দিঘি ভরাট করার পাঁয়তারা

জনশ্রুতি আছে, প্রায় ৬০০ বছর আগে বাগেরহাটের স্থানীয় শাসক ও মুসলিম ধর্মপ্রচারক খানজাহান আলী দিঘিটি তৈরি করেছিলেন। এটা এখন মুজগুন্নি এলাকার পানির অন্যতম উৎস। এলাকার নিম্নবিত্ত পরিবারগুলো তাদের গৃহস্থালি কাজে এই দিঘির পানি ব্যবহার করে। খুলনা ফায়ার সার্ভিস আগুন নেভানোর কাজে এই দিঘির পানি ব্যবহার করে।

 দিঘিটি যদি ভরাট করা হয়, তাহলে এলাকার নিম্নবিত্ত পরিবারগুলো কী ধরনের বিপদে পড়বে তা সহজেই অনুমেয়। ফায়ার সার্ভিসই বা পানি পাবে কোথায়? এ ছাড়া এলাকার পানিনিষ্কাশনেও সমস্যা দেখা দেবে। এতে সৃষ্টি হবে জলাবদ্ধতার। আর পরিবেশ ও প্রতিবেশের ভারসাম্য তো নষ্ট হবেই। শুধু কয়েক ব্যক্তির হঠকারী সিদ্ধান্তের কারণে এমন একটি দিঘির বিলুপ্তি কোনো অবস্থাতেই মেনে নেওয়া যায় না। এর আগেও একবার দিঘিটি ভরাটের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু এলাকাবাসীর দাবির মুখে তা ভেস্তে যায়।

বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ (সংশোধন) আইন, ২০১০ অনুযায়ী অপরিহার্য জাতীয় স্বার্থে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেওয়া ছাড়া জলাধার হিসেবে চিহ্নিত জায়গা ভরাট বা অন্য কোনোভাবে এর শ্রেণি পরিবর্তন করা যাবে না। অথচ এ ক্ষেত্রে আইন মানা হচ্ছে না। এটা খুবই দুঃখজনক।

দিঘি ভরাট না করতে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) পক্ষ থেকে লিগ্যাল নোটিশ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে দিঘিটি অপরিবর্তিত রেখে তা সংরক্ষণের দাবি জানানো হয়েছে। আমরা এর জন্য বেলাকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমরা আশা করব, বেলার দাবিতে সাড়া দিয়ে দিঘিটির মালিকানা দাবি করা ব্যক্তিরা এটি ভরাট করার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবেন। স্থানীয় প্রশাসন ও জনগণকেও এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে হবে।