নিউইয়র্ক বাংলা বইমেলায় সাহিত্য পুরস্কার পেলেন আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ

বইমেলায় উত্তর আমেরিকা ছাড়াও বাংলাদেশ থেকে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক লেখক, কবি, শিল্পী ও সাংস্কৃতিক কর্মী অংশগ্রহণ করেন।
বইমেলায় উত্তর আমেরিকা ছাড়াও বাংলাদেশ থেকে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক লেখক, কবি, শিল্পী ও সাংস্কৃতিক কর্মী অংশগ্রহণ করেন।

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বেশ অসুস্থ বোধ করছিলেন। ‘ফের সায়ীদ স্যারের ক্লাসে’ শীর্ষক এক বিশেষ অনুষ্ঠানের তিনি ছিলেন প্রধান বক্তা। অসুস্থতার কারণেই অনুষ্ঠানে আসতে তাঁর কিছুটা বিলম্ব হয়েছিল। কিন্তু বক্তব্য দিতে উঠেই তাঁর সব ক্লান্তি উধাও। আধা ঘণ্টা বক্তব্য দিলেন, দু-চারটে প্রশ্নের জবাবও দিলেন। এরপর নিজ আসনে বসতে না বসতেই ঘোষিত হলো ২০১৮ সালের নিউইয়র্ক বাংলা বইমেলার সাহিত্য পুরস্কার প্রাপক হিসেবে তাঁর নাম।

বইমেলায় সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ।
বইমেলায় সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ।

পুনরায় মঞ্চে উঠে আসতে হলো। এ বছরের সাহিত্য পুরস্কারের নতুন নামকরণ হয়েছে মুক্তধারা/জিএফবি সাহিত্য পুরস্কার, যার মূল্যমান ২ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার। পুরস্কারের পৃষ্ঠপোষক বাংলাদেশি ব্যবসায়ী গোলাম ফারুক ভুঁইয়ার হাত থেকে নগদ খামটি হাতে নিয়ে বললেন, ‘এত দিন বিশ্বে ছিল সাতটি আশ্চর্য জিনিস। তার সঙ্গে এবার যুক্ত হলো অষ্টম আশ্চর্য, আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের নিউইয়র্ক বইমেলার সাহিত্য পুরস্কার।’ প্রথম সারিতে বসে ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান। তাঁকে দেখিয়ে বললেন, ‘৭৫ বয়সে তিনি আমাকে সাহিত্য পুরস্কার দিয়েছেন। নিউইয়র্ক বইমেলার সাহিত্য পুরস্কার তাহলে তেমন বিলম্বে ঘটেনি।’

বইমেলায় বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান।
বইমেলায় বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান।

মুক্তধারা ফাউন্ডেশন আয়োজিত ২৭তম নিউইয়র্ক বইমেলার এটিই একমাত্র চমক ছিল না; এ বছর প্রথমবারের মতো প্রবর্তিত হয়েছে মুক্তধারা/কথা প্রকাশ চিত্তরঞ্জন সাহা প্রকাশক পুরস্কার। ঢাকার কথা প্রকাশ প্রকাশনীর অর্থানুকূল্যে প্রতিষ্ঠিত এই পুরস্কারের প্রথম বিজয়ী হলো ঢাকার ইত্যাদি প্রকাশনী। এর মূল্যমান ৫০ হাজার বাংলাদেশি টাকা।

বইমেলায় ভাষাসৈনিক জসিম উদ্দিন আহমদকে সম্মাননা দেওয়া হয়।
বইমেলায় ভাষাসৈনিক জসিম উদ্দিন আহমদকে সম্মাননা দেওয়া হয়।

তিন দিনের এই মেলায় উত্তর আমেরিকা ছাড়াও বাংলাদেশ থেকে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক লেখক, কবি, শিল্পী ও সাংস্কৃতিক কর্মী অংশগ্রহণ করেন। বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র মিলিয়ে মোট ২০টি প্রকাশনা সংস্থা এই মেলায় অংশ নেয়। মেলার উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার। মুক্তধারার পক্ষ থেকে তাঁকে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলনে অতুলনীয় ভূমিকার জন্য আজীবন সম্মাননা প্রদান করা হয়। বায়ান্নর ভাষাসৈনিক জসিম উদ্দিন আহমদকেও ভাষা আন্দোলনে সাহসী ভূমিকার জন্য সম্মাননা দেওয়া হয়।

ঢাকায় গণ-আদালতে বিশেষজ্ঞ হিসেবে অংশগ্রহণকারী মার্কিন আইনজীবী টমাস কিটিংকে বিশেষ ক্রেস্ট দেওয়া হয়।
ঢাকায় গণ-আদালতে বিশেষজ্ঞ হিসেবে অংশগ্রহণকারী মার্কিন আইনজীবী টমাস কিটিংকে বিশেষ ক্রেস্ট দেওয়া হয়।

এ ছাড়া ১৯৯২ সালে শহীদজননী জাহানারা ইমামের উদ্যোগে ঢাকায় অনুষ্ঠিত গণ-আদালতে বিশেষজ্ঞ হিসেবে অংশগ্রহণকারী মার্কিন আইনজীবী টমাস কিটিংকে তাঁর অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বিশেষ ক্রেস্ট তুলে দেওয়া হয়।

বইমেলার লেখককুঞ্জ।
বইমেলার লেখককুঞ্জ।