সাহায্য নিলে গ্রিন কার্ড নয়

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিদেশি-বিদ্বেষ নতুন কিছু নয়। তবে আশঙ্কার কথা, এই বিদ্বেষ যেন বেড়েই চলেছে। তাঁর অভিবাসনবিরোধী একের পর এক পদক্ষেপে বিষিয়ে উঠছে অভিবাসীদের জীবন। এমনকি বৈধতা পেয়ে যারা সরকারি সাহায্য নিয়েছে তারা গ্রিন কার্ড পাবে না বলে ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ফলে বিপাকে পড়তে যাচ্ছে লাখ লাখ অভিবাসী। বছরের পর বছর বসবাসের পরও তাদের বিতাড়নের মুখে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ফুড স্ট্যাম্প বা খাদ্য, চিকিৎসা, ওষুধপত্র ও সরকারি আবাসন সুবিধা নেওয়া অভিবাসীদের নতুন এই নীতির আওতায় আনা হয়েছে। এমনকি অভিবাসীদের ঋণ পরিস্থিতিও (ক্রেডিট স্কোর) ঘেঁটে দেখা হতে পারে। ক্রেডিট স্কোর প্রমাণ করে, সে অর্থনৈতিকভাবে কতটা শক্তিশালী ও সরকারি সাহায্য ছাড়া আমেরিকায় থাকতে
পারবে কি না।
আমেরিকা পরিচিত অভিবাসীদের দেশ হিসেবে। এর অর্থনীতিতে অভিবাসীদের রয়েছে বিপুল অবদান। দেশটির শ্রমশক্তির ছয় ভাগের এক ভাগ অভিবাসী। রাজনীতি, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রেও তাদের ভূমিকা নগণ্য নয়।
দুই দশক ধরে অভিবাসীরা প্রয়োজনে এ সাহায্য নিয়ে আসছে। অথচ ট্রাম্প প্রশাসন তা বাতিলের ঘোষণা দিল। দেশ বা জাতির মঙ্গলের জন্য ট্রাম্প প্রশাসন এ ব্যবস্থা নিচ্ছে তা বলা যাবে না। এর পেছনে রয়েছে ট্রাম্পের রাজনৈতিক দুরভিসন্ধি। ২০১৬ সালেও অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার ঘোষণা দিয়ে তিনি প্রেসিডেন্ট পদের লড়াইয়ে নেমেছিলেন।
ট্রাম্পের অভিবাসনবিরোধী নানা বিধির কারণে শুধু নিউইয়র্কেই ১০ লাখ লোক ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এর ঢেউ মধ্যবর্তী নির্বাচনে পড়তে পারে। তবে ট্রাম্পের পরামর্শদাতাদের কেউ কেউ মনে করেন, অভিবাসীদের ওপর কঠিন হওয়াই রিপাবলিকান প্রার্থীদের বিজয়ের কৌশল।
ট্রাম্পের অভিবাসনবিরোধী বিভিন্ন পদক্ষেপের মাধ্যমে তাঁর নির্বাচনী বৈতরণি পার হওয়া বা তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হওয়া প্রায় অনিশ্চিত। এসব পদক্ষেপ দেশের জন্য কল্যাণকর হবে তাও বলা যায় না। কারণ ইতিমধ্যে লোকবল সংকটে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষতির মুখে পড়েছে। অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের কেউ কেউ এর মধ্যে ৩০-এর দশকের মতো আর্থিক মহামন্দার পদধ্বনি শুনতে পাচ্ছেন। তাই ট্রাম্প প্রশাসনকে এ ব্যাপারে কঠোরতা ও একগুঁয়েমি পরিহার করতে হবে এবং অনেক ভেবেচিন্তে বাস্তবসম্মত ব্যবস্থা নিতে হবে।