আনন্দময় শৈশব চাই

গত ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, প্রথম আলোর আয়োজনে ‘আনন্দময় শৈশব চাই’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত আলোচকদের বক্তব্য সংক্ষিপ্ত আকারে এই ক্রোড়পত্রে ছাপা হলো।

আলোচনায় সুপারিশ
* শহরের খেলার মাঠগুলোকে দখলমুক্ত করতে হবে
* খেলার মাঠে সকল স্তরের শিশুদের খেলার সুযোগ থাকা প্রয়োজন
* দরিদ্র শিশুদের ঝুঁকিপূর্ণ শ্রম থেকে বিরত রেখে শিক্ষা ও খেলাধুলার সুযোগ করে দিতে হবে
* শিশুর খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বাবা-মায়ের সচেতনতা জরুরি
* শিশুদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট আইনগুলোর যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা দরকার
* শিশুদের শিক্ষাকে খেলাধুলার মাধ্যমে আনন্দময় করে তোলা যেতে পারে
* পিছিয়ে পড়া অঞ্চলগুলোর শিশুদের শৈশবকে আনন্দময় করার দিকে নজর দিতে হবে

আলোচনা
আব্দুল কাইয়ুম: বর্তমানে আমাদের শিশুদের শৈশব তেমন আনন্দময় না। অভিভাবকেরা তাদের ওপর লেখাপড়াসহ বিভিন্ন ধরনের চাপ দিয়ে শৈশবকে আনন্দহীন করে তুলছেন। আবার দরিদ্র শিশুদের জীবনে শৈশব আর্থিক অভাবের জন্য কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে। খেলাধুলা করার বয়সে তাদের নানা ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করতে হচ্ছে। শিশুদের শৈশবকে আবার আনন্দময় করে তুলতে আমাদের কী করণীয়, সেই বিষয়গুলো নিয়ে আজকের আলোচনা। এখন আলোচনা করবেন নজরুল ইসলাম।

নজরুল ইসলাম
নজরুল ইসলাম

নজরুল ইসলাম
এখানে যারা আছে, অধিকাংশই মধ্যবিত্ত। কেউ উচ্চমধ্যবিত্ত, কেউ মাঝারি, আবার কেউ নিম্নমধ্যবিত্ত। মধ্যবিত্ত সমাজের কত ভাগ? ঢাকা শহরে ২০ শতাংশ, সারা দেশে হয়তো ৫ শতাংশ। কিন্তু এই মধ্যবিত্ত সমাজের বাইরে বড় অংশ নিম্নমধ্যবিত্ত ও দরিদ্র। তাদের শৈশব কী রকম, সেটা বেশি বিবেচনার বিষয়।

এখন শহরের শিশুরা এক হিসাবে সবচেয়ে বঞ্চিত। তাদের থাকার ঘর নেই। আশ্রয়ও ঠিক নেই। ফুটপাতে থাকে। গ্রামের শিশুদের অবস্থা এত খারাপ নয়। এসব আলোচনায় বেশির ভাগ সময় সব কথা থাকে, কিন্তু অর্থনৈতিক দিকটা থাকে না, অথচ এটাই আসল। বিত্ত না থাকলে সব অর্থহীন। আমরা যদি আনন্দময় শৈশব চাই, তাহলে থাকা-খাওয়া এই দুটি সবার আগে নিশ্চিত হওয়া দরকার। তারপর আসবে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিনোদন। সুতরাং আমি বলব, আনন্দময় শৈশব তখনই সম্ভব হবে, যখন আমাদের অর্থনৈতিক ভিত্তি তৈরি হবে। শহরের শিশুরা ছয় বছর বয়স থেকে কাজ করে বেড়ায়। লেগুনা যতগুলো আছে, প্রতিটিতে হয়তো ১২ বছর কিংবা তার চেয়েও কম বয়সের একটি শিশু কাজ করে।

