শহীদ নূর হোসেন, বৃদ্ধ মজিবুর রহমান এবং শামসুর রাহমানের কবিতা

কবি আর কবিতার প্রতি ভালোবাসা, অনুপ্রাণিত আকর্ষণ সব সময়েরই সঙ্গী আমার। এক সময়ে, ষাটের দশকের শুরু থেকে উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানের সময়কাল পর্যন্ত কবিতাচর্চায় বেশ নিমগ্ন সময় কেটেছিল। এরপরও কোনো কোনো সময়ে হঠাৎ আলোর ঝলকানির মতো কবিতার রাজ্যে ফিরে গেলেও তা কখনই ষাটের দশকের সে দিনগুলোর মতো উজ্জ্বল হয় না। আর, ১৯৬৪ সালের একুশে ফেব্রুয়ারির কার্জন হলের অনুষ্ঠানে দর্শক-শ্রোতার সামনে কবিতা পাঠের মতো সাহস প্রদর্শনের সুযোগও আসেনি কোনো দিন। তবে কবি আর কবিতার রাজ্যে বিচরণ আজও অব্যাহত রয়েছে।

সেদিন, ২০ জানুয়ারি সকালে, নিজ বাসগৃহের ছোট বারান্দায় হঠাৎ যে অনিন্দ্য কাব্যিক পরিবেশ গড়ে উঠেছিল, তা আগামী দিনগুলোর জন্য এক মধুর স্মৃতি হয়ে বিরাজ করবে। শ্রোতা তিনজন। বৃদ্ধ মজিবুর রহমান, বন্ধু অজয় এবং শৈশব আর কৈশোরের সন্ধিক্ষণের সাশা। অনভ্যস্ত এবং অপরিশীলিত কণ্ঠে পাঠ করছি সাপ্তাহিক একতা থেকে আজকের বাংলাদেশের প্রধান কবি শামসুর রাহমানের সদ্য প্রকাশিত কবিতা ‘বুক তার বাংলাদেশের হৃদয়’। আবৃত্তি নয়, বিলম্বিত তালে ধীরে ধীরে পড়ছি। শ্রোতা তিনজন গভীর মগ্নতায় শুনছেন। কবিতা পাঠ চলছে, কবিতার কথা, ভাষা আর ভাবে বৃদ্ধ মজিবুর রহমানের দুচোখ সজল হয়ে উঠছে। কবিতা পাঠ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রুদ্ধশ্বাস দমন করে, অশ্রুভরা দুচোখ নিয়ে ডুকরে কেঁদে উঠে বৃদ্ধ মজিবুর রহমান বলতে থাকলেন, বারবার বলতে থাকলেন, ‘ধন্য কবি’, ‘ধন্য কবি’। তিনি চোখ মুছছেন দুহাতে, আর বুকফাটা আর্তনাদ চেপে, কান্নাভেজা কণ্ঠে বলছেন, ‘গণতন্ত্র মুক্তি পাক’। গণতন্ত্র যেন প্রতিষ্ঠিত হয়। তিনি বলছেন, আমি দোয়া করছি, ২২-দলের ঐক্য টিকে থাকুক। মানুষের মঙ্গল হোক। সকলের চোখ তখন সজল। অশ্রুধারা রুখতে সকলেরই চলেছে কষ্টপ্রয়াস। পিতা পুত্র হারানোর শোকে বিহ্বল, আর উপস্থিত সকলে গভীরভাবে আলোড়িত, অনুপ্রাণিত। এমন সুন্দর এক মহতী পরিবেশ জীবনে কতবার আসে?

বৃদ্ধ মজিবুর রহমানের সঙ্গে পরিচয়ের ঘটনাটিও বড় বেদনাদায়ক। ২৮ নভেম্বর (’৮৭ সাল) ওয়ারী থেকে বেবি ট্যাক্সিতে মণিপুরীপাড়ায় শিল্পী কামরুল হাসানের বাসা হয়ে বংশালের দিকে রওনা দিয়েছি। বেবি ট্যাক্সি ইন্দিরা রোড হয়ে ফার্মগেটের দিকে যাচ্ছে। এ সময়েই বৃদ্ধ ট্যাক্সিচালক চকিতে পেছনে ফিরে বললেন, ‘আমি আপনাকে চিনি। আপনি পত্রিকার লোক। আর আমি শহীদ নূর হোসেনের বাবা।’ আমি চমকে উঠলাম। বেবি ট্যাক্সিচালক মজিবুর রহমান নানা কথা বলছেন। আমি নির্বাক আর অভিভূত। লজ্জায় কুণ্ঠিত। বেবি ট্যাক্সিচালক মজিবুর রহমান তাঁর সন্তান নূর হোসেনের একটি ফটো চাইলেন, তিনি সেটাকে বাঁধিয়ে রাখতে চান। গন্তব্যস্থল বংশালে নেমে লজ্জিত বিমূঢ়তা কাটিয়ে তাঁকে শ্রদ্ধা জানালাম। ভাবলাম, আমরা শহীদদের কথা বলি, তাঁদের নামে শপথ নিই, কিন্তু তাঁদের সম্পর্কে, তাঁদের পরিবার সম্পর্কে কতটুকু জানি?

সাতাশির ১০ নভেম্বরে বাংলাদেশ সচিবালয়ের সামনের রাস্তায় পুলিশের গুলিতে নিহত সাহসী যুবক শহীদ নূর হোসেনের জনক মজিবুর রহমান। বয়স তাঁর ৬০ বছর। থাকেন বনগ্রামের একঘরের বাসাতে। দীর্ঘ ত্রিশ বছর ধরেই তিনি আছেন এই একই গৃহে। স্ত্রী ছাড়া চার পুত্র আর এক কন্যা নিয়ে তাঁর সংসার। দ্বিতীয় সন্তান নূর হোসেন (২৪) নেই। আছে প্রথম সন্তান আলী হোসেন (২৭) মিনি ট্রাক ড্রাইভার। দেলোয়ার (২২) মিনি বাসের হেলপার। আনোয়ার (১৮) লেদ মেশিনে কাজ শিখছে। একমাত্র মেয়ে শাহানা (১৪) স্কুলে পড়ে অষ্টম শ্রেণিতে।

