দুর্যোগ সহনশীল নগর গঠনে নারীর ভূমিকা

১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ডেইলি স্টার ওকেয়ার বাংলাদেশেরযৌথ আয়োজনে ‘দুর্যোগ সহনশীল নগর গঠনে নারীর ভূমিকা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত আলোচকদের বক্তব্য সংক্ষিপ্ত আকারে এই ক্রোড়পত্রে ছাপা হলো।

আলোচনায় সুপারিশ

  • নারীকে শুধু নিষ্ক্রিয় গ্রহীতা হিসেবে না ভেবে চালিকাশক্তি হিসেবে ভাবা জরুরি
  •  প্রতিষ্ঠানগুলোয় নারীর সংখ্যা বাড়ালেই চলবে না, তাঁদের গুণগত বিকাশ ঘটাতে হবে
  •  অবকাঠামোগত উন্নয়ন নয়, অ-অবকাঠামোগত উন্নয়নও প্রয়োজন
  • শহরের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সামাজিক সম্প্রীতি গড়ে তোলা দরকার
  •  দুর্যোগ সহনশীলতাবিষয়ক পরিকল্পনায় আর্থসামাজিক ও সাংস্কৃতিক ঝুঁকিগুলোও বিবেচনায় নেওয়া জরুরি
  • গ্রামীণ ও নাগরিক সহনশীলতার পরম্পরাকে স্বীকার করে নগরের দুর্যোগ সহনশীলতাকে সামগ্রিকভাবে বিবেচনায় নেওয়া প্রয়োজন

আলোচনা

শাহেদুল আনাম খান
শাহেদুল আনাম খান

শাহেদুল আনাম খান
দুর্যোগ সহনশীল নগর গঠনে নারীর ভূমিকা। এমন একটি লিঙ্গ সংবেদনশীল বিষয়ের ওপর আলোচনার আয়োজন করা আনন্দের বিষয়। আমি জানতাম না শহুরে নারীরা জিডিপিতে ৬৫ শতাংশ অবদান রাখেন। অথচ তাঁরাই দুর্যোগের প্রধান শিকার। পরিকল্পনাবিদদের পরিকল্পনার মধ্যে নারীরা গৌণভাবে থাকেন। কিন্তু নারীরা শুধু দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার অংশই নন, বরং দুর্যোগ–পরবর্তী প্রভাব মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন।
আমরা দুর্যোগ প্রতিরোধ করতে পারি না, কিন্তু এর প্রভাব কমিয়ে আনতে পারি। আমার মনে হয়, বাংলাদেশ ইতিমধ্যে এ ক্ষেত্রে উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। কিন্তু তারপরও এই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার মধ্যে কিছু শূন্যতা রয়ে গেছে। শূন্যতাগুলো পূরণ করার উপায় খোঁজা জরুরি। যেগুলো আজকের আলোচনায় উঠে আসবে বলে আশা করছি।

শরমিন্দ নীলোমি৴
শরমিন্দ নীলোমি৴

শরমিন্দ নীলোমি৴
বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় নারী ও পুরুষ  ভিন্নভাবে সক্ষমতা ও বিপদাপন্নতার জায়গায় রয়েছেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা অন্য যেকোনো দুর্যোগে নারীদের বিপদাপন্নতার বিষয়টির দেশীয় ও আন্তর্জাতিক প্রামাণ্য অন্তর্ভুক্তি রয়েছে। যদিও এর মধ্যে কিছু ত্রুটি রয়ে গেছে।
এত দিন আমাদের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার আলোচনার কেন্দ্রে ছিল গ্রামীণ অর্থনীতি, গ্রামীণ জীবনযাত্রা, তার ওপর জলবায়ুর প্রভাব ইত্যাদি। কিন্তু নগরায়ণের প্রক্রিয়ায় নগরের দরিদ্র মানুষ, তাদের জীবনযাত্রা, তাদের অসুবিধা, নগরে থাকার ফলে তাদের বিভিন্ন সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে সুবিধা ও চ্যালেঞ্জগুলো সেভাবে আলোচিত কিংবা প্রামাণ্য অন্তর্ভুক্তি হয়নি।

