খালেদা জিয়া কি প্রার্থী হতে পারবেন?

খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি
খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি

অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বেগম খালেদা জিয়ার দণ্ড নিয়ে নানা প্রশ্ন। তবে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, তিনি আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন কি না। কারণ, এর ওপর আগামী নির্বাচনে বিএনপির অংশ নেওয়া, না নেওয়া বহুলাংশে নির্ভর করবে। নির্ভর করবে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতির গতিপ্রকৃতিও।

বাংলাদেশ সংবিধানের ৬৬ (২) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে: ‘কোনো ব্যক্তি সংসদের সদস্য নির্বাচিত হইবার এবং সংসদ-সদস্য থাকিবার যোগ্য হইবেন না, যদি... (ঘ) তিনি নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইয়া অন্যূন দুই বৎসরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন এবং তাঁহার মুক্তিলাভের পর পাঁচ বত্সরকাল অতিবাহিত না হইয়া থাকে।’ প্রসঙ্গত, দুর্নীতি নৈতিক স্খলনজনিত ফৌজদারি অপরাধ। পক্ষান্তরে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার যোগ্যতা-অযোগ্যতা একটি দেওয়ানি বিষয়।

খালেদা জিয়ার নির্বাচন করার যোগ্যতা নিরূপণের জন্য প্রয়োজন ‘দোষী সাব্যস্ত হওয়া’ (Conviction) ও ‘দণ্ড স্থগিত’ বা ‘দণ্ডের কার্যকরণ স্থগিতের’ (Sentence) মধ্যে বিভাজন। [ মো. মামুন ওয়ালিদ হাসান বনাম রাষ্ট্র, ক্রিমিনাল মিসিলেনিয়াস কেস ১০০০৯ / ২০০৭) ]। এই বিভাজনের পরিপ্রেক্ষিতে বেগম জিয়ার যোগ্যতা নির্ভর করবে: (১) তাঁর ‘সেনটেন্স’ স্থগিত হয়েছে কি না; (২) তাঁর ‘কনভিকশন’-এর ওপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে কি না; এবং (৩) সর্বোপরি নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের ওপর। প্রসঙ্গত, দণ্ডপ্রাপ্ত অপরাধীর জামিন হলেই কনভিকশন স্থগিত হয়ে যায় না। তবে কনভিকশন স্থগিত হলে দণ্ডও স্থগিত হয়ে যায়। দণ্ডপ্রাপ্তদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার বিষয়টি নিয়ে আমাদের উচ্চ আদালতে একাধিক মামলা হয়েছে, যদিও বিচারের রায় অস্পষ্ট, এমনকি পরস্পরবিরোধী।

দণ্ডিত হওয়ার পর খালেদা জিয়া উচ্চ আদালতে আপিল করার এবং জামিন চাওয়ার সুযোগ পাবেন। চলিত ধারণা হলো, আপিল চলাকালীন তিনি নির্বাচন করতে পারবেন কি না, তা নির্ভর করবে দণ্ড স্থগিত করার ওপর। দণ্ড স্থগিত না হলে যে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার যোগ্যতা অর্জন করা যায় না, তার একটি দৃষ্টান্ত পাওয়া যায় ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন থেকে। ২০১৫ সালের ঢাকা দক্ষিণের মেয়র নির্বাচনে অন্যূন দুই বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত নাসির উদ্দিন আহমেদ মেয়র পদে প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন, যা রিটার্নিং অফিসার বাতিল করে দেন। কারণ, নাসির উদ্দিন হাইকোর্টে আপিল আবেদন করলেও আদালত ‘বিচারিক আদালতের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করেননি’। (মিজানুর রহমান খান, ‘খালেদা নির্বাচনে যেতে পারবেন?’ , প্রথম আলো, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮)।

তবে মাহমুদুল ইসলামের (কনস্টিটিউশনাল ল অব বাংলাদেশ, তৃতীয় সংস্করণ, পৃ.৪৬১) মতে, যদি দুই বছরের অধিক দণ্ডপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান, তাহলে তাঁকে সেই লক্ষ্যে আদালতের কাছে আবেদন করতে এবং তাঁকে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৬১ (ক) ও ৪২৬ ধারার আওতায় তাঁর কনভিকশনের বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ পেতে হবে। কারণ, আপিল হলেও কনভিকশন বহাল থেকে যায় এবং আপিলকারী দণ্ডপ্রাপ্ত অপরাধী হিসেবে গণ্য হন। মাহমুদুল ইসলামের মতে, কনভিকশন ও দণ্ড স্থগিত চাইলেই তা দণ্ডপ্রাপ্ত অপরাধীর তা প্রাপ্য নয়। এ ক্ষেত্রে আদালতকে অপরাধের ভয়াবহতা এবং বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায় নিতে হবে।