বৃদ্ধ মজিবুর রহমানের পরিবারের কর্মক্ষম সকল সদস্যই মেহনত করে, উপার্জন করে জীবিকা নির্বাহ করে। বলতে গেলে, বাংলাদেশের লক্ষ-কোটি শ্রমজীবী পরিবারের অন্তর্ভুক্ত সত্যিকার অর্থেই একটি প্রতিনিধিত্বশীল পরিবার-গোষ্ঠী তারা। মজিবুর রহমান সেই কোন যৌবনকালে ভাগ্যান্বেষণে ঢাকায় এসেছিলেন বরিশালের মঠবাড়িয়ার ঝাটিবুনিয়া গ্রাম থেকে। ঢাকা-জীবনের শুরুতে তৎকালীন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ হোস্টেলে মসলা পেষার কাজ করেছেন। পরে সেখানেই পেয়েছেন সিক বয় ডিউটির কাজ। একই হোস্টেলে বাবুর্চির কাজ করেছেন অনেক দিন। সে কাজ থেকে ছাঁটাই হয়ে যাওয়ার পর রিকশা চালিয়েছেন আট বছর। ১৯৬২ সাল থেকে বেবি ট্যাক্সি চালাচ্ছেন। সে সময়ে দৈনিক জমা ছিল ১০ টাকা। একাত্তর সালে বেবি ট্যাক্সির দৈনিক জমা বেড়ে হয়েছিল ১৬ টাকা। ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধের সময় নেমে গিয়ে দাঁড়িয়েছিল ১০ টাকায়। আবার ’৭২ সালেই বেড়ে যায় ২২ টাকায়। এরপর থেকে দৈনিক জমার পরিমাণের ঊর্ধ্বগতি আর থামেনি। ক্রমশ তা লাফিয়ে বেড়ে চলেছে। ’৭৫ সালে ৩৫ টাকা, ’৭৭ সালে ৪৫ টাকা, ’৭৯ সালে ৫৫ টাকা, ’৮২ সালে ৬৫ টাকা হয়েছিল। এখন বৃদ্ধ মজিবুর রহমানকে বেবি ট্যাক্সির মালিককে দৈনিক জমা দিতে হয় ১৩৫ টাকা। ষাট বছরের বৃদ্ধ মজিবুর রহমান এখনো শীত-বর্ষায়, সকল আবহাওয়ায় সারা দিন খাটুনির পর মালিকের জমা ও অন্যান্য খরচ মিটিয়ে হাতে পান ১০০ টাকা বা তার চেয়ে কিছু বেশি। এই আয়ের সঙ্গে বড় সন্তান আলী হোসেন দৈনিক ১০০ টাকা বা তার চেয়ে কিছু বেশি সংসার খরচে সাহায্য করে। শহীদ নূর হোসেন সাহায্য করত দৈনিক ৮০ থেকে ৯০ টাকা। এভাবেই, এ আয় থেকে টানাটানির মধ্য দিয়ে তাদের সংসার চলে যেত। এখন নূর হোসেনের দৈনিক আয় আর আসে না। কোনো দিন তা আর আসবে না। সে জন্য মজিবুর রহমানের কোনো আফসোস নেই। কোনো দুঃখ নেই। কারণ, তাঁর ছেলে নূর হোসেন ‘গণতন্ত্র মুক্তি পাক’...এ দাবিতে শহীদ হয়েছে। সারা দেশের মানুষ তাকে চিনেছে। শহীদের সম্মান দিয়েছে। আর এভাবে তাঁকে, মজিবুর রহমানকেও দেশের মানুষ চিনেছে। সকল মানুষের স্নেহ আর ভালোবাসা তিনি পাচ্ছেন। এর চেয়ে বড় আর কিছু নেই। তিনি দেশের এবং সকল মানুষের মঙ্গল কামনা করেন। সে জন্য তিনি প্রতিদিন আল্লাহর কাছে দোয়া করেন।
দেশ ও দেশের মানুষের জন্য মজিবুর রহমানের এই ভালোবাসা এবং মঙ্গল কামনারও সুদীর্ঘ অতীত আছে। তাঁর এই মানবকল্যাণবোধ গড়ে ওঠার ইতিহাসও বাংলাদেশের দীর্ঘ গণতান্ত্রিক ও স্বাধিকার অর্জনের ইতিহাসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। এ দেশের রাজনৈতিক আন্দোলনের ইতিহাসের ঘটনাবলির সঙ্গে রয়েছে তাঁর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ। সকল আন্দোলনের তিনি প্রত্যক্ষদর্শী। নানা রাজনৈতিক উত্থান-পতনের তিনি একজন সজাগ সাক্ষী। ১৯৫২ সালে যেদিন মজিবুর রহমান তাঁর নিজ গ্রাম ঝাটিবুনিয়া ছেড়ে লঞ্চে ঢাকার সদরঘাটে পৌঁছান, সেদিন ২১ ফেব্রুয়ারি। তখন বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা, ঢাকা নগরকে কালো অন্ধকারে ঢেকে দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ঘাটের মানুষ তাঁকে শহরে যেতে দেয়নি। কারণ, শহরের অবস্থা ভালো ছিল না। মজিবুর রহমান বলেন, সে সময়ে ঢাকার মানুষের মনে যেমন দরদ আর মায়া-মমতা ছিল, এখন তেমন নেই।

’৫২ থেকে ’৫৪ সালের ঢাকার বুকের রাজনৈতিক ঘটনাবলির উত্থান-পতনকে যৌবনের বিস্ময়ভরা চোখে দেখেছেন মজিবুর রহমান। মুসলিম লীগ সরকারের সকল অন্যায়, অত্যাচার আর নির্যাতন তাঁকে বিদ্রোহী করেছে। ’৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনের সময় নবাবপুর রোডে শেরেবাংলা ফজলুল হক, শহীদ সোহরাওয়ার্দী এবং শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিরোধীদলীয় রাজনীতিতে বিশ্বাস স্থাপন করেছেন। আওয়ামী লীগের প্রতি আস্থাশীল হয়েছেন। পল্টন ময়দানে একুশে ফেব্রুয়ারির অনুষ্ঠানে আলতাফ মাহমুদের কণ্ঠে ‘ও বাঙালি, ঢাকা শহর রক্তে ভাসাইলি’ গান শুনে চোখের পানি ঝর ঝর করে পড়েছে তাঁর। কেঁদে আকুল হয়েছেন মজিবুর রহমান।

এ সময়ের পর থেকে মজিবুর রহমান জাতীয় রাজনৈতিক আন্দোলনের এবং আওয়ামী লীগের সকল কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। এভাবে পুরো ষাটের দশকে তিনি রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় ছিলেন। তাঁর খুব দুঃখ, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক বক্তৃতা তিনি শুনতে পারেননি। বেবি ট্যাক্সিতে ভাড়ার বিনিময়ে একটি মৃত রোগীকে বর্মি বাজারে নিয়ে যেতে হয়েছিল। ফিরতে তাঁর রাত ৯টা বেজে যায়।

’৭১-এর ২৭ মার্চের কারফিউ প্রত্যাহার হলে বিক্রমপুর চলে গিয়েছিলেন মজিবুর রহমান। কিন্তু পেটের দায়, সংসারের মায়ায় কদিন পর ঢাকায় ফিরে আসেন। বাসে টিকাটুলিতে নেমে ঢাকা শহরকে তাঁর ‘রাক্ষসের দেশ’ বলে মনে হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসে মজিবুর রহমান এক ভীত-সন্ত্রস্ত পরিস্থিতিতে ঢাকায় বাস করেছেন। বেবি ট্যাক্সি চালিয়েছেন। রাজাকারদের দ্বারা নিগৃহীত হয়েছেন। একবার লালকুঠিতে, আবার সায়েদাবাদে পুলিশ তাঁকে আটক করেছিল।
স্বাধীনতা মজিবুর রহমানের মনে নতুন আশা সৃষ্টি করেছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ওপর গভীর বিশ্বাস ছিল তাঁর। খুশিতে চলছিলেন তিনি। দেশের মঙ্গল হবে। এমন আস্থা তাঁর ছিল। কিন্তু শেখ মুজিবের হত্যাকাণ্ড তাঁকে গভীরভাবে আঘাত করে। তাঁর হত্যার পর আওয়ামী লীগের কেউ প্রতিবাদ করে দাঁড়ায়নি। তাঁর মন ছোট হয়ে যায়।

এ রকম অবস্থায় তিনি স্থির করেন, যাকে ভালো লাগবে, তাকে ভোট দেবেন। জিয়াউর রহমানকে ভালো লেগেছিল। তিনি গ্রামে ঘুরেছেন। সাধারণ মানুষের মধ্যে গেছেন। সে জন্য নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন। কিন্তু তিনিও কিছু করতে পারেননি। জেনারেল এরশাদের নেতৃত্বে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এলে, তিনি পছন্দ করতে পারেননি।

