অদৃশ্য বুলেট: স্টিফেন গ্রিনব্লাট

ইতালি থেকে আসা সাম্প্রতিক প্রতিবেদনগুলোয় আমরা দেখতে পাই, কীভাবে প্রাচীন রোমক দার্শনিক লুক্রেতিয়াসের বর্তমান সময়ের স্বদেশীরা ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে করোনা ভাইরাসের মড়কের ভেতরও গান গাইছেন, ভরসা জোগাচ্ছেন একে অপরকে।
ইতালি থেকে আসা সাম্প্রতিক প্রতিবেদনগুলোয় আমরা দেখতে পাই, কীভাবে প্রাচীন রোমক দার্শনিক লুক্রেতিয়াসের বর্তমান সময়ের স্বদেশীরা ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে করোনা ভাইরাসের মড়কের ভেতরও গান গাইছেন, ভরসা জোগাচ্ছেন একে অপরকে।

১৫৮৫ সালে এলিজাবেথীয় যুগের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞানী থমাস হ্যারিয়টকে তাঁর পৃষ্ঠপোষক স্যার ওয়াল্টার র‍্যালেইহ উদীয়মান ব্রিটিশ উপনিবেশ ভার্জিনিয়ায় পাঠালেন সেখানকার প্রাকৃতিক সম্পদ, আলগোনক্যুইয়ান রেড ইন্ডিয়ান অধিবাসী সম্প্রদায়ের জীবনাচার ও এই উপনিবেশে ঔপনিবেশিকেরা কতটুকু টিকে থাকতে পারবে, সেটা পরীক্ষা করার জন্য। হ্যারিয়ট, যার কিনা ক্যারোলিনার আলগোনক্যুইয়ান ভাষা শেখার কিছুটা ইচ্ছা ছিল এবং ‘সেখানকার কিছু পুরোহিতের সঙ্গে বিশেষ হার্দিক সম্বন্ধ’ও যিনি গড়ে তুলতে চাইছিলেন, তিনি কিন্ত ভার্জিনিয়ায় গিয়ে সত্যিই সেখানকার অধিবাসীদের কৃষি, শিকার ও মাছ শিকারের দক্ষতায় মুগ্ধ হন। মুগ্ধ হন এই আদিবাসী সম্প্রদায়ের বাকপটু ও মর্যাদাসম্পন্ন নেতা ও তাঁদের শক্ত পারিবারিক ও গোষ্ঠীবন্ধন দেখেও।

তুলনায় ইংরেজরা ছিল সংখ্যায় স্বল্প, বলতে গেলে জীর্ণ বস্ত্র কয়েকজন মানুষ—শুরুর দিকে র‍্যালেইহ মানচিত্রে অচিহ্নিত, বিশাল এই ভূমিতে ব্রিটিশ নারীদের পাঠাননি, যেখানে কিনা সুসংগঠিত, সমৃদ্ধ ও গর্বিত একটি আদিবাসী সম্প্রদায় বাস করে। হ্যারিয়ট দেখলেন যে এই আদিবাসী সম্প্রদায়কে বিনা প্রচেষ্টায় অধীনস্থ করা যাবে না। তবে ১৫৮৮ সালে ‘ভার্জিনিয়ার নব-আবিষ্কৃত এলাকা বিষয়ে এক সংক্ষিপ্ত তবে সত্য প্রতিবেদন’ শীর্ষক তাঁর প্রতিবেদনে তিনি প্রত্যয়ী ছিলেন যে ঔপনিবেশকেরা তাঁদের প্রযুক্তিগত শ্রেষ্ঠত্বের কারণেই বেশি সুবিধা পাবে ও আদিবাসীদের সঙ্গে শেষমেশ লড়াইয়ে জিতে যাবে: ‘বন্দুক, বই, লেখা ও পড়া, দম দেওয়া ঘড়ি, যা নিজেই নিজের মতো চলতে পারে’—এসব প্রযুক্তিগত শ্রেষ্ঠত্বের ওপরেই তিনি ভরসা করেছিলেন। সেই সঙ্গে অল্প সংখ্যায় হলেও ঔপনিবেশিকদের এই আদিবাসী ভূখণ্ডে পা রাখাও যেন তাদের (ইংরেজদের) বাড়তি সুবিধাই দেবে। যেখানেই ব্রিটিশরা গেছে, কোনো আদিবাসী যদি তাদের বিরুদ্ধে কিছু করেছে, তাহলে ‘এমন প্রতিটি শহর থেকে আমরা চলে আসার কয়েক দিন পরই সেখানকার মানুষজন খুব দ্রুত বিপুল সংখ্যায় মরতে শুরু করেছে,’ হ্যারিয়ট জানাচ্ছেন, ‘শুরুতে আদিবাসী জনপদগুলোয় ২০, তারপর ৪০, তারপর ৬০ এবং শেষে ১৬০...কখনো কখনো গোটা তল্লাটই সাফ...আর ছড়িয়ে পড়া এই ছোঁয়াচে রোগও ভারি অদ্ভুত, না এই আদিবাসীরা জানত যে রোগটি কী বা কেমন, না জানত কীভাবে এই রোগ প্রতিরোধ করতে হয়, এমনকি তাদের ভেতর বৃদ্ধতম মানুষটিও জীবনে এমন কিছু দেখেছে বলে মনে করতে পারত না।’

যদিও হ্যারিয়ট গুটি বসন্ত, হাম, ইনফ্লুয়েঞ্জাসহ যাবতীয় ভাইরাসেরই ভয়ানক প্রতিক্রিয়া এই আদিবাসী জনগোষ্ঠির উপর সংঘটিত হতে দেখছেন—এমন এক জনগোষ্ঠীর ওপর, যারা কিনা অতীতে এসব জীবাণুর সংক্রমণ বিষয়ে কিছুই জানত না, হ্যারিয়ট এই যাবতীয় সংক্রমণকে ব্যখ্যা করছেন নেটিভদের উপর নেমে আসা এক দৈব শাস্তি হিসেবে, যারা কিনা ‘আমাদের বিরুদ্ধে কিছু করেছে।’
অন্যদিকে, আলগোনক্যুইয়ান ইন্ডিয়ানরা স্বাভাবিকভাবেই ধরে নিল যে তাদের জনপদে আসা এই নবাগতদের সঙ্গে মহামারি বা মড়কের একটি সম্পর্ক আছে। হ্যারিয়ট দেখলেন যে আদিবাসীরা মড়ককে সম্পূর্ণ নিজস্ব দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যা করছে। তারা মনে করল যে এই মুষ্টিমেয় ঔপনিবেশিকদের থেকেই শুরু। আরও যত বেশি সংখ্যায় তারা আসবে, ততই এই ঔপনিবেশিকেরা ‘আদিবাসীদের খুন করে তাদের আবাসভূমি কেড়ে নেবে।’

‘আমাদের (প্রথম ইংরেজ ঔপনিবেশিকেরা) পরপরই যাদের আসার কথা ছিল,’ হ্যারিয়ট লিখলেন, ‘আদিবাসীরা তাদের বাতাসে কায়াহীন ও অদৃশ্য হিসেবে কল্পনা করত, যারা কিনা এখানে আসার পর আমাদের প্রতি ভালবাসার দরুণ আদিবাসীদের খুন করবে...অদৃশ্য বুলেট ছুঁড়ে তাদের হত্যা করবে।’