সম্প্রতি মো. মামুন ওয়ালিদ হাসান বনাম রাষ্ট্র মামলায় (ক্রিমিনাল মিসিলেনিয়াস কেস ১০০০৯ / ২০০৭) বিচারপতি মো. রেজাউল হক ও বিচারপতি মো. খোরশেদ আলম সরকার রায় দেন যে, হাইকোর্ট বিশেষ বিবেচনায় কনভিকশন স্থগিত করতে পারেন, যা নিম্ন আপিল আদালতের এখতিয়ারবহির্ভূত। এ ক্ষেত্রে দণ্ডপ্রাপ্তকে আবেদন করতে হবে এবং দেখাতে হবে যে কনভিকশন স্থগিত না হলে অবিচার হবে এবং তিনি অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। প্রসঙ্গত, উপরিউক্ত মামলায় আদালত বিশেষ বিবেচনায় বাদীকে তাঁর কনভিকশন স্থগিত করে ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার কামলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ দেন।

তবে খালেদা জিয়া নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন কি না, তা শেষ বিচারে নির্ভর করবে নির্বাচন কমিশনের ওপর। আমাদের উচ্চ আদালতের অতীতের দুটি রায় থেকে এটি সুস্পষ্ট হয়েছে।

দণ্ডপ্রাপ্তদের সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার যোগ্যতার বিষয়টি ১৯৯৬ সালে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বনাম এ কে এম মাইদুল ইসলাম (রিট পিটিশন নং ১৭৩২ / ১৯৯৬) মামলার মাধ্যমে একবার আদালতে উত্থাপিত হয়। সে সময় এরশাদ জনতা টাওয়ার মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে থাকা অবস্থায় দণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করে সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হন। মাইদুল ইসলাম তা চ্যালেঞ্জ করেন। রিটার্নিং কর্মকর্তা এরশাদের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেন, যার বিরুদ্ধে মাইদুল ইসলাম আদালতের আশ্রয় নেন। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ তাঁর রায়ে [এ কে এম মাইদুল ইসলাম বনাম বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন, ৪৮ ডিএলআর (এডি) ১৯৯৬] এরশাদের অযোগ্যতার প্রশ্নটি সুরাহা না করে বিষয়টি রিটার্নিং কর্মকর্তার পক্ষ থেকে ‘নির্বাচনী বিরোধ’ হিসেবে দেখা যুক্তিযুক্ত বলে মত দেন। একই সঙ্গে বিচারকের এখতিয়ারহীনতা (coram non judice) কিংবা আইনগত বিদ্বেষের (Malice in Law) অভিযোগ ছাড়া উচ্চ আদালতের নির্বাচনী বিরোধের ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করা উচিত নয় বলে পর্যবেক্ষণ দেন। উল্লেখ্য, নির্বাচনী বিরোধ মীমাংসার দায়িত্ব নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের, আদালতের নয়।

পরবর্তী সময়ে ২৪ আগস্ট ২০০০ তারিখে হাইকোর্ট এরশাদের দণ্ড বহাল রাখেন এবং ৩০ আগস্ট সংসদ সচিবালয় তাঁর সংসদীয় আসন শূন্য ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এরশাদ প্রজ্ঞাপনের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন। রিট আবেদনে দাবি করা হয় যে নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত অপরাধীর আপিল চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তি হওয়ার আগে তিনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার অযোগ্য নন। মামলার রায়ে [হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বনাম আবদুল মুক্তাদির চৌধুরী ৫৩ ডিএলআর (২০০১) ] বিচারপতি মো. জয়নুল আবেদীন ও বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক সচিবালয়ের প্রজ্ঞাপনটি অবৈধ ঘোষণা করেন। কিন্তু বিচারপতিদ্বয় আদালতে দণ্ডপ্রাপ্ত অপরাধী হিসেবে এরশাদের কখন থেকে অযোগ্যতা শুরু হবে, সে ব্যাপারে দ্বিমত পোষণ করেন। বিচারপতি জয়নুল আবেদীন রায় দেন যে আপিল প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন। পক্ষান্তরে বিচারপতি খায়রুল হকের মতে, দণ্ড ঘোষণার দিন থেকেই দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার অযোগ্য হবেন।