দেশ আর জাতিকে ধ্বংস করে দিচ্ছে তারা। আজকে বাঙালির বুক ফুটো করেছে বাঙালিরাই। সে জন্য বিগত নির্বাচনে সরকারের পক্ষে ভোট দেননি। দেশের বর্তমান রাজনৈতিক আন্দোলন এবং তাঁর ছেলে নূর হোসেনের মহান আত্মদান সম্পর্কে মজিবুর রহমান সজল চোখে, বাষ্পরুদ্ধ কণ্ঠে বলেন, ‘আমি কোনো সাহায্য চাই না। আমি চাই ২২-দলের মধ্যে ঐক্য থাকুক। এর জন্য আমি সব সময়ে দোয়া করি। প্রতিটি দলই আমার দল। আমার পার্টি বলে কোনো কথা নেই। ভাগাভাগি নেই। আমার ছেলে গণতন্ত্রের জন্য রক্ত দিয়েছে, অন্য আরও পিতামাতার ছেলেরাও শহীদ হয়েছে। তারা গণতন্ত্রের জন্য প্রাণ দিয়েছে। গণতন্ত্র আসুক এ দেশে। মঙ্গল হোক মানুষের। এটাই আমার কামনা। এ জন্যই আমি আল্লাহর কাছে দোয়া করি।’ বেবি ট্যাক্সিচালক মজিবুর রহমান ৩৬ বছরকাল ধরে ঢাকায় থেকে বিভিন্ন পেশায় কাজ করে, তিন দশকের রাজনৈতিক ঘটনাবলির উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে তিনি একজন দেশপ্রেমিক মানুষ হিসেবে গড়ে উঠেছেন। তিনি কখনই কারও দুয়ারে, কোনো দলের কাছে সাহায্য নিতে বা কোনো সুবিধার জন্য হাত পাতেননি। এটা তাঁর জন্য এক বড় গর্ব। তাঁর পুত্র নূর হোসেনের মহান আত্মত্যাগ বেবি ট্যাক্সিচালক পিতাকে আরও শক্ত করেছে। পুত্র হারানোর শোকে গভীরভাবে ব্যথিত, কিন্তু আশাবাদ তাঁকে আরও দৃঢ় করেছে। দেশের মঙ্গল চিন্তা তাঁকে অতীতের চেয়ে অনেক বেশি করে ভাবিত করে তুলেছে। এভাবেই বিগত তিন-চার দশকের শত সংগ্রামে পোড়-খাওয়া এক প্রবীণ প্রজন্ম বাংলাদেশের শহরে গ্রামে, শ্রমিক বস্তিতে, খেতমজুরদের আস্তানায় গড়ে উঠেছে। সারা দেশে তারা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছেন। তাঁদেরই সৃষ্ট ভিত্তিভূমিতে এই কয়েক দশকের পতন-অভ্যুদয়বন্ধুর পথে লড়াই-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে নূর হোসেনের মতো সাহসী এবং আত্মত্যাগে উন্মুখ এক নতুন প্রজন্ম সৃষ্টি হয়ে চলেছে। এভাবেই মেহনতি মানুষের সংগ্রাম আর আত্মত্যাগ গভীরভাবে আলোড়িত এবং অনুপ্রাণিত করছে শামসুর রাহমানের মতো আরও অনেক প্রবীণ, নবীন কবি আর চিত্রশিল্পী, সাহিত্যিক-বুদ্ধিজীবী, নাট্য ও কণ্ঠশিল্পী এবং নানা পেশার মানুষকে। এসব ছোট-বড় সকল স্রোতোধারা মিলেমিশে এক উত্তাল তরঙ্গমালা সৃষ্টির আয়োজন চলেছে বাংলাদেশে, প্রকাশ্যে এবং অলক্ষ্যে।
লেখাটি দৈনিক সংবাদে ১৯৮৮ সালের ৩১ জানুয়ারি প্রকাশিত হয়েছিল।

২০১৩ সালের ১০ নভেম্বর প্রথমা প্রকাশন থেকে প্রকাশিত ‘শহীদ নূর হোসেন বই’য়ে সংকলিত। এখানে ‘প্রথম আলো’র ভাষারীতি অনুসরণ করা হয়েছে।