয়ে ট্রাম্পের মন্তব্য হচ্ছে, ‘তারা এমনভাবে দর-কষাকষি করছে যেন কিছুই ঘটেনি।’

ট্রাম্প সংবাদ মাধ্যমে উত্তর কোরিয়ার বিবৃতি সম্পর্কে জেনেছেন। এরপর দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে কথা বলার পর মন্তব্য করেছেন, উত্তর কোরিয়া এখনো বৈঠক থেকে সরে দাঁড়ানোর কোনো সংকেত দেয়নি।

ট্রাম্প বলেন, ‘যদি বৈঠক হয়, হবে। না হলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। বৈঠক হতেও পারে, না-ও পারে। যদি না হয়, তবে সেটা হবে আরও আকর্ষণীয়। কী হয় সেটা আমরা দেখব।’

এর আগে ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা পরামর্শক জন বোল্টন উত্তর কোরিয়া নিয়ে যে মন্তব্য করেছিলেন, তার সঙ্গে ট্রাম্পের কথার মিল নেই। জন বোল্টন উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র নিরস্ত্রীকরণে লিবিয়ার মডেল গ্রহণের কথা বলেছিলেন। ট্রাম্প সেখান থেকে সরে এসে বলেছেন, ‘উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে লিবিয়ার মডেল চালানো হবে না। পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি ছেড়ে দিলেও ক্ষমতায় থাকতে পারবেন কিম।’

ট্রাম্প বলেন, ‘লিবিয়ায় গৃহীত মডেল নিয়ে আমরা চিন্তা করছি না। কিম যেখানে আছেন সেখানেই থাকবেন। তাঁর দেশ চালাবেন। তাঁর দেশ আরও উন্নত হবে।’

লিবিয়ার মডেল সম্পর্কে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘লিবিয়ার সঙ্গে গৃহীত মডেল ছিল আলাদা। আমরা দেশটিকে ভেঙে দিয়েছি। গাদ্দাফিকে কখনো বলা হয়নি যে তোমাকে সুরক্ষা দেওয়া হবে। আমরা সেখানে ঢুকেছি এবং ধ্বংস করে দিয়েছি। একই কাজ ইরাকের সঙ্গেও করা হয়েছে।’

এ মন্তব্য করার সময় কিমকে সতর্ক করেন ট্রাম্প। পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি থেকে সরে আসার চুক্তিতে সই না করলে কিমকে সরিয়ে দেওয়া ও উত্তর কোরিয়াকে ভেঙে দেওয়ার কথা ভাবা হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এদিকে, উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট দ্বিতীয়বারের মতো চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর কঠোর অবস্থানে গেছেন বলে আরও খেপেছেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, চীনা নেতারা কিমকে কঠোর অবস্থান নিতে প্রভাবিত করেছেন।

আগামী মাসে বৈঠকের বিষয়ে নিজের দৃঢ় অবস্থানের কথা জানান ট্রাম্প। তবে কিমের ইচ্ছার ওপর বাকিটা নির্ভর করছে।