সত্যি বলতে আলগোনক্যুইয়ান রেড ইন্ডিয়ানরা ‘অদৃশ্য বুলেট’ নামের এই উজ্জ্বল রূপকল্প ব্যবহার করেছিল ইংরেজ ঔপনিবেশিকেরা তাদের ভেতর যে অসুখের বীজাণু ছড়িয়ে দিয়ে দ্রুতই রেড ইন্ডিয়ান জনপদগুলো একের পর এক ধ্বংস করে দিত, সেটা বোঝাতে। তারা যথার্থই ভীত হয়েছিল যে এই রোগ তাদের সমাজকে ধ্বংস করবে। একজন প্রবল প্রতিভাবাণ নৃতাত্ত্বিক হিসেবে হ্যারিয়ট আদিবাসীদের এই রূপকল্প নথিবদ্ধ করে যান, একই সঙ্গে এটি তাঁর বিশেষ আগ্রহের বিষয়ও ছিল বৈকি। আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি আদিবাসীদের ভেতরের এই ভীতিবোধ প্রতিবেদনে উল্লেখ করে ইংরেজ পাঠকদের এটা বলে আশ্বস্ত করেছেন যে ঔপনিবেশিকদের বিরুদ্ধে যারাই কোন গোপন ষড়যন্ত্র করছে, তাদের ওপরই মড়ক নেমে আসছে এবং কাজেই এটি ছিল ‘ঈশ্বরের কোনো বিশেষ কাজ।’ (আবর্তনমূলক যুক্তি অনুসারে রেড ইন্ডিয়ানরা আসলেই শ্বেতকায় উপনিবেশবাদীদের বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্র করেছিল কি না, তার সাক্ষ্য হিসেবে মড়কে ষড়যন্ত্রকারীদের লাশের স্তূপই প্রমাণ)। কিন্ত হ্যারিয়ট তো তাঁর গোটা কর্মজীবনজুড়েই একজন নাস্তিক হিসেবে সন্দেহভাজন ছিলেন এবং বিশেষ করে প্রাচীন যুগের এপিকিউরীয় দার্শনিক লুক্রেতিয়াসের ভাবশিষ্য হিসেবেই তাঁকে এত দিন ধরে মনে করা হয়েছে। লুক্রেতিয়াস মড়কের বিষয়ে বিশেষ মনোযোগী ছিলেন।

আনুমানিক ৫০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে ‘বস্তুসমূহের প্রকৃতি’ শিরোনামে তাঁর অন্যতম সেরা দার্শনিক রচনায় লুক্রেতিয়াস বৈপ্লবিক বস্তুবাদের পক্ষে যুক্তি সাজান। দৈব শাস্তির ভয়ে মানুষের জড়োসড়ো হওয়া উচিত নয়, নয় দৈব পুরস্কারের ভয়ে দাসের মতো নানা যাগযজ্ঞের আয়োজনে ব্যস্ত হওয়া—তিনি লিখেছিলেন।
এই মহাবিশ্ব দেবতা ও দৈত্যদের কোনো রহস্যময় ক্রীড়াসামগ্রী নয়; এটি শুধুই পরমাণু ও শূন্যতা দিয়ে ভরা এবং আর কিচ্ছুটি নেই। পরমাণু—লুক্রেতিয়াস যাদের বলতেন সেমিনারেরাম, ‘বস্তুসমূহের বীজ’—এরা গতিশীল, অনিঃশেষভাবে চলনশীল, সংঘর্ষপরায়ণ, সমন্বয়শীল, বিচ্ছিন্নতাপরায়ণ এবং নতুন ও অদৃশ্যপূর্ব নানা বিন্যাসে পুনরায় সমন্বয়শীল। পরমাণুর এই যাবতীয় আন্দোলনেই কোনো নির্দিষ্ট নমুনা নেই, নেই কোনো বিশেষ অভিপ্রায় বা উদ্দেশ্য, বৌদ্ধিক কোনো বিন্যাসের চিহ্ন। বরং সময় ও পরিসরের এক সীমাহীন বিস্তৃতিতে রয়েছে বিরতিহীন, এলোমেলো নানা পরিবর্তন। পুরোনো প্রকরণগুলো ক্রমাগত নিঃশেষিত হয়ে যাচ্ছে, নতুন প্রকরণগুলো ধারাবাহিকভাবে উত্তাল হয়ে উঠছে।

