সাকিব আল হাসানের সঙ্গে প্রবাসীদের ঈদ আড্ডা

নিউইয়র্কে প্রবাসীদের সঙ্গে আড্ডায় মেতেছিলেন সাকিব আল হাসান। বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখায় এদিন বিশিষ্ট ব্যক্তির হাতে সম্মাননা তুলে দেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার
নিউইয়র্কে প্রবাসীদের সঙ্গে আড্ডায় মেতেছিলেন সাকিব আল হাসান। বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখায় এদিন বিশিষ্ট ব্যক্তির হাতে সম্মাননা তুলে দেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার

নিউইয়র্ক নগরের জ্যাকসন হাইটসে ১৮ জুন প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে ঈদ আড্ডা জমে উঠেছিল জনপ্রিয় ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের। জ্যাকসন হাইটসের বেলাজিনো পার্টি হলে আয়োজিত এই ঈদ আড্ডায় উঠে আসে বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডারের নানা দিক। জ্যাকসন হাইটসের বেলাজিনো পার্টি হলে ‘সাকিব আল হাসানের সঙ্গে প্রবাসীদের ঈদ আড্ডা’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার মুখোমুখি হন বিচিত্র সব প্রশ্নের। নিউইয়র্কে থাকা তাঁর ভক্তকুল প্রিয় তারকাকে কাছে পেয়ে বের করে আনতে চেয়েছে তাঁর হাঁড়ির খবর। উঠে আসে সম্প্রতি তাঁর রাজনীতিতে আসা না আসা নিয়ে তৈরি হওয়া বিতর্কও। জাতীয় ক্রিকেট দলের টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি সংস্করণের অধিনায়ক সাকিবের রাজনীতিতে আসার আলোচনা সম্প্রতি জোরালো হয় পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের দেওয়া এক বক্তব্যে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাকিব বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে আড্ডায় বসেছি। তাই এসব পরিহার করাই শ্রেয়।’
একইভাবে এড়িয়ে যান ফুটবল নিয়ে করা প্রশ্নও। বাংলাদেশে ফুটবলের দুরবস্থার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি তো ফুটবল জগতের লোক নই। তাই স্পষ্ট করে কিছু বলাও সমীচীন নয়।’
এমনকি পছন্দের অভিনেতা-অভিনেত্রী কিংবা গায়ক-গায়িকা সম্পর্কে ভক্তদের কৌতূহলেরও কোনো জবাব মেলেনি তাঁর কাছ থেকে। কৌশলে এ ধরনের প্রশ্ন এড়িয়ে গেছেন সাকিব। অনুষ্ঠানে শুধু ক্রিকেট নিয়ে আলোচনায় সীমাবদ্ধ থেকেছেন সাকিব। বলেছেন ক্রিকেট নিয়ে তাঁর পরিকল্পনার কথা। উঠে এসেছে আফগানিস্তানের সঙ্গে সাম্প্রতিক হারের প্রসঙ্গও। তিনি বলেন, ‘প্রতিযোগিতায় হার-জিৎ থাকে। তবে আফগানিস্তানের সঙ্গে আমাদের সাম্প্রতিক পরাজয়ের ঘটনাটি অপ্রত্যাশিত। এ থেকে শিক্ষা নিয়েই আমরা সামনে এগোতে চাই। এ জন্য সবার অকুণ্ঠ সমর্থন অব্যাহত রাখতে হবে।’

নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে ঈদ আড্ডায় প্রবাসী ভক্তদের প্রশ্নের জবাবা দেন সাকিব আল হাসান। ছবি: এ হাই স্বপন
নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে ঈদ আড্ডায় প্রবাসী ভক্তদের প্রশ্নের জবাবা দেন সাকিব আল হাসান। ছবি: এ হাই স্বপন

বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (বিকেএসপি) এই ছাত্র নিজের স্বপ্ন নিয়ে বলেন, ‘আমি যদি কখনো বিকেএসপির হাল ধরি, তাহলে নিজের স্বপ্নের মতো করে সবকিছু করার চেষ্টা করব। তখন দেখবেন প্রতি বছরই বিকেএসপি থেকে জাতীয় দলের উপযুক্ত খেলোয়াড় তৈরি হবে। তৃণমূল থেকে উঠে আসবে সেরা খেলোয়াড়। এটি সময়ের ব্যাপার। এখন আমি বছরের অধিকাংশ সময়ই বাংলাদেশের বাইরে থাকি। সে জন্য নিজের মতো করে কিছু করতে পারব না। তাই সে চিন্তা আমার মাথায় আপাতত নেই।’ প্রসঙ্গত, সাকিবের স্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা। একমাত্র মেয়েকে নিয়ে তিনি অধিকাংশ সময় থাকেন এখানেই।
মেয়েকে ক্রিকেট অঙ্গনে আনতে চান কিনা জানতে চাইলে সাকিব বলেন, ‘সে তো আমেরিকান। এখানে ওর যা ভালো লাগবে, তাই করবে। আমি কোনো কিছু চাপিয়ে দিতে চাই না।’
‘শো টাইম মিউজিক’-এর উদ্যোগে দু ঘণ্টার এই আড্ডায় সাকিবকে প্রবাসীদের পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানানো হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আব্দুল কাদের মিয়া ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট কাদের মিয়া, পিপল এন টেকের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও আবু হানিপ, প্রেসিডেন্ট ফারহানা হানিপ, রিয়েল এস্টেট ইনভেস্টর মো. আনোয়ার হোসেন, মইনুল হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা হাজী এনাম, বাংলাদেশি-আমেরিকান ডেমোক্রেটিক লীগের প্রেসিডেন্ট খোরশেদ খন্দকার, কুইন্স ডিস্ট্রিক্ট ইয়ং ডেমোক্রেটিক পার্টির কোষাধ্যক্ষ জয় চৌধুরী ও আয়োজক সংগঠনের প্রধান আলমগীর খান আলম। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনায় ছিলেন প্রবাসী সাংবাদিক শামীম আল আমিন। আড্ডার সমাপ্তি ঘটে শিল্পী তৃষ্ণা তিথির ‘ও আমার বাংলাদেশ, প্রিয় জন্মভূমি’ গানের মধ্য দিয়ে।
এই অনুষ্ঠানে কমিউনিটি সার্ভিসে বিশেষ অবদানের জন্য প্রবাসীদের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন সাকিব। সম্মাননাপ্রাপ্তরা হলেন- আবুবকর হানিপ, ফারহানা হানিপ, আব্দুল কাদের মিয়া, মো. আনোয়ার হোসেন, মইনুল হোসেন, খোরশেদ খন্দকার, হাসান জিলানি, আতাউর রহমান সেলিম, বর্ণালি হাসান ও হাজী এনাম।