পলাশ মণ্ডল
পলাশ মণ্ডল

পলাশ মণ্ডল
বলা হয়ে থাকে, দুর্যোগে নারী ও শিশুমৃত্যুর হার পুরুষের তুলনায় ১৪ গুণ বেশি। এভাবে নারীকে শিশুর কাতারে ফেলে দুর্যোগসংক্রান্ত সব বর্ণনায় নারীকে অসহায় হিসেবে বর্ণনা করা হয়। এর মাধ্যমে নারীর সম্ভাবনাকে আড়াল করা হয়। কিন্তু আমরা কখনো চিন্তা করে দেখিনি, কেন নারীমৃত্যুর হার পুরুষের তুলনায় বেশি। দুর্যোগে নারীর তুলনামূলক বেশি মৃত্যুহারের জন্য নারী নিজে নন; বরং সমাজ কর্তৃক চাপিয়ে দেওয়া প্রজননমূলক দায়িত্ব বেশি দায়ী।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় নারী নেতৃত্ব এখনো প্রতিষ্ঠিত নয়। নারীকে নিষ্ক্রিয় গ্রহীতা হিসেবে গণ্য করা হয়। কখনো সক্রিয় কর্মী হিসেবে বিবেচনা করা হয় না। এ িবষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা প্রয়োজন। কেয়ার বাংলাদেশ পুরুষের পাশাপাশি নারীকেও চালিকাশক্তি হিসেবে দেখতে চায়।

মো. মেহেরুল ইসলাম
মো. মেহেরুল ইসলাম

মো. মেহেরুল ইসলাম
নারীরা নেতৃত্ব নিয়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করতে পারেন। বিভিন্ন সমস্যায় অংশগ্রহণ করে, পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারেন। শুধু সাংসারিক বিষয় নয়; বরং নারীরা দুর্যোগ প্রশমনে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হতে পারেন। সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় নারীকে রাখা হয় না। কিন্তু দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় নারীদের পরিকল্পনা গ্রহণ করার সক্ষমতা রয়েছে।
আমরা আশা করছি, পুরুষ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি নারীরা দুর্যোগের ঝুঁকি মোকাবিলার ক্ষেত্রে পরিকল্পনা প্রণয়ন, অংশগ্রহণ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাসযোগ্য, নিরাপদ শহর নিশ্চিতে অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারবেন। এ জন্য প্রয়োজন দুর্যোগ মোকাবিলার সঙ্গে জড়িত সব পক্ষের সহযোগিতা।

ড. মাহবুবা নাসরীন
ড. মাহবুবা নাসরীন

ড. মাহবুবা নাসরীন
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আমরা নারীদের শুধু নাজুক হিসেবে তুলে ধরি। কিন্তু তাঁরা যে দুর্যোগ সহনশীলতার নীরব শক্তি, সে কথা আমরা তুলে ধরি না। ১৯৮৭-৮৮ সালের দিকে এই তত্ত্ব প্রথম বাংলাদেশেই এসেছে। আমার পিএইচডি অভিসন্দর্ভ ছিল এ বিষয়ে।
সেখানে বলা হয়েছিল, নারীকে সহনশীলতার নীরব শক্তি হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে। আবার সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিকভাবে তাঁদের নাজুক পরিস্থিতিও ভুলে গেলে চলবে না। লিঙ্গবৈষম্যমূলক অর্থনীতি ও সংস্কৃতি থাকার ফলে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে নারীরা পিছিয়ে যান। অনেক শক্তি থাকা সত্ত্বেও নারীরা বিকশিত হতে পারেন না।
ঐতিহাসিকভাবে ১৯৮৭, ১৯৮৮ সালের বন্যা, ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়, ১৯৯৮ সালের বন্যা, ২০০৭ সালের সিডর, ২০০৯ সালের আইলাকে আমরা এত দিন পর্যন্ত গ্রামীণ এবং দুর্যোগপূর্ণ এলাকার প্রেক্ষাপটে দেখেছি। কিন্তু ২০২৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী শহরে বসবাস শুরু করলে আমাদের নগরকেন্দ্রিক চিন্তাভাবনাকেও বিস্তৃত করতে হবে।