লুক্রেতিয়াসের জন্য এই ভাবনাটি ছিল গভীরভাবে স্বস্তিদায়ক: দেবতাদের বিষয়ে অস্থির নানা চিন্তা বা মৃত্যুর পর পরলোক সম্পর্কে ভাবনার চেয়ে তুমি বরং এই চারপাশের পৃথিবীর ওপরই তোমার মনোযোগ নিবদ্ধ রাখো, একমাত্র যে ভুবনকে তুমি বাস্তবে অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে জানতে পারবে, এবং নিজের ও চারপাশের প্রতিটি মানুষের আনন্দ বা সুখ বৃদ্ধির প্রশান্ত চেষ্টা করে যাও।
তবে লুক্রেতিয়াস এটাও জানতেন যে তিনি যে সংবাদ আনছেন, তা দ্ব্যর্থহীনভাবে সবাইকে আশ্বাস না-ও জোগাতে পারে। ক্রুদ্ধ দেবতাদের অভিশাপেই তুমি যদি অসুস্থ না-ও হয়ে থাকো, কোথাও না কোথাও থেকে এইসব মড়ক বা মারী তো আমাদের মধ্যে আসে, হয়তো আসে নিরবচ্ছিন্নভাবে ঘূর্ণায়মান পরমাণুপুঞ্জ থেকেই, যারা এ বিশ্বের প্রতিটি বস্তু সৃষ্টি করেছে। এমনটাই লিখেছিলেন লুক্রেতিউস তাঁর ‘বস্তুসমূহের বীজ’-এ (রলফে হামফ্রির ইংরেজি অনুবাদ অনুযায়ী)।
যদিও আমাদের জীবন বাঁচাতে কাজে লাগে,
একই সঙ্গে সখা এ কথাটিও সত্য
চারপাশে ওড়া যত বিনাশকারী পরমাণু
বহন করে যে অসুখ ও মৃত্যুর চিহ্ন।
লিখেছিলেন লুক্রেতিয়াস। আমাদের প্রতি বিদ্বিষ্ট পরমাণুরাজি যখন ঘুরতে শুরু করে, তখনি দেখা দেয় সংশয়, ‘পরিবর্তনগুলো জারি হয়/আমাদের পরিচিত সব জায়গায়।’ এমন সব সময়ে পৃথিবীতে আশ্চর্য কিছু ঘটনা ঘটতে থাকে, যা কিনা এত দিন আমরা খুব ঘনিষ্ঠভাবে জানি বলে ভেবেছি। আমাদের মাথার ওপরের আকাশ মুহূর্তমধ্যেই যেন বৈরী হিসেবে দেখা দেয় এবং আমাদের বেঁচে থাকা বা অস্তিত্বের জন্য প্রয়োজনীয় বস্তুরাজি ভয়ানক আতঙ্ককর হিসেবে প্রতিভাত হয়। মড়ক কেমন? লুক্রেতিয়াস লিখছেন,
মড়কের বীজাণু পতিত হয়
জল অথবা শস্যখেতের ওপর,
পরিপুষ্ট পশু ও মানবদেহে পতিত হয়,
অথবা বাতাসে ঝুলে থাকে,
আর নিঃশ্বাসে বাতাস নেবার সময়
আমরা শ্বাসনালী হয়ে টেনে নিই সকল বীজাণু
দেহের অভ্যন্তরে।
মড়কের সময় স্বাভাবিকভাবেই মানুষের মুখ বিষাষগ্রস্ত হয়, আতঙ্ক ও হতাশা ভর করে সবার ভেতর। ‘বস্তুরাজির প্রকৃতি’–তে (অন দ্য নেচার অব থিংস) লুক্রেতিয়াস পেলেপনেশীয় যুদ্ধের সময় এথেন্সে ছড়িয়ে পড়া এক ভয়ানক প্রাণসংহারী মড়কের মর্মভেদী বিবরণ দেন। কবিতাটি এমন এক কালো সুরে হুট করে শেষ হয় যে অনেক পণ্ডিতই মনে করেন, কবিতাটি অসমাপ্ত রেখেই লুক্রেতিয়াস মারা গেছেন। এমন কিংবদন্তীও প্রচলিত আছে যে তার স্ত্রী ভালোবেসে তাঁকে একটি শুশ্রূষাকারী ভেষজ নির্যাস খেতে দিলে সেটি খেয়ে উল্টো তিনি মারা যান।

