সাত শতাধিক গাছ নিধনের সিদ্ধান্ত!

প্রথম আলোর একটি খবরে প্রকাশ, মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ অস্থায়ী কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড নির্মাণের জন্য বাগানের ৩ দশমিক ৭ একর জমি নেবে। এ জন্য ওই মাতৃবাগানের প্রায় ৮০ শতাংশ গাছ কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

 আগারগাঁওয়ের এই মাতৃবাগানটি দেশের অর্থনীতি, গবেষণা, খাদ্য-পুষ্টি ও নগরের পরিবেশ রক্ষায় বিশেষ ভূমিকা রেখে আসছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অধীনে ১৯৯০ সালের দিকে এই বাগানের যাত্রা শুরু। তখন রাষ্ট্রপতির সচিবালয় থেকে একটি নির্বাহী আদেশে আগারগাঁওয়ের জাতীয় প্যারেড স্কয়ারের পশ্চিম-দক্ষিণ অংশে এই মাতৃবাগান স্থাপনের জন্য ৫ একর জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়। মাতৃবাগানটির কর্মকাণ্ড নির্বিঘ্ন করার স্বার্থে ২০০০ সালে প্রধানমন্ত্রী একটি নির্বাহী আদেশ জারি করেন। কিন্তু এমন একটি স্পষ্ট নির্বাহী আদেশ থাকার পরও মেট্রোরেল প্রকল্প কর্তৃপক্ষ কী করে এমন একটি সিদ্ধান্ত নেয়, তা আমাদের বোধগম্য নয়।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ফল নিয়ে গবেষণা ও উৎপাদনের ক্ষেত্রে কতগুলো উদ্ভিদভান্ডারের ওপর শতভাগ নির্ভরশীল। এই মাতৃবাগান তারই একটি। এই বাগানে মোট ৬৭ প্রকার ফলের ২৬৫ জাতের ৭৩৯টি মাতৃবৃক্ষ আছে। মাতৃবাগানটির চারা-কলম থেকে প্রতিবছর সরকারের রাজস্ব খাতে কয়েক কোটি টাকা যুক্ত হচ্ছে। চারা-কলমগুলো পৌঁছে যাচ্ছে দেশের অন্য হর্টিকালচার সেন্টারগুলোতে। পাশাপাশি সমৃদ্ধ হচ্ছে ঢাকার ছাদবাগানগুলো। এখানে এমন কিছু উদ্ভিদ প্রজাতি আছে, যা মারা গেলে বা নষ্ট হলে সারা দেশ থেকেই সম্পূর্ণরূপে বিলুপ্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

আমাদের প্রশ্ন, এমন একটি বাগানকে ধ্বংস করে কেন সেখানে কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড নির্মাণ করতে হবে? মেট্রোরেল প্রকল্প কর্তৃপক্ষ বাগানটি বাঁচানোর স্বার্থে বিকল্প কোনো স্থানের কথা ভাবতে পারে। নগরের প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার জন্য, সর্বোপরি জাতীয় স্বার্থেই এটা করা উচিত। আমরা চাই বাগানটি বেঁচে থাকুক।