গওহার নঈম ওয়ারা
গওহার নঈম ওয়ারা

গওহার নঈম ওয়ারা
কেয়ার বাংলাদেশের ‘বিল্ডিং রেজিলিয়েন্স অব দ্য আরবান পুওর’ প্রকল্পটির মতো উদ্যোগ আগেও অনেক সংগঠন নিয়েছে। অ্যাকশনএইড শুরু করেছিল মিরপুর এলাকায়। এখন কেয়ার টঙ্গী এলাকায় করছে। কিন্তু প্রকল্প থেকে বের হয়ে আসার পর কী করা হবে, সেটা নিয়ে সুনির্দিষ্ট কৌশল প্রয়োজন। মিরপুর এলাকার অভিজ্ঞতা এ ক্ষেত্রে ভালো হয়নি। কারণ, স্বেচ্ছাসেবক যাঁরা তৈরি হয়েছেন, তাঁরা পরে কী করবেন নির্দিষ্ট ছিল না। স্থানীয় সরকারকে শুরু থেকে যুক্ত করে প্রকল্প হস্তান্তর করা যেতে পারে।
ঢাকা শহরে ভূমিকম্পের তুলনায় আগুন লাগাই প্রথম দুর্যোগ। তাই আমি এদিকে বেশি গুরুত্ব দেব। ফায়ার ব্রিগেডের সঙ্গে সিভিল ডিফেন্সের একটি অংশ আছে। কিন্তু এই অংশকে দুর্বল করে রাখা হয়েছে। আগুন লাগার পর কী করা হবে, তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ আগুন যাতে না লাগে এবং লাগলে সাধারণ মানুষকেই নেভানোর মতো করে প্রস্তুত করা। সিভিল ডিফেন্সকে তাই কার্যকর করতে হবে।

মোস্তফা কাইউম খান
মোস্তফা কাইউম খান

মোস্তফা কাইউম খান
ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজ—সবারই স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসার সক্ষমতা প্রয়োজন। ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, এ ক্ষেত্রে নারীরাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন। নারীরাই আসলে পরিবারের মূল ভূমিকা পালন করেন। এটাকে বৃহত্তর সমাজের ক্ষেত্রে নিয়ে আসা গেলে অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের নগরকে আরও কার্যকরভাবে সহনশীল করে গড়ে তোলা যাবে।
গত বছর আমি ইন্দোনেশিয়ায় একটি সম্মেলনে যাই। সেখানে অন্যান্য দেশের সঙ্গে তুলনায় দেখতে পেয়েছি, জন্ম থেকেই আমরা আসলে সহনশীল। কারণ, আমাদের দুর্যোগপ্রবণ দেশ। সেখানে অনেকে দুর্যোগ মোকাবিলায় আমাদের ব্যবস্থাগুলোর প্রশংসা করেছেন, আমাদের অভিজ্ঞতাগুলো জানতে চেয়েছেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে, পৃথিবীব্যাপী ‘হান্ড্রেড রেসিলিয়েন্ট সিটিজ’ নামে একটি বড় কর্মসূচি আছে। গত বছর এটার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমরা ঢাকাকে সেখানে না দেখে প্রশ্ন তুললাম। তাদের পক্ষ থেকে বলা হলো, আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে কোনো রকম আগ্রহ প্রকাশ করা হয়নি। দুর্যোগ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য সরকারের তহবিল গঠনের বিষয়টি আবার সেখানে প্রশংসিত হয়েছে। আশা করছি, ভবিষ্যতে হান্ড্রেড রেসিলিয়েন্ট সিটিজের মতো প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হতে আমাদের আরও বেশি তৎপর হতে হবে।

এম খালিদ মাহমুদ
এম খালিদ মাহমুদ

এম খালিদ মাহমুদ

আমাদের দুর্যোগবিষয়ক স্থায়ী আদেশাবলিতে (স্ট্যান্ডিং অর্ডারস অন ডিজাস্টার) প্রথাগতভাবে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে সব সময় বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। শহর তেমন গুরুত্ব পেত না।
বেশ কয়েক মাস আগে দুর্যোগবিষয়ক স্থায়ী আদেশাবলি সংশোধন করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিভিন্ন পর্যায় থেকে উঠে আসা মতামত নিয়ে সেটা চূড়ান্ত করার শেষ পর্যায়ে। সেখানে ওয়ার্ডভিত্তিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাবিষয়ক স্থায়ী আদেশাবলির সঙ্গে যুক্ত কমিটিগুলোর কার্যাবলি ঢেলে সাজানো হচ্ছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগকে আরও ব্যাপকভাবে এগিয়ে আসতে হবে।

