মধ্যবর্তী নির্বাচন

মধ্যবর্তী নির্বাচনের আর তিন দিন বাকি। ৬ নভেম্বর আমেরিকান ভোটাররা প্রতিনিধি পরিষদ ও সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নির্ধারণী এ নির্বাচনে অংশ নেবেন। সাধারণ মানুষের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন ইস্যুতে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের আগ্রাসী বিভিন্ন পদক্ষেপের পটভূমিতে তাই এ নির্বাচন বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
মধ্যবর্তী নির্বাচনে প্রতিনিধি পরিষদের ৪৩৫ আসনের সব কটিতে এবং সিনেটের ৩৫টি আসনে ভোট হবে। আইনসভার দুই কক্ষেই বর্তমানে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল রিপাবলিকানরা। প্রতিনিধি পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে হলে ডেমোক্র্যাটদের বর্তমান আসনগুলোর পাশাপাশি আরও ২৪টি আসনে জিততে হবে। সিনেটে ডেমোক্র্যাটদের প্রয়োজন বাড়তি দুটি আসন।
এই যখন হিসাব, তখন দুটি পক্ষই আক্ষরিক অর্থে লড়াইয়ে নেমে পড়েছে। এই লড়াইয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের অস্ত্র হয়ে উঠেছে ‘বিভাজনের রাজনীতি’। এ ক্ষেত্রে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি ভাগ্যও কিছুটা প্রসন্ন। কারণ, ঠিক এই সময়েই আমেরিকার দিকে এগিয়ে আসছে হন্ডুরাস ও এল সালভাদর থেকে কয়েক হাজার মানুষের দুটি ক্যারাভান। তাই অভিবাসী জুজুটি ঘুরিয়ে–ফিরিয়ে প্রদর্শনের ফুরসত পাচ্ছেন ট্রাম্প ও তাঁর বাহিনী। লক্ষ্য, কট্টর জাত্যভিমানী আমেরিকান ভোটারদের উদ্দীপ্ত করা।
আমেরিকা চাইলেও সব অভিবাসনপ্রত্যাশীকে গ্রহণ করতে পারে না। এটা সত্য। আমেরিকার সীমান্তের নিরাপত্তার বিষয়টি অবশ্যই গুরুত্বের দাবি রাখে। কিন্তু বিভাজনের রাজনীতিকে এভাবে সামনে আনা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এ ক্ষেত্রে ডেমোক্র্যাটরাও কাঙ্ক্ষিত ভূমিকাটি নিতে পারছেন না। বিভাজনের রাজনীতিকে এড়াতে তাঁরা সীমান্ত নিরাপত্তার বিষয়টিকেই এড়িয়ে যাচ্ছেন, যা বিভ্রান্ত করছে ভোটারদের।
এবারের মধ্যবর্তী নির্বাচন অনেকগুলো কারণেই গুরুত্বপূর্ণ। এই নির্বাচনেই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি নারী প্রার্থী পাচ্ছে আমেরিকা। এর মধ্যে নিউইয়র্কের ওকাসিও কর্টেজের মতো অনেকের অবস্থানই আশাবাদী করে। আইনসভার দুই কক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতার হিসাবের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে স্বাস্থ্য সুরক্ষাসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। হালে যুক্ত হয়েছে জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের বিধানের থাকা–না থাকার প্রসঙ্গটিও। এও বিভাজনের রাজনীতিরই অংশ। এই রাজনীতিকে আমেরিকানরা গ্রহণ না বর্জন করবে, তা নির্ভর করছে ভোটারদের ওপর। আরও ভালো করে বললে বলতে হয়, ভোটকেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতির ওপর। বহুত্ববাদী আমেরিকা ও এর নাগরিকেরা এই রাজনীতিকে প্রত্যাখ্যান করবে—এটাই প্রত্যাশা।