রাজশাহীতে মিলেমিশে চর দখল

সাগর শেখ আর রুবেল শেখ সরকারি খাসজমিতে নিজেদের জমিদারি গড়ে তুলেছেন—দুই প্রতিপক্ষ দলের রাজনৈতিক বৈরিতা এ ক্ষেত্রে বাদ সাধতে পারেনি। লোকে যে বলে, আওয়ামী লীগ-বিএনপির মধ্যে বৈরিতার কারণে জাতির ভোগান্তির শেষ নেই, এই দুই ভাইয়ের বেলায় তা মিথ্যা হয়ে গেছে।

দেশের আরও অনেক এলাকায় এমন দৃষ্টান্ত মিলবে যে জবরদখল, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসাসহ নানা রকমের অপরাধকর্মে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে চমৎকার বোঝাপড়া কাজ করে। শুধু তা-ই নয়, কী কারণে যেন তাঁদের অপরাধবৃত্তি দমনের ক্ষেত্রে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্তৃপক্ষ বিশেষ তৎপরতা দেখায় না।

রাজশাহীর ওই পদ্মার চরটির মালিকানা রাষ্ট্রের, রাজশাহী জেলা প্রশাসন রাষ্ট্রের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ হিসেবে সেই জমির রক্ষণাবেক্ষণ ও সদ্ব্যবহার করবে, এটাই প্রত্যাশিত। কিন্তু যেভাবে চরটি দখল করে চাষবাসসহ নানা রকমের কর্মকাণ্ড চালানো হচ্ছে, তাতে মনে হয় ওই বিস্তীর্ণ ভূসম্পত্তির কোনো মালিকই নেই। ওই দুই ভাই ছাড়াও এলাকার আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, সৈনিক লীগ, বিএনপি, যুবদলের লোকজনসহ আরও অনেক প্রভাবশালী লোক চরটিতে অবৈধভাবে চাষাবাদ করছেন। সরকারের ভূমি বিভাগের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ৫৩ জন দখলকারীর পরিচয় চিহ্নিত করেছে।

কিন্তু শুধু পরিচয় জানলেই চলবে না। প্রত্যেক দখলকারীকে অবিলম্বে উচ্ছেদ করতে হবে। ভূমি কার্যালয়ের লোকজন মাঠে গিয়ে চাষাবাদকারীদের সতর্ক করে দিচ্ছেন বলে খবর পাওয়া গেছে, কিন্তু সতর্ক করা যথেষ্ট নয়। আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। জেলা প্রশাসনকে চরের সব জমি নিজের নিয়ন্ত্রণে নিতে হবে এবং অবৈধভাবে যাঁরা চরের জমিতে চাষাবাদ করছেন, তাঁদের উচ্ছেদ করতে হবে।