দিলরুবা হায়দার
দিলরুবা হায়দার

দিলরুবা হায়দার

বর্তমান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিগুলোতে নারীর অংশগ্রহণ খুব নগণ্য। যেমন পৌরসভা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিতে ৩০-৩২ জন সদস্যের মধ্যে মাত্র ৩–৪ জন নারী থাকেন। নেতৃত্বের জন্য যা যথেষ্ট নয়। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটে নারীদের নমনীয় করে গড়ে তোলা হয়। ফলে তাঁরা কোনো জায়গায় গিয়ে শক্তিশালীভাবে কথা বলতে পারেন না। ৩২ জন সদস্যের মধ্যে মাত্র ৩ জন নারী সদস্য থাকার কারণে নারীরা শক্ত অবস্থান নিয়ে কথা বলতে পারেন না। কমিটিগুলোতে শুধু নারীদের সংখ্যা বাড়ালেই চলবে না, তাঁদের নেতৃত্বগুণেরও বিকাশ ঘটাতে হবে।
|নারীদের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য গৃহীত বিভিন্ন প্রকল্পে শুধু নারীর ক্ষমতায়নকে গুরুত্ব দিলে চলবে না, সঙ্গে সঙ্গে লিঙ্গসমতার বিষয়টিও ভাবতে হবে।

নূরজাহান আক্তার
নূরজাহান আক্তার

নূরজাহান আক্তার
কেয়ার বাংলাদেশ আমাদের এলাকা থেকে যখন কিছু নারী স্বেচ্ছাসেবী সংগ্রহ করে, তখন আমরা খুব উজ্জীবিত হই। প্রশিক্ষণ নেওয়ার কয়েক দিন পর গাজীপুরের টাম্পাকো কারখানায় আগুন লাগে। ঈদুল আজহার দুই দিন আগে হওয়ায় লোকজন তেমন ছিল না। এলাকার স্বেচ্ছাসেবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে যারা ছিল, তাদের নিয়ে সেখানে ছুটে যাই।  আমাদের শিক্ষা সেখানে প্রয়োগ করতে পেরেছি। কাজ করতে গিয়েও অনেক বিষয় শিখেছি। মেয়েরা ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করতে পারেন না, এমন নেতিবাচক ধারণা আমরা ভেঙে দিতে পেরেছি। আমরা বিভিন্ন কলেজ ও স্কুলে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মহড়া করি।
প্রথম দিকে আমরা যখন অগ্নিনির্বাপণকর্মীদের পোশাক পরে বের হতাম, মানুষ নেতিবাচক অনেক কথা বলত। কিন্তু আমাদের তেঁতুলতলায় আগুন লাগার পর সেখানে নির্বাপণ কার্যক্রমে মেয়েদের অংশগ্রহণ দেখে তারা তাদের মানসিকতা পরিবর্তন করে।

আবদুল লতিফ খান
আবদুল লতিফ খান

আবদুল লতিফ খান
সামাজিক ঝুঁকিগুলো বাদ দিয়ে শুধু দুর্যোগের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করলে আমরা একটি সহনশীল নগর গড়ে তুলতে পারব না।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় নারী নেতৃত্ব অত্যন্ত প্রয়োজন। ১৯৭০ সালের দুর্যোগের পর আমরা ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) প্রতিষ্ঠা করি। ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে এসেও নারী ও শিশুমৃত্যুর হার বেশি ছিল। সে সময়ের একটি সমীক্ষায় দেখা যায়, ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচিতে কোনো নারী স্বেচ্ছাসেবী ছিলেন না। বর্তমানে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচিতে এক-তৃতীয়াংশ নারী স্বেচ্ছাসেবী রয়েছেন।
নগরায়ণের প্রসার বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাস্তবতা। আমরা একজন গ্রামীণ নারীর দায়িত্ব, কর্তব্য ও অবস্থান বুঝতে পারি। যাঁর সঙ্গে শহরে একজন দরিদ্র কর্মজীবী মায়ের দায়িত্ব, কর্তব্য ও অবস্থানের পার্থক্য আছে।

শশাঙ্ক সাদী
শশাঙ্ক সাদী

শশাঙ্ক সাদী
সারা পৃথিবীতে বর্তমানে মানবিক কল্যাণের স্থানীয়করণের কথা বলা হচ্ছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় স্থানীয় প্রস্তুতিকে শক্তিশালী করতে হবে।
দুর্যোগ মোকাবিলায় যে প্রকল্পগুলো নেওয়া হয়, তার পরিসর বাড়ানো এবং সফলতা নির্ধারণের মানদণ্ড ঠিক করে মূল্যায়নের ব্যবস্থা করা জরুরি।
শুধু প্রকল্প গ্রহণ করলেই চলবে না, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় গৃহীত প্রকল্পগুলোর সঙ্গে সফলতার মানদণ্ড, যেমন দুর্যোগ নিরসন, সামাজিক নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক প্রভাবকে যুক্ত করতে হবে।
ছোট পরিসরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার প্রকল্প অনেক হয়েছে। গৃহীত প্রকল্পগুলোর প্রসারের ব্যবস্থা সরকারকেই করতে হবে। শিক্ষাব্যবস্থা, স্বাস্থ্যব্যবস্থায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার বিষয়টি মূলধারায় নিয়ে আসতে হবে।

এ কে এম মামুনুর রশীদ
এ কে এম মামুনুর রশীদ

এ কে এম মামুনুর রশীদ
দুর্যোগ সহনশীল নগর গঠন নিয়ে আলোচনার সময় গ্রামকেও যুক্ত করতে হবে। গ্রামীণ ও নাগরিক সহনশীলতার মধ্যে একটি পরম্পরা আছে। এই পরম্পরা ধরে দুর্যোগ সহনশীলতার বিষয়টি ভাবা জরুরি।
নগরের অর্থনীতি মূলত সেবাকেন্দ্রিক। শিল্পায়নও নগরের বৈশিষ্ট্য। কৃষির গুরুত্ব জিডিপিতে কমে আসছে। সহনশীল নগর গঠনের আলোচনায় এই রূপান্তরকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা প্রয়োজন। গ্রাম থেকে মানুষ  শহরে আসছে। এই বিশালসংখ্যক মানুষকে শহর একীভূত করতে পারবে কি না, সেটা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনায় নিতে হবে।
নগরায়ণের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে ব্যক্তিকেন্দ্রিকতা। তাই আজকের আলোচনায় উঠে আসা সম্প্রদায়গত (কমিউনিটি) চিন্তাকে আমি কিছুটা চ্যালেঞ্জ জানাতে চাই। ব্যক্তিকেন্দ্রিকতার কারণে শহরে সম্প্রদায়গত মানসিকতা গড়ে তোলা কঠিন। সহনশীল নগর গঠনে সম্প্রদায়ের তুলনায় সরকারকেই দায়িত্ব নিতে হবে। দুর্যোগ সহনশীল নগর গঠনে নারীর ভূমিকা নিশ্চিত করতে হলে প্রতিষ্ঠানগুলোতে নারী নেতৃত্ব নিশ্চিত করা জরুরি।

পারভীন আক্তার
পারভীন আক্তার

পারভীন আক্তার
আমরা বস্তি এলাকায় থাকি। আমাদের নিয়ে সচরাচরই তেমন কেউ ভাবে না।
আমাদের এলাকায় কেয়ার বাংলাদেশ প্রথম যখন নারী ও শিশুদের দুর্যোগ মোকাবিলা কর্মসূচি নিয়ে এল, তখন পুরুষেরা তেমন গুরুত্ব দেননি। আমরা প্রথম দিকে পুরুষের ভয়ের কারণে অংশগ্রহণ না করলেও পরবর্তীকালে গুরুত্ব বুঝে কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করি। তারা আমাদের আগুন লাগা, ভূমিকম্প ইত্যাদি দুর্যোগের বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিতে থাকে।
পাশাপাশি নারী নেতৃত্ব, যৌন নির্যাতন প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কেও আমাদের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তোলে। আগে আমাদের এলাকায় নারী নেতৃত্ব কিছুটা থাকলেও তাঁদের তেমন গুরুত্ব দেওয়া হতো না। কারণ, তখন আমরা একত্র ছিলাম না। তাই সামান্যসংখ্যক নারীর মতামতকে সহজেই উপেক্ষা করা যেত। এখন কোনো সমস্যার বিচার বসলে আমাদেরও তারা ডাকে। আমাদের মতামতকে গুরুত্ব দেয়।

