চলুন, এক দিনের জন্য এই এলাকা বাংলাদেশ বানিয়ে ফেলি

ওয়াশিংটন ডিসি মেট্রো এলাকায় ঠিক কতজন বাঙালি থাকেন, সে হিসাব আমার কাছে নেই। তবে কেউ কেউ দাবি করেন, এ সংখ্যা এক লাখের কাছাকাছি।
বাঙালি বেশি থাকার কারণে এই এলাকায় একটা বাংলাদেশি আমেজ আছে। বাজারে গেলে কোনো কোনো দোকানে ইলিশ মাছ থেকে কচুর লতি সবই পাওয়া যায়। কেনাকাটার পর দোকানদার বলেন, ‘ভাই জর্দা দিয়া একটা পান দিমু?’
এখানে একুশে ফেব্রুয়ারির অনুষ্ঠান হয়, পুরো বাংলাদেশের মতো করে পথমেলা বসে। গত বছর আমি হতভম্ব হয়ে লক্ষ্য করলাম- এখানে চট্টগ্রামের মেজবান হচ্ছে। একদিকে লুঙ্গি পরা লোকজন গরুর মাংস রান্না করছেন। অন্যদিকে শত শত মানুষ পেট ভরে খাচ্ছেন আর সশব্দে ঢেকুর তুলছেন।
গত মাসে বৈশাখী মেলা হলো। সারি সারি লোকজন পাঞ্জাবি আর শাড়ি পড়ে ঘোরাঘুরি করছেন। চট করে আমার মনে হলো, বোধ হয় ভুল করে রমনার বটমূলে চলে এসেছি। অবিকল একই পরিবেশ। উচ্চ স্বরে মাইকে সাধের লাউ আর নারীদের কলহাস্য চলছে। যথারীতি এই এলাকায় প্রচুর বাঙালি দল ও সংগঠন রয়েছে। আমরা বাঙালি ফাউন্ডেশন এ রকম একটি সংগঠন।
‘আমরা বাঙালি ফাউন্ডেশন’ একটা ঐতিহাসিক কাজ করতে যাচ্ছে। সংগঠনটি প্রথমবারের মতো এই এলাকায় ওয়াশিংটন ডিসি বইমেলার আয়োজন করেছে। মেলাটি হবে জুনের ৩০ তারিখ। এই বইমেলার কথা শুনে প্রভূত আনন্দ পেয়েছি। বাংলাদেশের মতো করে এখানে সারি সারি বইয়ের স্টল থাকবে। আর থাকবে একটা মঞ্চ। যেখানে সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত বিচিত্র ধরনের অনুষ্ঠান চলবে। এই অনুষ্ঠানগুলোর আইডিয়া চমকিত করেছে। কয়েকটা উদাহরণ দিই—ধারাবাহিক গল্প বলা থাকবে। এটা এই অঞ্চলে একটু নতুন সংযোজন। থাকবে কবির লড়াই। অনুষ্ঠানের আগত কবিরা কোমর বেঁধে কবির লড়াইয়ে মাতবেন। সাহিত্য আড্ডা হবে। আমাকেও সুযোগ দেওয়া হয়েছে, মঞ্চে এসে গল্প বলার জন্য।
কাজেই হে বাঙালি ভাই ও বোনেরা। আপনারা আসুন। এই আয়োজনে শামিল হোন। আমরা একদিনের জন্য এই এলাকাকে বাংলাদেশ বানিয়ে ফেলি। সুখের বাংলাদেশ, হাসির বাংলাদেশ, আনন্দের বাংলাদেশ। সবাই মিলে চলুন এক সঙ্গে আনন্দ করি
বইমেলার স্থান, দিন ও সময়সহ বিস্তারিত তথ্য www.dcboimela.com এই ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে। মনে রাখবেন একদিনের জন্য বাঙালি হওয়া সহজ। কিন্তু বিদেশের একটা এলাকাকে একদিনের জন্য বাংলাদেশ বানিয়ে ফেলা সহজ নয়। এই কঠিন কাজে আপনারা না থাকলে চলবে?