মহীউদ্দীন খান আমলগীর বনাম বাংলাদেশ [৬২ ডিএলআর (এডি) ২০১০] মামলার রায়ও এ ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক। মহীউদ্দীন খান আলমগীর দুর্নীতির দায়ে ২৬ জুলাই ২০০৭ তারিখে দণ্ডিত হন, যার বিরুদ্ধে তিনি হাইকোর্টে ৪ নভেম্বর ২০০৭ তারিখে আপিল করেন। হাইকোর্ট ২২ জানুয়ারি ২০০৯ তারিখে তাঁকে জামিন দেন এবং তাঁর কনভিকশন ও দণ্ড স্থগিত করেন। এরপর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি চাঁদপুর-১ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেন, যা তাঁর দণ্ডের কারণে রিটার্নিং অফিসার ৩ ডিসেম্বর ২০০৮ তারিখে বাতিল করেন। মহীউদ্দীন খান আলমগীর রিটার্নিং অফিসারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করেন, যা নির্বাচন কমিশন ৪ ডিসেম্বর ২০০৮ প্রত্যাখ্যান করে।

কমিশনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মহীউদ্দীন খান আলমগীর হাইকোর্টে রিট করেন (রিট নম্বর ৯৮৬৫ / ২০০৮), যা হাইকোর্ট ১৫ ডিসেম্বর ২০০৮ তারিখে তাত্ক্ষণিকভাবে প্রত্যাখ্যান করে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকেন। এরপর তিনি হাইকোর্টের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল দাখিল করেন এবং চেম্বার জজ মো. জয়নুল আবেদীন হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেন এবং রিটার্নিং অফিসারকে মহীউদ্দীন আলমগীরের মনোনয়নপত্র গ্রহণের নির্দেশ দেন। পরবর্তী সময়ে আপিল বিভাগ ১৫ জুলাই ২০১০ তারিখে মহীউদ্দীন আলমগীরের রিট ‘মেইনটেইনেবল’ বা সমর্থনীয় নয় বলে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছেন, তা বহাল রাখেন। লক্ষণীয় যে আপিল বিভাগ দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির দণ্ড কখন থেকে কার্যকর হবে, তার ওপর কোনোরূপ আলোকপাত করেননি।

এটি সুস্পষ্ট যে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে খালেদা জিয়া একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন কি না, সে বিষয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে। এর একটি বড় কারণ হলো যে নির্বাচন কমিশন ১৯৯৬ সালে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাঁর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করলেও ২০০৮ সালে মহীউদ্দীন আলমগীরের মনোনয়নপত্র বাতিল করে, যদিও আপিল বিভাগের চেম্বার জজ তা বৈধ করে তাঁকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ করে দেন। হাইকোর্টের দুই বিচারপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার যোগ্যতা সম্পর্কে পরস্পরবিরোধী সিদ্ধান্ত দেন। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ দণ্ডপ্রাপ্তদের যোগ্যতার বিষয়টি দুটি মামলার কোনোটিতেই সুরাহা করেননি। তবে উভয় ক্ষেত্রেই আপিল বিভাগ রায় দিয়েছেন যে দণ্ডপ্রাপ্তদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিলে সেই সিদ্ধান্ত এখতিয়ারবহির্ভূত বা বিদ্বেষমূলক না হলে আদালতের তাতে হস্তক্ষেপ করা সমীচীন নয়। আর কমিশনের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠলে তা নির্বাচনের পর নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে সুরাহা হওয়া আবশ্যক। তাই এটি সুস্পষ্ট যে আগামী নির্বাচনে বেগম জিয়া প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন কি না, তা মূলত নির্ভর করবে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের ওপর। তবে হাইকোর্ট তাঁর দণ্ড স্থগিত করলে কমিশনের পক্ষে তাঁকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার অযোগ্য ঘোষণা করা দুরূহ হবে। আর বিশেষ বিবেচনায় দণ্ড স্থগিত করে কোনো ব্যক্তিকে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনের সুযোগ দেওয়া গেলে খালেদা জিয়া সেই সুযোগ পাবেন না কেন? তাই দণ্ডের ওপর হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ নিয়ে বেগম জিয়া একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে না পারার কোনো কারণ দেখা যাচ্ছে না।

প্রসঙ্গত, এ ব্যাপারে আমাদের ও ভারতীয় আদালতের রায়ের মধ্যে ভিন্নতা রয়েছে। এমনকি ভারতীয় আদালতের রায়ের মধ্যেও ভিন্নতা রয়েছে, যা নির্ভর করে দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি সংসদ সদস্য কি না, তার ওপর। দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি সংসদ সদস্য না হলে তিনি দণ্ডপ্রাপ্তির দিন থেকেই সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অযোগ্য হবেন। পক্ষান্তরে তিনি সংসদ সদস্য হলে আপিল প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার যোগ্য থাকবেন।

বদিউল আলম মজুমদার: সম্পাদক, সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন