জেলেদের সহায়তা না দিলে কার্যকর করা কঠিন

সরকার ১ থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত পদ্মা ও মেঘনা নদী থেকে মা ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা, মজুত ও বিক্রি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই জেলেরা বিভিন্ন স্থানে মাছ ধরছেন। প্রথমআলোর এক প্রতিবেদন বলছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর ও নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার অনেক জেলে এই নিষেধাজ্ঞা মানছেন না। নিষেধাজ্ঞা দিয়ে যদি কাজ না হয়, তবে সেই নিষেধাজ্ঞার অর্থ কী!

নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করতে জেলেরা বিভিন্ন কৌশল নিচ্ছেন। মৎস্য বিভাগের লোকজন সাধারণত রাতে অভিযান চালান। তাঁদের সেই অভিযান শেষ হওয়ার পর জেলেরা নদীতে নামেন মাছ ধরতে। পরদিন বাড়িতে বাড়িতে ফেরি করে ইলিশ মাছ বিক্রি করেন।

১ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত সময়টিকে সাধারণভাবে ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম হিসেবে ধরা হয়। এ মৌসুমে ঝাঁকে ঝাঁকে ডিমওয়ালা মা ইলিশ সাগর থেকে উপকূলীয় লোনা পানিতে এসে ডিম ছাড়ে। ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধি ও সংরক্ষণের জন্যই এ সময় ইলিশ মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। জেলেদের এ বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। এ ছাড়া মাইকিং, পোস্টার, ব্যানার, লিফলেট ও প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে জনসাধারণকেও সচেতন করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারীদের কারাদণ্ডসহ নানা ধরনের শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। তারপরও মাছ ধরা চলছে, কারণ জেলেদের অভিযোগ, এই সময়টিতে জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা সরকারের কাছ থেকে পাচ্ছেন না। ফলে বেঁচে থাকার তাগিদে বাধ্য হয়ে তাঁরা মাছ ধরছেন।

ইলিশের প্রজনন মৌসুমে ইলিশ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে হলে বা এ নিষেধাজ্ঞা যে উদ্দেশ্যে, সেই ফল পেতে হলে এ সময়টায় জেলেদের সহায়তা ও বিকল্প কর্মসংস্থানের দিকে নজর দিতে হবে। বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার পরও যদি কোনো জেলে ইলিশ মাছ ধরেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনকেও এ ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে।