জন্মদিনের একাল-সেকাল

‘হাজার বছর ধরে আমি পথ হাঁটিতেছি পৃথিবীর পথে...!’
একজন কবির কবিতাতেই কেবল এই স্বপ্নময় কাব্যগাথা শোভা পায়। আমরা মানুষেরা অমরত্ব নিয়ে জন্মাইনি। আর হাজার বছরের দীর্ঘায়ুও আমাদের দেওয়া হয়নি। বড়জোর শতবর্ষ বাঁচার মতো রেকর্ড গড়েছেন কেউ কেউ। শতবর্ষের ওই মাইলফলকটি ছোঁয়ার মতো ভাগ্য বা সময় খুব কম মানুষই পায়। যাওয়ার ইচ্ছা না থাকলেও দৈব-দুর্বিপাকে সময়-অসময়ে অনেককেই পটল তুলতে হয়। তা সেই সংসারের মায়া, পৃথিবীর মায়া, প্রিয়জনের ভালোবাসা, খ্যাতির চূড়ায় ওঠার স্বপ্নপূরণ হোক বা না হোক।
‘যেতে নাহি দিব। হায়, তবু যেতে দিতে হয়, তবু চলে যায়।’ যতই আঁকড়ে থাকার প্রাণপণ চেষ্টা আমরা করি না কেন; যেতে আমাদের হবেই। একবার এলে, চলে যেতেই হবে। এটাই আমাদের নিয়তি; এটাই ভবিতব্য!
লিখতে বসেছিলাম আনন্দময় কিছু কথা। কিন্তু শুরুটাই হয়ে গেল নিরানন্দের। আনন্দ-হতাশা, জন্ম-মৃত্যু, সুখ-দুঃখ এরা হলো যমজ বোনের মতো। এরা ছায়ার মতো পাশাপাশি চলে। একজন আরেকজনকে ছেড়ে বেশিক্ষণ থাকতে পারে না। তাই একজন এলে আরেকজনের আশা অবশ্যম্ভাবী হয়ে ওঠে। লিখতে বসেছি জন্মদিনের কড়চা। জন্মদিনের বৃত্তান্ত। নিজের জন্মদিন নিয়ে কিছু গল্পসল্প। তবে কত দিন বা কতকাল ধরে আমার এই পৃথিবী পরিক্রমা চলছে, আমি তা হিসাব করতে চাই না। কটা মোমবাতি আমার জন্ম দিনে আমি ফুঁ দিয়ে নেভাবো, আমি তা নিয়ে মোটেও চিন্তিত নই। সেই হিসাব কষতেও আমার মন চায় না। আমার মনে যে এক চির কিশোরী বাস করে, আমি বহু যত্নে তাকে লালন করি। আর দশটা মেয়ের মতো তার বয়স বাড়ুক, সে বুড়িয়ে যাক, তা আমি চাই না। বাস্তব পৃথিবীর ঝড়-ঝাপটা থেকে তাই আমি তাকে আড়াল করে রাখি। আমি চাই দুঃখ, হতাশা, ব্যর্থতা বা মানুষের অবহেলার ছোঁয়া তাকে যেন স্পর্শ না করে। তাই আমি প্রাণখুলে হাসি, নির্দোষ আনন্দ করি, ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ টাইপের কথা শুনেও শুনি না; অন্তরে সুরের সাধনা করি; অসুরকে করি পদাঘাত। এই হলাম আমার আমি!
শরীরের বয়স বাড়বে প্রাকৃতিক নিয়মেই। মসৃণ সতেজ ত্বক কুঁচকে যাবে। চেহারায় দেখা দেবে বয়সের বলিরেখা। চুলে রূপালি ঝিলিক। বয়সের ভারে কুঁজো হয়ে আসবে মেরুদণ্ড। তবুও আমার ভেতরের আমি থাকব অনন্ত যৌবনা। তার বয়স বাড়বে না কোনদিনই। বিদ্রোহী কবি নজরুলের ভাষায়, তাঁর মতো করেই যৌবনকে পরাতে চাই আমার ‘রাজটিকা’। যৌবনের এই মন্ত্রে আমি দীক্ষা নিয়েছি প্রকৃতির কাছে, সুন্দরীতমা নারীদের কাছে। যারা বয়সে প্রবীণ, কিন্তু অন্তরে, ভাবনায় চির নবীন তাঁদের কাছে। চাঁদ, তারা, সূর্য, সাগর, পাহাড় আর সবুজ বনানীর আমি ছাত্রী।
‘বিশ্ব জোড়া পাটশালা মোর সবার আমি ছাত্র।’
তাইতো আমি কেবল শিখে চলেছি। মুগ্ধ বিস্ময়ে প্রকৃতি দেখি। মানুষ দেখি, সবার কাছে কেবলই শিখি। আমার অনন্ত জ্ঞান-পিপাসায় কোনো ক্লান্তি নেই। আমি যাযাবরের মতোই হাজার বছর ধরে ঘুরে বেড়াতে চাই পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে। কিন্তু নশ্বর এই মানব দেহঘড়িটি যেদিন বন্ধ হয়ে যাবে, তখনো কী আমার বিদেহী আত্মা বাতাস হয়ে, হুহু করে এই পৃথিবী পরিভ্রমণ করবে? পুনর্জন্ম নিয়ে মানুষ, চিল বা শালিখ হয়ে আবার কী কখনো ফিরে আসবে এই পৃথিবীর বুকে? কী জানি! আজও মেলেনি মনে আঁকুপাঁকু করা এই অজানা উত্তর! জীবনানন্দ বাবু যদিও বলে গেছেন—
‘আবার আসিব ফিরে ধানসিড়ির তীরে-এই বাংলায়
হয়তো মানুষ নয়, হয়তো বা শঙ্খচিল শালিখের বেশে
হয়তো ভোরের কাক হয়ে এই কার্তিকের নবান্নের দেশে
কুয়াশার বুকে ভেসে একদিন আসিব এ কাঠাঁল-ছায়ায়;’
সেই কাঁঠাল ছায়ায় তিনি কী আদৌ এসেছিলেন? এই উত্তরটা যদিও জানা হয়নি; তবুও মনে মনে আমিও কবি জীবনানন্দ দাশের মতোই হাজার বছর ধরে আমার এই প্রিয় পৃথিবী আর প্রিয় মানুষগুলোর মাঝে বেঁচে থাকতে চাই...।
‘মরিতে চাহিনা আমি সুন্দর ভুবনে,
মানবের মাঝে আমি বাঁচিবারে চাই…!’
বিশ্বকবি রবিঠাকুরের কণ্ঠেও ধ্বনিত হয়েছিল এমনি করুণ আর্তি। এত বড় বড় সব নামকরা কবি, সাহিত্যিক, খ্যাতিমান, ক্ষমতাবান লোকেরা হাজার বছর বাঁচার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করে গেছেন। অমরত্বের স্বপ্ন দেখেছেন। কিন্তু নিয়তিকে কেউ এড়াতে পারেনি। কেউ পারে না…! আমিতো এদের কাছে নিতান্তই চুনোপুঁটি। মানুষ তবু কয়েক শ বছর এঁদের নাম, এদের কথা মনে রাখবে। আর আমার মতো আমজনতা, ছা-পোষা, না ঘরকা না ঘাটকা মানুষ আজ মরলেই কাল ভুলে যার যার প্রাত্যহিক কাজে মনোনিবেশ করবে; এত বলাই বাহুল্য!
