ঈদের দিন চাই ভিন্ন স্বাদ

>
লুবনা কাইজার
লুবনা কাইজার
ঈদের রান্না সব সময়ই বিশেষ ধরনের হয়ে থাকে। কারণ যেকোনো উৎসবের মূল আকর্ষণ মজাদার খাবার-দাবার। আর ঈদুল ফিতরের বৈশিষ্ট্য হলো, অনেকে ৩০ দিন রোজা রাখার পরে এই দিন রসনা বিলাসের সুযোগ পান। সেই দিকে খেয়াল রেখে আবৃত্তিকার ও কবি লুবনা কাইজার উত্তরের নকশা পাঠকদের জন্য কয়েকটি আকর্ষণীয় রেসিপি দিয়েছেন—


গরুর মাংসের চপ

উপকরণ: এক কেজি হাড়ছাড়া মাংস, এক কাপ পেঁয়াজবাটা, ২ টেবিল চামচ আদা, ২ টেবিল চামচ রসুন, ১ টেবিল চামচ হলুদ, ২ টেবিল চামচ মরিচ, ১ টেবিল চামচ জিরা, ১ টেবিল চামচ ধনে গুঁড়া, দারুচিনি, এলাচি ও তেজপাতা পরিমাণ মতো, এক কাপ টক দই, তেল পরিমাণ মতো।
প্রণালি: মসলাসহ সব ধরনের উপকরণ এক সঙ্গে মিশিয়ে নিন। এবার মাংস ভালো করে ধুয়ে সব মসলা মিশিয়ে তিন থেকে চার ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। হাঁড়িতে সেদ্ধ করে নিন। তারপর নামিয়ে একটা কড়াইয়ে তেলে লাল করে ভাজলেই গরুর মাংসের চপ হয়ে যাবে। মাংসের ওপর ভাজা পেঁয়াজ ছিটিয়ে গরম-গরম পরিবেশন করলে ভালো লাগবে।



লাউ দুধ
উপকরণ: নিউইয়র্কে প্রায় সারা বছর লাউ কিনতে পাওয়া যায়। ঈদের দিন কেউ চাইলে লাউ দুধ বানাতে পারেন। সেমাই-পায়েস তো সবাই করে, তাহলে আপনার এই পদটি সবার মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারে। লাউ দুধ বানাতে হলে আপনার প্রথমে লাগবে একটা মাঝারি সাইজের লাউ। ঘি আধা কাপ। ঘন দুধ দুই লিটার। চিনি এক কেজি। সাদা এলাচ ৪টি। দারুচিনি ২ সেন্টিমিটার চার টুকরা। খাবার গোলাপজল ২ টেবিল চামচ। সাদা মোরব্বা।
প্রণালি: লাউয়ের খোসা ছাড়িয়ে বিচিসহ নরম অংশ কেটে বাদ দিতে হবে। সবজি কুরুনি দিয়ে তারপর লাউ ঝুরি ঝুরি করে কাটতে হবে। ঝুরি করে কাটা লাউ ফুটন্ত পানিতে এরপর ঝরিয়ে নিতে হবে। একটি পাত্রে ঘি দিয়ে গরম করতে হবে। ঘিয়ে এলাচ, দারুচিনি ও লাউ দিয়ে ২-৩ মিনিট ভেজে নিতে হবে। এরপর এতে ঘন দুধটুকু ঢেলে দিয়ে জ্বাল দিতে থাকুন। দুধ আরও ঘন হয়ে এলে মৃদু আঁচে রেখে অল্প অল্প করে চিনি দিন এবং নাড়তে থাকুন। চিনি দেওয়া শেষ হলে গোলাপজল দিয়ে লাউ দুধ নামিয়ে ফেলুন।