সুমন আহ্সানুল ইসলাম
সুমন আহ্সানুল ইসলাম

সুমন আহ্সানুল ইসলাম

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে জীবাণুগুলো তাদের বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন করছে। ফলে আমরা স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারি। এ বিষয়গুলো দুর্যোগ সহনশীল নগর গঠন পরিকল্পনার মধ্যে থাকা প্রয়োজন। আমরা নগরের দুর্যোগ বিষয়ে কথা বলার সময় শুধু ভূমিকম্প, আগুন লাগা ইত্যাদি নিয়ে কথা বলি। স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা তেমন বলা হয় না। নগরের প্রেক্ষাপটে নারীদের ঝুঁকির মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তাঁদের চলাফেরা। তাঁদের স্বাধীন চলাফেরা নিশ্চিত করতে হবে। নারী যদি বাসা থেকে বের হয়ে অনেকগুলো ঝুঁকির শিকার হন, তাহলে তিনি বের হবেন না।
বাংলাদেশে উন্নয়নকে শুধু অবকাঠামোর দিক থেকে দেখা হয়। উন্নয়নের একটি বড় অংশ হচ্ছে অ-অবকাঠামোগত। কিন্তু আমাদের সরকারের সিংহভাগ বিনিয়োগ অবকাঠামোগত উন্নয়নে ব্যয় করা হয়। দুর্যোগ সহনশীল নগর গঠনে অ-অবকাঠামোগত উন্নয়নের দিকে নজর দিতে হবে। দুর্যোগ সহনশীল নগর গঠনে সরকারকে প্রধান ভূমিকা পালন করতে হবে। একটি বড় দায়িত্ব বর্তায় করপোরেটদের ওপরও।

মৌসুমী শারমিন
মৌসুমী শারমিন

মৌসুমী শারমিন

কনসার্ন ওয়ার্ল্ড ওয়াইডে পথবাসী, ঝুপড়িবাসী এবং অতিদরিদ্র নারীদের নিয়ে কাজ করার সূত্রে দেখেছি, অতিদরিদ্র নারী এবং শিশুরা প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি সামাজিক ঝুঁকির মধ্যে আছে। ফলে তাদের জীবনযাত্রা উন্নয়ন করা সম্ভব হয় না।
আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে, শহরে বস্তিতে বসবাসরত নারীদের ৬৬ শতাংশ স্বামী কর্তৃক শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের শিকার; বস্তিতে বসবাসরত নারী বস্তিতে বাস না করা নারীদের তুলনায় ৩৫ শতাংশ বেশি সহিংসতার শিকার।
তাঁদের একটি বড় অংশ গৃহ কিংবা গার্মেন্টস শ্রমিক হিসেবে কাজ করার কারণে সন্তানদের অনিরাপত্তা একটি বড় সমস্যা। বস্তিবাসীর নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য বেসরকারি সংস্থাগুলোর পাশাপাশি সরকারের বড় ধরনের পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন।

বিশ্বজিৎ কুমার রায়
বিশ্বজিৎ কুমার রায়

বিশ্বজিৎ কুমার রায়
আমি কেয়ার বাংলাদেশের ‘বিল্ডিং রেজিলিয়েন্স অব দ্য আরবান পুওর’ প্রকল্পটির সঙ্গে জড়িত আছি। আমরা জানি, প্রকল্পের কাজগুলো হারিয়ে যায়।
কিন্তু আমাদের তিন বছরের প্রকল্পটির প্রথম দুই বছরে আমরা চেষ্টা করেছি কার্যক্রমটিকে যাতে স্থায়ী করা যায়। সে জন্য আমরা প্রথমত এলাকার মধ্যে নারী নেতৃত্ব গড়ে তুলেছি। ছয়টি কমিউনিটিভিত্তিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করা হয়েছে। পরবর্তীকালে সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সঙ্গে পুরোপুরিভাবে এই প্রক্রিয়ায় সমন্বয় করা হয়েছে। এরপর সিটি করপোরেশন আমাদের শিখন নিয়ে বিল্ডিং রেজিলিয়েন্স অব দ্য আরবান পুওর প্রকল্পটির বাইরে ১৭টি এলাকায় নারীকে কেন্দ্র করে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করেছে।
আমরা শুধু আরবান কমিউনিটি ভলান্টিয়ারদের তৈরি করিনি। আমরা চেষ্টা করেছি, যেন তাদের অগ্নিনির্বাপণ সেবার সঙ্গে সংযুক্ত করা যায়। আমরা দুটি ওয়ার্ডে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করেছিলাম। পরবর্তীকালে সিটি করপোরেশন আমাদের শিখনকে বিবেচনায় নিয়ে গাজীপুরে ৫৭টি ওয়ার্ডে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করে। সুতরাং বলা যায়, প্রকল্পগুলোর সঙ্গে সরকারের কার্যক্রমকে সমন্বয় করা গেলে তার দীর্ঘমেয়াদি ফল পাওয়া সম্ভব।

নুসরাত রহমান চৌধুরী
নুসরাত রহমান চৌধুরী

নুসরাত রহমান চৌধুরী

নারীদের বিপদাপন্নতার জায়গাগুলো আমাদের চিহ্নিত করতে হবে। তাঁরা যখন মাস শেষে বেতন নিয়ে বাড়িতে যান, তখন ছিনতাইয়ের শিকার হন। গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও সাভার এলাকায় এমন ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এই এলাকাগুলোতে সরকারি হাসপাতাল থাকা সত্ত্বেও অর্থনৈতিক দৈন্যের কারণে নারীরা বিভিন্ন ধরনের খারাপ আচরণের শিকার হন। স্থায়ী বাসিন্দা না হওয়ার কারণে তাঁরা তাঁদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হন।
গার্মেন্টসগুলোতে কারণে-অকারণে বেতন বকেয়া রেখে কর্মী ছাঁটাই করা হয়। ফলে নারীরা বিপদাপন্ন হয়ে পড়েন। দেখা যাচ্ছে, নারী দৈন্যতার কারণে নয়; বরং তার পারিপার্শ্বিকতার কারণে বেশি বিপদাপন্ন। তাই তাঁদের সক্ষম হিসেবে গড়ে তোলার একটি পরিবেশ আমাদের গড়ে তুলতে হবে।

ফারহানা হাফিজ
ফারহানা হাফিজ

ফারহানা হাফিজ

দুই বছর আগে ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে ঢাকায় ভোরবেলার দিকে একটি ভূমিকম্প হয়। আমার ধানমন্ডি এলাকায় বাসা থেকে যাঁরা রাস্তায় বের হয়ে আসেন, তাঁদের অধিকাংশই পুরুষ। বেশির ভাগ নারী তাঁদের পোশাকের কারণে বের হননি। তাঁরা মেক্সি পরে রাস্তায় যাবেন কি না, গেলে লোকজন কী বলবে, সেগুলো বিবেচনা করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমাদের পুরুষ বন্ধুরা অনেকে পোস্ট করেছেন, ভূমিকম্পের মাধ্যমে রাস্তায় নারীদের আসল চেহারা দেখলাম। সচরাচরই তাঁদের মেকআপসহ দেখা যায়।
সুতরাং দেখা যাচ্ছে, বিপদের সময় জীবন রক্ষার কৌশলের দক্ষতা অর্জনের চেয়ে ঝুঁকি মোকাবিলায় নারীর সামনে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে সামাজিক ট্যাবুগুলো।
দুর্যোগ সহনশীল নগর গড়ে তোলার জন্য শুধু দরিদ্র নারীদের গুরুত্ব দিলে চলবে না। নিম্নমধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত নারীদেরও এর মধ্যে নিয়ে এসে সামগ্রিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। গার্মেন্টস খাতের বাইরে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে নারীরা সবচেয়ে বেশি কাজ করছেন। ঘরের বাইরে যাঁরা কাজ করছেন, তাঁদের দুর্যোগকালীন প্রস্তুতি থাকার জন্য সচেতন করতে হবে। পাশাপাশি স্বেচ্ছায় যাঁরা গৃহে থাকছেন, তাঁদের প্রস্তুতির বিষয়টিও জোর দেওয়া প্রয়োজন।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নীতিমালার পাশাপাশি আমাদের একটি জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতিমালা আছে। সেখানে নারীর সম্পৃক্ত হওয়া ও নারী নেতৃত্ব তৈরি করার বিষয়টি স্পষ্টভাবে বলা আছে। কিন্তু দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মধ্যে ভালো সমন্বয় নেই। দুই মন্ত্রণালয়ের মধ্যে নীতিগত পর্যায়ে সমন্বয় গড়ে তোলা প্রয়োজন।