‘নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান
ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই।’
এই নিঃশেষে প্রাণ দান করার মতো কটা মানুষই বা জন্মেছে এই পৃথিবীতে। তাই আমার মতো মানুষেরা, আমরা নীরবে এসেছি, আবার নীরবেই চলে যাব। শুধু ব্যক্তিগত আনন্দ, হতাশা, দুঃখ, বেদনাই হলো আমাদের এই কদিনের পুঁজি। আমরা এসব নিয়েই হাসি, কাঁদি। এসব নিয়েই আমাদের দিন-রাত্রির গল্প। আমাদের মতো সাধারণদের জীবনেও কিছু বিশেষ দিন আছে। এমনি দিন প্রতি বছরই আসে; আবার চলে যায়। কিছু প্রিয়জন, কাছের মানুষেরা সেই দিনগুলো মনে রেখে শুভেচ্ছা জানাতে ভোলে না। তেমনি একটি বিশেষ দিন হলো জন্মদিন। খ্যাত বা অখ্যাত আমাদের সবারই একটা জন্মদিন আছে।
শুনেছি ভারতবর্ষের মানুষ জন্মদিনকে একটি বিশেষ দিন হিসেবে পালন করতে শিখেছিল সেই আঠারো শতকে। জোড়াসাঁকো ঠাকুর পরিবারের বিলেত ফেরত মেজবৌ জ্ঞানদা নন্দিনী বিলেত থেকে প্রথাটি এনে নিজেদের পরিবারে প্রচলন করেন। পশ্চিম বাংলায় তখন প্রচলন শুরু হলেও আমাদের পূর্ববাংলায় এর ঢেউ এসে লাগে আরও অনেক পরে। এমনকি পশ্চিমা বিশ্ব বহু আগেই শিশুজন্মের পর পরই ‘জন্ম সনদ’ পদ্ধতিটি চালু করলেও আমাদের তৃতীয় বিশ্বে তার প্রচলন হতে সময় লেগেছে অনেক। বাংলাদেশ নামক বিশাল জনসংখ্যার দেশটি সবে হাঁটাহাঁটি পা পা করে এই ‘জন্ম-নিবন্ধন’ পদ্ধতিটি শুরু করেছে। এ কারণেই আমরা প্রবাসীরা যখন উন্নত দেশগুলোতে চাকরি, পড়াশোনা বা অভিবাসনের জন্য যাই, তখন জন্ম তারিখ ও নামের বানান, নাম পরিবর্তনের হেরফের—এসব তুঘলকি কাণ্ডকারখানার কারণে পদে পদে হোঁচট খাই।
নিউইয়র্কে ইমিগ্রেশনের ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ল’ অফিসে বারবার যাতায়াত, ছোট ছেলে ও একজন বন্ধু ইমিগ্রেশন ল’ইয়ার হওয়ার সুবাদে দেশিদের এই জন্মতারিখ ও নাম বিভ্রাটের অনেক গাল-গল্প শুনেছি। জরিপে জানা গেছে, আমাদের বাঙালিদের অনেকেরই জন্মতারিখ হলো ১ জানুয়ারি। কারণ ১ জানুয়ারি জন্মতারিখ হলে দিন, মাস, বয়স হিসেব রাখতে সুবিধা অনেক। তাই পরিচিত আমেরিকানরা রসিকতা করে বলেন, ‘তোমাদের দেশে বেশির ভাগ লোকই কেবল জানুয়ারির এক তারিখেই জন্মায়?’ তাদের এমন রসিকতায় দোষ দেওয়ার উপায় নেই। আমরা অনেক বাঙালিরাই বুকে হাত দিয়ে বলতে পারব না, আমাদের জন্মতারিখটি সঠিক। আমাদের অনেকেরই জন্ম তারিখটি এসএসসি পরীক্ষার নিবন্ধনের আগে আমাদের স্কুলশিক্ষকের ঠিক করে দেওয়া। এমনকি আমাদের স্বনামধন্য আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যার তাঁর এক জন্মদিনের অনুষ্ঠানে হাসতে হাসতে বললেন, ১৯৩৯ সালে জন্ম নেওয়া তার জন্ম সালটি কী করে তাঁর মাস্টারমশাই অবলীলায় ১৯৪০ করে দিলেন। তাই বর্তমানে তাঁর অফিসিয়াল বয়স একটা; এবং প্রকৃত বয়স আরেকটা। আমাদের বয়সী অনেকেই প্রকৃত জন্মদিন এবং অফিসিয়াল জন্মদিন—এই দুটো তারিখের বিড়ম্বনা বয়ে বেড়াচ্ছি। যদিও অনেক দেরিতে হলেও এই অবস্থার পরিবর্তন আসছে। কারণ পশ্চিমা বিশ্ব যখন উন্নয়নের পথে একধাপ এগিয়ে যায়; আমাদের দেশে সেই জোয়ার আসতে কম করেও দু শ বছর লেগে যায়! এমনি দুর্গম অন্ধকারে আমাদের বসবাস!
একজন মধ্যবিত্ত সরকারি চাকুরে বাবার ঘরে আমার জন্ম। সাত ভাইবোন, দাদা-দাদি আর চাচা-ফুফুদের নিয়ে বিশাল সংসারে আমার বেড়ে ওঠা। ছোটবেলায় জন্মদিন পালন কাকে বলে, আমরা জানতাম না। ব্যস্ততার কারণে আমাদের মা আমরা ভাইবোনরা কে, কোন ক্লাসে পড়ি তাও মনে রাখতে পারতেন না। আমাদের পড়ালেখার দায়িত্ব ছিল লজিং মাস্টারের হাতে। ধীরে ধীরে চাচা-ফুফুদের নিজস্ব সংসার হতে থাকে; আমাদের সংসারও ছোট হয়ে আসে। আমরা বড় হতে শুরু করলাম; সব বোনেরা মিলে শখ করে একমাত্র ছোট ভাইয়ের জন্মদিন পালন শুরু করলাম। তারপর মা মনে করে করে, বাবার লেখা ডায়েরি ঘেঁটে আমাদের একেক বোনের জন্মদিনে উন্নত খাবার অর্থাৎ পোলাউ-মাংস বা বিরিয়ানি রান্নার চল শুরু করলেন। আমরা ঘরে বানানো কেক কেটে আনন্দ করতাম। তারপর খুব শখ করে ওই কেকে মোমবাতি জ্বালানোর চলও শুরু হলো। বিয়ে হল বাবার মতো একই পেশার একজন ব্যাংকারের সঙ্গে। অত্যন্ত ভদ্র, সৎ আর নীতিবান মানুষ। ফেরেশতার মতো মানুষেরা অন্যের অনেক উপকারে আসে। কেবল ঘরের মানুষেরা তাদের অতি ভালোমানুষিতে বিরক্ত হয়। ফেরেশতার মতো মানুষেরা তাই স্বামী হিসেবে ভালো হয় না, এটা পরীক্ষিত সত্য। মানুষ হিসেবে অসাধারণ হলেও ভদ্রলোক স্বামী হিসেবে কতটা ভালো, বলা একটু কঠিন। যিনি রোবটের মতো ঘড়ি ধরে সকাল পাঁচটায় ঘুম থেকে ওঠেন, রাত নয়টায় ডিনার খান আর দশটায় ঘুমাতে যান। খুব বড় কোনো কারণ ছাড়া এর তেমন ব্যতিক্রম হয় না।
নিজের বাবা-মা, ভাই-বোন, এমনকি তাদের শ্বশুর-কূলের খোঁজখবর নিতেও তার কোনো ভুল হয় না। কিন্তু নিজের স্ত্রীর জন্মদিন আর বিয়ে বার্ষিকীর মতো তুচ্ছ জিনিস তিনি কখনই মনে রাখতে পারেন না। সুখে-দুঃখে এই রোবট মানুষটির সঙ্গেই বহু বছর পার করে দিলাম। কিন্তু একদিন অবাক হয়ে আবিষ্কার করলাম, আমার নিজের মাকে এই মানুষটি তাঁর নিজের মায়ের মতোই ভালোবাসেন। আমার ভাই-বোনদের জন্যও তার যথেষ্ট মমতা রয়েছে। সুতরাং অভিমান বা অভিযোগের বোঝা অনেকটাই এখন ঝরে গেছে। কী হবে এত অভিমান পুষে রেখে? মানুষ কদিনইবা বাঁচে?