সম্ভবত এমনটিই ঘটেছিল। তবে হালে এই কোভিড-১৯-এর সঙ্গে লড়াইরত অবস্থায় কবিতাটির শেষাংশ আমাদের কাছে এক অন্য আলোয় দেখা দেয়। একটি মড়ক, সবকিছুর পরও আমাদের অনবদ্য নানা পন্থায় যেন পরীক্ষা করে। একটি মড়ক যেন খুব নিষ্ঠুরভাবেই আমাদের সব মূল্যবোধের পরীক্ষা নেয়, আমাদের অতীতের সব পূর্বানুমানকে প্রশ্নবিদ্ধ করে, এক অকরুণ আলোর মুখোমুখি করে আমাদের যাবতীয় সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় ধারাক্রমকে। ইতালি থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসার পর এখন আমি যখন আমার ‘স্বেচ্ছা একাকী বন্দীত্বে’ বসে আছি, আমি ভাবছি যে লুক্রেতিয়াসের কবিতার শেষাংশ মড়কে ছড়িয়ে পড়া ব্যাধি সম্পর্কে আজও পুরোপুরি বোধগম্য হয়েছে কি না। এটা মোটামুটিভাবে একটি অস্তিত্বগত চ্যালেঞ্জ, যা মনুষ্য বসবাসযোগ্য যেকোনো সমাজের এবং গ্রহণযোগ্য যেকোনো দর্শনের মুখোমুখি হতেই হবে বলে লুক্রেতিয়াস মনে করতেন। যখন সবকিছু ভালোভাবে চলছে, তখন বস্তুজগতে আমাদের অবস্থান সম্পর্কে মনস্থ করাটা সহজ। কিন্তু যখন চারপাশে ঘটমান সবকিছু ভালো না হয়, যদি শস্যের বীজে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির দ্বারা আনীত পরিবর্তন আমাদের জন্য মড়ক ও মৃত্যু বয়ে আনে? একমাত্র যখন একজন মানুষ হিসেবে তুমি আমাদের চারপাশের সব অদৃশ্য বুলেটের মুখোমুখি হতে পারবে এবং তারপরও শান্ত ও যৌক্তিক থেকে জীবনে আনন্দ নিতে পারবে, একমাত্র তখনি লুক্রেতিয়াসের কবিতার শিক্ষণীয় দিকটি বুঝতে পারবে।
চারপাশে প্রকাশিত সংবাদ থেকে যা বোঝা যাচ্ছে, আমাদের ভেতর খুব কম মানুষই এপিকিউরীয় দার্শনিকদের বোধের স্তরে পৌঁছাতে পেরেছে। তবে হালে ইতালি থেকে আসা প্রতিবেদনগুলো, যেখানে কিনা দেখা যাচ্ছে কোয়ারেন্টিনে থাকা মানুষেরা ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে মড়কের ভেতর গান গাইছেন, এমন সব ছবি ও সংবাদ আমাকে আশা জোগাচ্ছে। এই ইতালীয়রা আমাদের মনে করিয়ে দিচ্ছেন যে বিজ্ঞানের পাশাপাশি অন্য আরেকটি যে রাজ্যে মানুষের প্রতিরোধক্ষমতা ও উদ্ভাবনীশক্তি প্রবল হয়ে থাকে, সেটা হলো শিল্প। লুক্রেতিয়াসের ভেতর এই দুই ক্ষমতাই ছিল: পরমাণু বিষয়ে তাঁর বিস্তারিত রচনাবলি এবং মড়কের ভেতরও বিমলানন্দে একটি কবিতা রচনা বা গান গাইবার ক্ষমতা।

সূত্র: নিউইয়র্কার