শরমিন্দ নীলোর্মি

সামাজিক ঝুঁকিগুলো বাদ দিয়ে শুধু দুর্যোগ নিয়ে কথা বললে সহনশীল নগর গড়ে তোলা যাবে না। আপদ, দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তন—এ তিনটি বিষয় একসঙ্গে বিবেচনায় নিয়েই দুর্যোগ সহনশীল নগর গড়ে তুলতে হবে। আপদ, দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তন–সংক্রান্ত তথ্যের প্রমাণ অন্তর্ভুক্তি পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কৃষিতে মোট কর্মজীবী নারীর প্রায় ৮০ শতাংশ কাজ করছেন, যাঁদের মধ্যে ৭৫ শতাংশ নারী কোনো বেতন পান না। সুতরাং জিডিপির অঙ্কে উন্নয়নকে বিবেচনা করলে হবে না। নগর অঞ্চলের দুর্যোগ সহনশীলতাকে গ্রামীণ অঞ্চলের পরম্পরা হিসেবে দেখতে হবে।

যাঁরা অংশ নিলেন

মো. মেহেরুল ইসলাম: পরিচালক, কেয়ার বাংলাদেশ

পলাশ মণ্ডল: সমন্বয়কারী, রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড ক্লাইমেট চেঞ্জ

মোস্তফা কাইউম খান: উপদেষ্টা, বাংলাদেশ আরবান ফোরাম

দিলরুবা হায়দার: প্রোগ্রাম স্পেশালিস্ট, ইউএন উইমেন

শশাঙ্ক সাদী: কর্মসূচিপ্রধান, দুর্যোগে জরুরি সহায়তা ও প্রস্তুতি, ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনাল

মৌসুমী শারমিন: জেন্ডার কো-অর্ডিনেটর, কনসার্ন ওয়ার্ল্ড ওয়াইড

নুসরাত রহমান চৌধুরী: সিনিয়র অফিসার, সেভ দ্য চিলড্রেন

নূরজাহান আক্তার : আরবান কমিউনিটি স্বেচ্ছাসেবক

এম খালিদ মাহমুদ: যুগ্ম সচিব ও পরিচালক, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর

ফারহানা হাফিজ: জেন্ডার এবং নারী অধিকার বিশ্লেষক

সুমন আহ্‌সানুল ইসলাম: কান্ট্রি ডিরেক্টর, হিউম্যানিটারিয়ান লিডারশিপ একাডেমি

এ কে এম মামুনুর রশীদ: জলবায়ু পরিবর্তন বিশ্লেষক, ইউএনডিপি

আবদুল লতিফ খান: দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ

গওহার নঈম ওয়ারা: প্রতিনিধি, বাংলাদেশ দুর্যোগ ফোরাম

ড. মাহবুবা নাসরীন: অধ্যাপক ও পরিচালক, ইনস্টিটিউট অব ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

শাহেদুল আনাম খান: সহযোগী সম্পাদক, ডেইলি স্টার

পারভীন আক্তার: কমিউনিটি লিডার

বিশ্বজিৎ কুমার রায়: সিনিয়র টেকনিক্যাল ম্যানেজার, কেয়ার বাংলাদেশ

সঞ্চালক

শরমিন্দ নীলোমি৴: সহযোগী অধ্যাপক, অর্থনীতি িবভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়