‘বিজ্ঞান মানুষকে দিয়েছে বেগ, কেড়ে নিয়েছে আবেগ’ কথাটি পুরোপুরি সঠিক তা আমি বলব না। আজকাল বিজ্ঞানের বদৌলতেই নিরামিষ টাইপের মানুষগুলোও আমিষ হয়ে উঠছে। তারা টেলিভিশন, বিজ্ঞাপন, ফেসবুক নানা কিছু দেখে দেখে বুঝতে শিখেছে, জন্মদিন, বিয়ে বার্ষিকী বা ভালোবাসা দিবসে ঘরের খেটে খাওয়া বউটিকে একটু মিষ্টি কথা বলে উইশ করা, ফুল বা ছোটখাটো উপহার দেওয়ার প্রয়োজন আছে। ইদানীং এই রোবট মানুষটিও আমার জন্মদিন বা বিয়ে বার্ষিকী মনে রেখে চুপিচুপি ফুল আর কেক এনে ছেলেদের সঙ্গে সারপ্রাইজ পার্টির আয়োজন করেন। মনে মনে ভাবি, এমনি কত বসন্ত চলে গেছে অনাদর আর অবহেলায়। আজকাল দেখছি কোকিল শুধু বসন্তেই নয়, শীতেও ডাকে!
এখন আমার ছেলেরা বড় হয়েছে। তারা বাবা-মায়ের জন্মদিন, বিয়ে বার্ষিকী, মা দিবস, বাবা দিবস—কোনোটাই নীরবে যেতে দেয় না। কেক, ফুল, উপহার আর ভালোবাসায় সিক্ত করে দেয় জীবন। জানি দুদিন পরেই আমার এই জন্মদিনেও ঘরে লুকিয়ে কেক আসবে, ফুল আসবে, আমাকে অবাক করে দিয়ে সবাই বলবে—
‘হ্যাপি বার্থ ডে শেলী!’
আমি বরাবরের মতোই জেনেও না জানার ভান করব। কারণ এই সুখটি ধরে রাখতে চাই। এই আনন্দ, আর খুশি উপভোগ করতে চাই তাড়িয়ে তাড়িয়ে। জীবন এত আনন্দময়। তাইতো এই জীবন, ভালোবাসার এই মানুষগুলোকে ছেড়ে যেতে হবে ভাবতেও খুব কষ্ট হয়।
ইদানীং ফেসবুকের কল্যাণেও ভালোবাসা আর বন্ধুত্বে নবজাগরণ এসেছে। কত কত অদেখা ভার্চুয়াল বন্ধুদের সঙ্গে চলে কুশল বিনিময়। সুখ-দুঃখের গল্প। তাদের ছবি আর লেখনীর গুণে অজানা, অদেখা এই মানুষগুলোও জীবন্ত হয়ে উঠছে আমাদের জীবনে।
ঘুম ভেঙে অভ্যাসবশত ফোন হাতে নিই। একি? আমার ফেসবুকের টাইমলাইন যেন ভেসে যাচ্ছে জন্মদিনের শুভেচ্ছায়। ফুল, বেলুন, কেক, শুভেচ্ছা আর ভালোবাসার বন্যায়। আমার এত এত অসাধারণ সব ভার্চ্যুয়াল বন্ধুরা জন্মদিন উপলক্ষে পাঠিয়েছে তাঁদের অজস্র ভালোবাসা আর শুভকামনা। এত মানুষের এত ভালোবাসা, আমি কি আসলেই এর যোগ্য? এই এক জীবনে এর চেয়ে আর বেশি কী প্রয়োজন? নগণ্য, ক্ষুদ্র এক মানুষ আমি। আমার জন্য এত ভালোবাসা! এত মায়া! এসব আমাকে বড় অভিভূত করে। আপ্লুত করে। চোখ ভিজে ওঠে আনন্দে। কেমন করে এসব কিছু ছেড়ে একেবারে চলে যাব? জীবন এত ছোট কেন? কবির মতো আমারও বলতে ইচ্ছে করে,
‘মরিতে চাহিনা আমি এই সুন্দর ভুবনে’।
হে ঈশ্বর, মানুষ হিসেবে সৃষ্টি করায় আমি তোমার কাছে কৃতজ্ঞ। হে পৃথিবীর মানুষ, তোমাদের জন্য আমার ভালোবাসা!