২০ মে চা শ্রমিক দিবস

রক্তস্নাত ২০ মে, চা শ্রমিক দিবস। আজ থেকে ৯৭ বছর আগে, ১৯২১ সালের ২০ মে শত শত চা শ্রমিকের রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল চাঁদপুর। সংঘটিত হয়েছিল ইতিহাসের এক নৃশংস-বর্বর হত্যাকাণ্ড। ব্রিটিশ শাসনামলে ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সিলেট অঞ্চলে চা উৎপাদন শুরু করে ব্রিটিশ মালিকেরা। উন্নত জীবনের লোভ দেখিয়ে উপমহাদেশের দারিদ্র্যপীড়িত বিভিন্ন এলাকা থেকে গরিব মানুষদের এনে চা-বাগানের কাজে লাগিয়েছিল বাগানমালিকেরা। নামমাত্র মজুরিতে অমানুষিক পরিশ্রম করতে বাধ্য করা হতো ওই অসহায় শ্রমিকদের। দিনের পর দিন অবর্ণনীয় শোষণ-নির্যাতন ও মানবেতর জীবনযাপনে অতিষ্ঠ হয়ে একসময় শ্রমিকেরা কাজ ছেড়ে নিজেদের এলাকায় ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
‘মুল্লুক চলো’ আওয়াজ তুলে প্রায় ৩০ হাজার শ্রমিক চাঁদপুরে পৌঁছেছিলেন স্টিমারে নিজ নিজ এলাকায় ফিরে যাওয়ার জন্য। সেখানে বাধা দেয় মালিকপক্ষ। বাগানমালিকদের স্বার্থরক্ষাকারী ব্রিটিশ সরকারের গোর্খা সৈন্যরা পাখির মতো গুলি করে হত্যা করে শত শত মেহনতি মানুষকে। তাঁদের লাশ ভাসিয়ে দেওয়া হয় মেঘনা নদীতে।
এখনো কল্পনাতীত কম মজুরিতে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন চা শ্রমিকেরা। মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য এখনো লড়ছেন এ মানুষগুলো। ২০ মেকে ‘চা শ্রমিক দিবস’ ঘোষণা করা, দৈনিক মজুরি ৮৫ থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করাসহ বিভিন্ন দাবিতে চা শ্রমিকদের ন্যায়সংগত সংগ্রাম চলছে।
১৯২১ সালের ২০ মের শহীদ চা শ্রমিকদের স্মৃতির উদ্দেশে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। চা শ্রমিকদের বর্তমান লড়াইয়ের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন ও সংহতি ঘোষণা করছি।
জিয়াউদ্দিন আহমেদ, ফিলাডেলফিয়া, পেনসিলভানিয়া।