ফয়জুন্নেছা কলেজের দুর্দশা

বৃহস্পতিবার প্রথম আলোয় প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, লাকসাম উপজেলার প্রাচীন এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক, কর্মচারী ও শ্রেণিকক্ষের সংকট রয়েছে। কলেজটিতে সহকারী অধ্যাপকের ১৫টি পদের মধ্যে ৩টি পদ শূন্য। প্রভাষকের ৩৬টি পদের মধ্যে ১০টি পদ শূন্য। এ ছাড়া ল্যাবরেটরিতে প্রদর্শকের ৪টি পদের মধ্যে ৩টি শূন্য। তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীদের ৬টি পদের মধ্যে ১টি এবং চতুর্থ শ্রেণির ১৭টি পদের মধ্যে ৯টি পদ শূন্য। বর্তমানে সমাজকর্ম বিষয়ের কোনো ক্লাস হচ্ছে না। কেননা, এ বিষয়ের একমাত্র সহকারী অধ্যাপকের পদটি শূন্য রয়েছে সাড়ে তিন বছর ধরে এবং একমাত্র প্রভাষক চার মাস ধরে মাতৃত্বকালীন ছুটিতে রয়েছেন। শিক্ষক-সংকটের কারণে ইংরেজি বিভাগের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ক্লাস হয় সপ্তাহে মাত্র দুই দিন। কলেজে আরও চারটি বিষয়ে অনার্স কোর্স খোলার অনুমোদন রয়েছে। শ্রেণিকক্ষের স্বল্পতার কারণে সেগুলো চালু করা যাচ্ছে না। 

এ ছাড়া কলেজের শহীদ মিজান ভবনের জরাজীর্ণ অবস্থা। মিলনায়তনের অবস্থাও ঝুঁকিপূর্ণ। এসব ভবনের বেশির ভাগেরই পলেস্তারা খসে পড়েছে। ডাকাতিয়া নদীপারের দুটি ভবনও ঝুঁকিতে রয়েছে। প্রতিবছর নদীভাঙনের কারণে হুমকির মুখে রয়েছে ভবনগুলো। যেকোনো সময় ভেঙে পড়ে প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে।

চার বছর ধরে ঐতিহ্যবাহী কলেজটির এই দুরবস্থা চলছে, অথচ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোর এ নিয়ে যে খুব এটা মাথাব্যথা নেই, তা তো বোঝাই যাচ্ছে। মাথাব্যথা থাকলে এত দিনে এসব সমস্যার সমাধান হয়ে যেত।

দেশে শিক্ষার মানের সার্বিক অবনতির পেছনের অন্যতম কারণ হচ্ছে শিক্ষকের সংকট। জেনেশুনেও এর বিহিত করার কোনো উদ্যোগ নেই সরকারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। এটা খুবই দুঃখজনক। মানসম্মত শিক্ষার বিস্তার ছাড়া দেশের উন্নতির চিন্তা করাই বাতুলতা। দেশের প্রকৃত উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে শিক্ষার উন্নয়নের বিষয়টিকে জরুরি মানতে হবে।

প্রথম আলোর খবর অনুযায়ী, জনবলের অভাব এবং নতুন ভবন ও স্থাপনা নির্মাণের বিষয়টি জানিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে চলতি মাসে চিঠি পাঠিয়েছে।

আমরা আশা করব, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর নওয়াব ফয়জুন্নেছা কলেজের শিক্ষক-সংকটসহ অন্যান্য সমস্যা সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেবে।