সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে ভূমিকা রাখতে হবে

বুধবার প্রথমআলোর একটি খবর হচ্ছে নিজস্ব উদ্যোগ, সহপাঠী-শিক্ষক, কিশোরী ক্লাবের সহায়তা এবং পুলিশ ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপে দেশের ছয়টি জেলায় বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা পেয়েছে সাত কিশোরী। এর মধ্যে চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার একটি গ্রামে স্থানীয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) হস্তক্ষেপে বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা পেয়েছে অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রী (১৪)। গত সোমবার সন্ধ্যায় ওই ছাত্রীর সঙ্গে এক যুবকের বিয়ের আয়োজন চলছিল। খবর পেয়ে ওসি মো. কুতুবউদ্দিন বিয়ে বন্ধে সহকারী উপপরিদর্শককে নির্দেশ দেন। উপপরিদর্শক পুলিশের কয়েকজন সদস্য নিয়ে কনেবাড়িতে গিয়ে বিয়ে বন্ধ করেন।

আমরা পুলিশের এই উদ্যোগকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাতে চাই। কেননা বাল্যবিবাহ রোধে পুলিশ ভূমিকা পালন করলে কাজটি অনেক সহজ হয়ে যায়। বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭-এ বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে পুলিশকে ক্ষমতা দেওয়া থাকলেও পুলিশকে এ ব্যাপারে খুব তৎপর দেখা যায় না। সাধারণত দেখা যায়, নির্বাচিত স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধিরাই মূলত এই অপরাধ প্রতিরোধের যাবতীয় দায়িত্ব পালন করেন। সেখানে ওসি কুতুবউদ্দিনের নিজে উদ্যোগী হয়ে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধের ঘটনাটি অনুপ্রাণিত হওয়ার মতোই।

চলতি বছরেই একটি বিশেষ বিধান রেখে নতুন করে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন পাস হয়েছে। ওই বিশেষ বিধান অনুযায়ী, কোনো বিশেষ প্রেক্ষাপটে অপ্রাপ্তবয়স্কের সর্বোত্তম স্বার্থে, আদালতের নির্দেশে এবং পিতা-মাতা বা অভিভাবকের সম্মতিক্রমে বাল্যবিবাহ হলে তা অপরাধ বলে গণ্য হবে না। এই বিশেষ বিধানের ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। অনেকের মতে, এই বিশেষ বিধানের সুযোগ নিয়ে অনেক বাল্যবিবাহ হচ্ছে এবং হবে।

তবে যেভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধের ঘটনা ঘটছে, তাতে আমরা আশাবাদী যে বিশেষ বিধানের সুযোগ নিয়ে কেউ আর বেশি দিন বাল্যবিবাহ দিতে পারবে না। আমরা চাই শুধু পুলিশ নয়, সব শ্রেণি-পেশার মানুষ বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে এগিয়ে আসবেন।