যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক সম্প্রসারণ

যশোর শহরের দড়াটানা মোড় থেকে বেনাপোল স্থলবন্দর পর্যন্ত ৩৮ কিলোমিটার সড়ক সম্প্রসারণের জন্য ২ হাজার ৩০০ গাছ কেটে ফেলা হবে। গত শনিবার যশোরের জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে এবং স্থানীয় সাংসদসহ অন্যান্য পদাধিকারীর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর আগেও সড়ক সম্প্রসারণের প্রয়োজনে গাছ কাটার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিবাদের মুখে বলা হয় যে গাছগুলো অক্ষত রেখেই সড়ক সম্প্রসারণ করা হবে।

আসলে যাঁরা গাছগুলো কাটতে চান, তাঁরা তাঁদের সেই আদি মতলব থেকে সরেননি। এবার তাঁরা বলছেন, গাছ না কেটে সড়কটি সম্প্রসারণ করা সম্ভব নয়। কিন্তু এই গাছগুলো অনেক প্রাচীন, সংখ্যায়ও অনেক। এগুলো কেটে ফেলা উচিত হবে না। কিন্তু এ কথাও সত্য যে সড়কটি সম্প্রসারণের প্রয়োজনীয়তা বাস্তবিক। তাহলে উপায় কী?

সড়কটির দৈর্ঘ্য মাত্র ৩৮ কিলোমিটার, প্রস্থ ২৪ ফুট। দুই পাশ মিলিয়ে প্রস্থে আরও ১০ ফুট বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে বলা হয়েছে। তাহলে উভয় পাশেরই শতবর্ষী গাছগুলো কেটে ফেলতে হবে। কিন্তু তা না করে যদি বিদ্যমান সড়কটিকে একমুখী করে ঠিক তার পাশেই আরেকটি একমুখী সড়ক নির্মাণ করা যেতে পারে। পরস্পর বিপরীতমুখী এই দুটি সড়কের মাঝখানে গাছগুলো থেকে যাবে, বস্তুত সেগুলো নয়নাভিরাম সড়ক বিভাজকের কাজ করবে। নতুন সড়কটিও ২৪ ফুট প্রস্থের হবে। এভাবে দুই লেনের দুটি বিপরীতমুখী সড়ক মিলিয়ে চার লেনের একটি মহাসড়ক হবে, যার মাঝখানে শতবর্ষী গাছগুলো অক্ষত থেকে যাবে। পশ্চিমবঙ্গের পেট্রাপোল থেকে কলকাতা পর্যন্ত সড়কের কিছু কিছু অংশে এ রকম করা হয়েছে।

জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারের পরিপ্রেক্ষিতে অপেক্ষাকৃত সরু সড়ক সম্প্রসারণের প্রয়োজন হয়। পৃথিবীর সব দেশেই এটা করা হয়। তবে সে রকম ক্ষেত্রে পরিবেশ সংরক্ষণের দিকে দৃষ্টি রাখা হয়, উন্নয়ন যেন পরিবেশের পক্ষে বেশি ক্ষতিকর না হয় সে লক্ষ্যে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়। আমরা আশা করব, যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের গাছগুলো অক্ষত রাখা হবে, সড়ক সম্প্রসারণের বিকল্প হিসেবে ওপরে প্রস্তাবিত নতুন একটি সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।