জীবন এক অপ্রত্যাশিত উপহার

ছোট্ট এই পৃথিবী। মানুষ নামের প্রাণী আমরা। আমাদের এই যাপিত জীবনে কত ত্রুটি-বিচ্যুতি। জীবনকে ভাঙি-গড়ি। জীবনকে সাজাই নিত্য নতুন সাজে। তবুও একদিন টুপ করে ঝরে পড়ি। শেফালির পরিপূর্ণ ফোটা ফুলটি যেমন সময় ফুরায় বলে ঝরে পড়ে।
পৃথিবীতে মানুষ হলো শ্রেষ্ঠ প্রাণী। মানবধর্ম হলো সেরা ধর্ম। হিন্দু-মুসলিম-ইহুদি-খ্রিষ্টান বা অন্য যেকোনো ধর্মাবলম্বী হোক না কেন, তবু সেই সেরা মানুষ যে মানবিক। মানবজীবন পৃথিবীর সেরা। জীবনের প্রতিটি পর্যায় অনিশ্চয়তার। অনিশ্চয়তা আছে বলে জীবন সুন্দর। রোমাঞ্চ যারা ভালোবাসে, চমকের পর চমক তাদের পছন্দ। মানুষ আপন আপন সময়ের পরিকল্পনা করে। কিন্তু জীবন চলে তার নিজস্ব গতিতে। মানুষ ভাবে এক, হয় আরেক।
জীবনটা আসলে একটা অপ্রত্যাশিত উপহারের মতো। প্রতিদিন ঘুম ভেঙে যদি দেখি বেঁচে আছি, তবে মনে হয় কোনো অপ্রত্যাশিত উপহার যেন পেয়েছি। মানুষ রাতে পরদিনের স্বপ্ন সাজিয়ে ঘুমায়, কিন্তু পরদিন ভেঙে গুঁড়িয়ে যায় স্বপ্ন। ইউএস বাংলা বিমানে নেপালের পথে উড়ার আগে ঢাকায় বিমানবন্দরে চমৎকার সেলফি তুলে সুন্দর কথামালাসহ পোস্ট দিয়েছিল প্রিয়ন্ময়ীর মামনি। নেপালের ত্রিভুবন বিমানবন্দরে অবতরণের মুহূর্তেই কী হলো, তা জানে সারা বিশ্ব। পৃথিবীতে মৃত্যু এক অনিবার্য সত্যের নাম।
‘জন্মিলে মরিতে হইবে।’ তাই এই ধ্রুব সত্যকে মনে রেখে মানুষকে মানুষের মতো চলতে হবে। মানুষ যে আল্লাহর সৃষ্টি শ্রেষ্ঠ জীব, তা প্রমাণ করতে হবে। কর্ম দিয়ে নিজের অস্তিত্বকে বিকশিত করতে হবে। কথা আর কাজের মিল রাখতে হবে। হিংসা বিদ্বেষ পরচর্চা পরনিন্দা—এসব দূরে রেখে মনকে আকাশের মতো উদার করে চলতে হবে। অলস মস্তিষ্ক শয়তানের কারখানা। সেই কারখানায় তৈরি হয় সব অসম্ভব পরিকল্পনা। সংসার ভাঙে। মানুষ খুন করে। যত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা সবই ঘটে। তাই কর্মময় জীবন হোক আনন্দ মুখর জীবনের উৎস। আমেরিকানরা বলে, ‘নো মানি, নো হানি।’ তাই কাজ করবে, আয়-উপার্জন হবে। ঘরে শান্তি থাকবে। মনেও শান্তি থাকবে।
শিক্ষা জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। শিক্ষা মানুষকে শাণিত করে। মানুষের সুপ্ত ধী শক্তিকে অবিরাম চর্চা দ্বারা আকর্ষণীয় করে তোলে। যেটুকু জীবনের আয়ু, সেটুকু যেন আলোকিত আকর্ষণীয় হয়। মানুষ নাম যেন সার্থক হয়। মৃত্যুর পরও মানুষের মতো মানুষ তার কাজের মধ্যে অমরত্ব পেতে পারে। মৃত্যুর পরও অমর অক্ষয় হতে পারলেই সার্থক হয় মানবজীবন।
মৃত্যুর পরও সত্যিকারের মানুষ তার কাজের মধ্যে অমরত্ব পেতে পারে। মৃত্যুর পরও অমর অক্ষয় হতে পারলেই সার্থক হয় মানবজীবন।