গাজরের পায়েস
উপকরণ: গাজরের হালুয়া আমরা সাধারণত খেতে অভ্যস্ত। ইচ্ছা করলে আপনারা পায়েস বাসায় বানিয়ে চেষ্টা করতে পারেন। এটা বানাতে দুধ লাগবে এক লিটার, গুঁড়া দুই আধ কাপ, গাজর কুচি দুই কাপ, দারুচিনি একটি, এলাচ ২টি, চিনি পরিমাণমতো। এক মুঠ আতপ চাল আধ ভাঙা করে নিতে হবে। তারপর পরিমাণ মতো পানিতে সেই চাল ভিজাতে হবে। সাজানোর জন্য কিশমিশ ও বাদাম। পরিমাণ মতো ঘি বা সয়াবিন তেল।
প্রণালি: একটি কড়াইতে গরম তেল বা ঘি দিয়ে তাতে দারুচিনি, এলাচ হালকা করে ভেজে নিতে হবে। এবার কড়াইয়ে তরল দুধ, গুঁড়া দুধ ও আতপ চাল মিশিয়ে জ্বাল দিতে হবে। চাল সেদ্ধ হয়ে এলে গরম দুধে চিনি ও গাজরকুচি ঢেলে নিয়ে নাড়তে হবে। দুধ অর্ধেক হয়ে যাওয়া অবধি অল্প আঁচে জ্বাল দিতে হবে। গাজরের পায়েস চুলা থেকে নামিয়ে ঠান্ডা পরিবেশন করুন। গাজরের পায়েস ঠান্ডা হয়ে এলে বাটিতে ঢেলে ওপরে কিশমিশ ও বাদাম দিয়ে সাজিয়ে নিন। ভারী খাবারের পরে ডেজার্ট হিসেবে ঈদের দিন এটা খুব ভালো লাগবে।



কাচ্চি বিরিয়ানি
উপকরণ: খাসির মাংস ২ কেজি, পোলাওয়ের চাল ১ কেজি, ঘি ২৫০ গ্রাম, আলু আধা কেজি, পেঁয়াজের বেরেস্তা এক কাপ, দারুচিনি ৮-১০ টুকরো, এলাচ ১০-১২টি, আদা বাটা ২ টেবিল চামচ, রসুন বাটা ২ টেবিল চামচ, গরম মসলা গুঁড়া (দারুচিনি, এলাচ, জয়ফল, জয়ত্রি, শাহজিরা ও গোলমরিচ) ১ টেবিল চামচ, জিরা আধা চা চামচ, দই দেড় কাপ, দুধ ২ কাপ‚ আলুবোখারা ১৪-১৫টা, গোলাপ জল ১ টেবিল চামচ, লবণ পরিমাণমতো।
প্রণালি: মাংস ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। পিতলের হাঁড়িতে মাংসের সঙ্গে আদা রসুন বাটা, লবণ, চিনি, টকদই, দারুচিনি, এলাচ, লবঙ্গ দিয়ে মাখিয়ে আধা ঘণ্টা রেখে দিন। এবার গরম মসলার গুঁড়া, অর্ধেক ঘি ও জাফরান দিয়ে ভালোভাবে মাংস মেখে ১০ মিনিট রাখুন। এবার দুই কাপ দুধ মাংসের ওপর ঢেলে দিন। আলু লবণ মাখিয়ে তেলে ভেজে মাংসের ওপর দিন। চাল ধুয়ে আধা সেদ্ধ করে মাংসের ওপর দিন। বাকি অর্ধেক ঘি, পেঁয়াজের বেরেস্তা, কিশমিশ, আলুবোখারা, বাদাম, গোলাপ জল ছড়িয়ে দিয়ে অল্প আঁচে এক ঘণ্টার মতো চুলোয় রাখুন। চুলোয় ওঠানোর আগে আটা গুলিয়ে হাঁড়ির মুখ বন্ধ করে দিন। এক ঘণ্টা পর আঁচ আরও কমিয়ে দমে রাখুন। খড়ির চুলোয় রান্না করতে পারলে ভালো। সে ক্ষেত্রে এক ঘণ্টা পর হাঁড়ির নিচে এবং ওপরে জ্বলন্ত কয়লা দিয়ে দমে বসান। গ্যাসের চুলোর ক্ষেত্রে তাওয়ার ওপর হাঁড়ি বসিয়ে অল্প আঁচে দমে রাখুন।