সিটি করপোরেশন নির্বাচন

এতে সন্দেহ সামান্যই যে ক্ষমতাসীন দল তার রাজনৈতিক হিসাব–নিকাশকে প্রাধান্য দিয়েই ঢাকা ও চট্টগ্রামের সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আয়োজন করেছে। এখন বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের উচিত হবে এই নির্বাচনে নিজেদের সম্পৃক্ত করা। এটা তারা তাদের সরকারবিরোধী আন্দোলনের কৌশল হিসেবেও নিতে পারে। যুক্তি হচ্ছে, স্থানীয় সরকারের কোনো নির্বাচন দলীয় সরকারের অধীনেই হওয়ার কথা।
উল্লেখ করা বাহুল্য হবে না যে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির সাধারণ নির্বাচন বয়কট সত্ত্বেও বিএনপি সিটি করপোরেশন ও উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিয়ে ভালো ফল করেছিল। যদিও কয়েকটি শহরের বিএনপি-দলীয় মেয়রদের প্রতি সরকারের বিমাতাসুলভ আচরণের লক্ষণ প্রকাশ পেয়েছে। কিন্তু দেশের বিরাজমান অচলাবস্থা থেকে স্বল্প মেয়াদের জন্য হলেও একটি পরিত্রাণ দিতে পারে সিটি করপোরেশনের নির্বাচন। সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে বনিবনা না হওয়া এবং অব্যাহত নাশকতার কারণে বাংলাদেশ এক ভয়াবহ রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতি জাতীয় নিরাপত্তার জন্যও ঝুঁকিপূর্ণ। আসন্ন নির্বাচন অনুষ্ঠানকে যথেষ্ট উৎসবমুখর করা সম্ভব হলে গণতন্ত্রবিরোধী শক্তি দুর্বল হতে বাধ্য।
অস্থিরতার মধ্যেই তিন সিটি নির্বাচনআমরা আশা করি বিএনপি ও তার জোট এই নির্বাচনকে উপেক্ষা করবে না। বিএনপির পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই ইঙ্গিত মিলেছে যে নির্বাচনের ব্যাপারে বিএনপির নেত্রী দলীয় ফোরামে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন। বিএনপির নেত্রী তাঁর সবশেষ সংবাদ সম্মেলনে সরকারের কাছ থেকে সংকট সমাধানে সাড়া আশা করেছিলেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে ৪৫তম স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপনের আগ্রহও জানিয়েছিলেন। আমরা মনে করি, এই মুহূর্তে ঢাকা ও চট্টগ্রামে সিটি করপোরেশনের নির্বাচন দেওয়া সরকারের দিক থেকে একটি রাজনৈতিক সাড়া হিসেবে দেখার সুযোগ আছে।
এখন সরকারের উচিত হবে নির্বাচনকে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া। বিএনপিকে সভা–সমাবেশ করতে দেওয়ার পাশাপাশি দলের আটক নেতাদের মুক্তি দিয়ে সরকার নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারে।