গ্রিনকার্ড নিতে গিয়ে বহিষ্কার!

প্রতিদিনই মিলছে আমেরিকা থেকে ডিপোর্টেশন বা বহিষ্কারের নিত্য নতুন খবর, যার সঙ্গে সঙ্গে তলিয়ে যাচ্ছে পুরোনো খবরগুলোর বিস্ময়। গত সপ্তাহে খবর মিলেছিল, পিৎজা ডেলিভারি দিতে গিয়ে বহিষ্কারের শিকার হয়েছেন এক লাতিন বংশোদ্ভূত নাগরিক। এবারে দেখা মিলল এক চীনা অভিবাসীর, যিনি স্থায়ী বসবাসের আবেদন বা গ্রিনকার্ডের আবেদনের বিপরীতে ডাকা সাক্ষাৎকার থেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন। এখন তাঁকে দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
জিউ কিং ইউ নামের ওই ব্যক্তি নিউইয়র্ক নগরের কুইন্সে বসবাস করতেন। তাঁর স্ত্রী ইউ মে চেন একটি বিউটি সেলুন চালিয়ে জীবন ধারণ করেন। কিং ইউর স্ত্রী চেন আমেরিকার নাগরিক এবং তাঁরা ১৮ বছর ধরে এখানে বসবাস করছেন। কানেকটিকাটে তাঁদের একটি বাড়িও আছে। তাঁদের দুই সন্তানের জন্ম এই দেশে এবং তারা পড়াশোনা করছে। সব মিলিয়ে তাঁদের জীবন বেশ ভালোই চলছিল। গ্রিনকার্ডের আবেদন করেছিলেন কিং ইউ। এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সাক্ষাৎকারের জন্য ডাকা হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু সেই সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে হঠাৎ করেই তাদের জীবনে নেমে এসেছে পরিবার বিচ্ছেদের দুর্দিন।

এবিসি সেভেন নিউজের খবরে বলা হয়েছে, মে চেন তাঁর স্বামী কিং ইউ-এর জন্য নাগরিকত্বের আবেদন করেন। প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে গ্রিনকার্ডের আবেদন প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হলে ইউকে ডাকা হয় সাক্ষাৎকারের জন্য। এ সময় দেখা যায়, কিং ইউ এই দেশে আসার পর একবার রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছিলেন, যা প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল ২০০০ সালে। এর পর তাঁকে দেশে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও তিনি যাননি। বসবাস করছিলেন এই দেশেই। বিয়েও করেন মার্কিন নাগরিক ইউ মে চেনকে। পরে ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন-বিরোধী কার্যক্রম জোরদার হলে আইনি বৈধতা পেতে পথে নামেন এ দম্পতি। এত দিন ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইস) দপ্তরে হাজিরা দিয়ে এলেও গত ১৬ বছরে কোনো সমস্যা হয়নি, যেটার দেখা পেলেন তাঁরা এবার বৈধতা নিতে গিয়ে।
৩৯ বছর বয়স্ক কিং ইউকে নিউজার্সি ফেডারেল কারাগারে রাখা হয়েছে। তাঁর স্ত্রী ইউ মে চেন বলেন, তিনি আইন মেনেই একটার পর একটা পদক্ষেপ নিয়েছেন। গ্রিনকার্ডের মৌখিক পরীক্ষার মাঝপথেই তাঁকে বলা হয় রুম থেকে বেরিয়ে যেতে। পরে দেখা গেল, আইস সদস্যরা এসে তাকে পাকড়াও করে নিয়ে গেছে। সবকিছুই হয়েছে বিস্ময় কাটিয়ে ওঠার আগেই!
ইউ-এর আইনজীবী বলেন, ‘চীনে ইউ-এর বিরুদ্ধ মামলা আছে এবং সেখানে জেলও খেটেছেন তিনি। জীবনের হুমকিতেই তিনি এই দেশ এসেছিলেন। এখন তাঁকে ফেরত পাঠানো হলে, তাঁর জীবন শঙ্কায় পড়বে। আমরা চেষ্টা করছি তাঁকে আইনি প্রক্রিয়ায় আবার তার পরিবারের কাছে ফেরত আনার জন্য।’