আবার ওই শিশুর জীবন আমার নাতিদের চেয়ে আনন্দময়। কারণ, তারা রাস্তায় হেসেখেলে বেড়ায়। ওখানে সে স্বাধীন, যে পয়সাটা সে আয় করে চট করে একটা চকলেট কিনে খেয়ে ফেলে অথবা ঘোরাঘুরি করে। তার কোনো ভয়ও নেই। সাঁ করে দৌড়ে রাস্তা পার হয়ে যায়। আমাদের শিশু সেটা পারবে না। আমরা তাকে এমনভাবে তৈরি করি, এমনভাবে তাকে দুর্বল করে রাখি, তাকে ঘর থেকেই বের হতে দিই না।
আমাদের মধ্যবিত্তদের শিশুরা খেলার জায়গা পায় না। এখান থেকে আসি নগর পরিকল্পনায়। বিনোদন, খেলাধুলা করা শিশুদের মৌলিক অধিকার। যেকোনো শহরে সব রকমের ভূমির ব্যবহার পরিকল্পনা করতে হয়। তার মধ্যে একটা হলো উন্মুক্ত জায়গা এবং খেলার মাঠ। এগুলো পরিমিত মাত্রায় থাকতে হবে।

তানজিন ফেরদৌস আলম
তানজিন ফেরদৌস আলম

তানজিন ফেরদৌস আলম
আমরা চাই যেন বাংলাদেশের প্রতিটি শিশু প্রতিদিন অন্তত এক ঘণ্টার জন্য মাঠে গিয়ে খেলার সুযোগ পায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ৫ থেকে ১০ বছর বয়সী প্রতিটি শিশুর জন্য দিনে অন্তত এক ঘণ্টা বাইরে খেলাধুলা করার পরামর্শ দিচ্ছে। এর মাধ্যমে একটি শিশুর মানসিক, দৈহিক ও সামাজিক উন্নতি সাধিত হয়।
ঢাকা শহরের মাত্র ২ শতাংশ শিশু খেলার মাঠে গিয়ে খেলার সুযোগ পায়। ২০ শতাংশ কিশোর ছেলের মধ্যে হতাশার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে এবং ২৯ শতাংশ কিশোরীর মধ্যে হতাশার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। শিশুরা খেলার সুযোগ পাচ্ছে না, বিশেষ করে মেয়েশিশুরা আরও বেশি সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

আমাদের লক্ষ্য হলো শিশুদের শৈশবে খেলাধুলার সুযোগ নিশ্চিত করার মাধ্যমে তাদের অভ্যন্তরের সম্ভাবনাকে জাগ্রত করা। সার্ফ এক্সেল বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে এই লক্ষ্য অর্জনের চেষ্টা করছে।

সুপ্রিয়া মুন্ডা
সুপ্রিয়া মুন্ডা

সুপ্রিয়া মুন্ডা
আমার শৈশব জীবন খুব সুন্দর। খেলাধুলারও অনেক সুযোগ রয়েছে। কিন্তু আমার মতো সবার এমন সুযোগ থাকা উচিত। অনেকেই এ রকম সুযোগ পাচ্ছে না। তারা তাদের বাবা-মায়ের অবহেলার কারণে অনেক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। যাদের বাবা-মা দরিদ্র, তারা খেলার সুযোগ পায় না। ওদের তেমন ভালো পরিবেশ নেই। একটু বড় হলে তাদের বাবা-মা তাদের কাজ করতে বাইরে পাঠিয়ে দেয়। যাদের অনেক ভাই-বোন, সেখানে অর্থনৈতিক কারণে মেয়েদের তাড়াতাড়ি বিয়ে দেওয়া হয়।

আমরা আদিবাসী। সবার সঙ্গে আমাদের মেশার সুযোগ হয় না। অনেক সময় আদিবাসীদের সঙ্গে সমাজের অনেকে মেশে না। আমরা স্কুলে একসঙ্গে পড়ি। আমরা যদি একসঙ্গে খেলাধুলা করতে পারি তাহলে আমাদের আরও মানসিক বিকাশ হবে। খেলাধুলার মধ্য দিয়ে বেশি ঘনিষ্ঠ হওয়া যায়। সবাইকে আরও বেশি বোঝা যায়।

শাহীন আরা বেগম
শাহীন আরা বেগম

শাহীন আরা বেগম
প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে খেলার মাঠ নেই বললেই চলে। কিন্তু কোনো কোনো জায়গায় স্কুলে খেলার মাঠ আছে। সরকারিভাবে প্রাক্-প্রাথমিক শ্রেণির জন্য বিশেষ একটি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাঠ্যক্রম এমনভাবে সাজানো হয়েছে যে বাচ্চারা খেলার মাধ্যমে শিখবে। যেটা আগে প্রাক্-প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রমে ছিল না। এখানে খেলার ছলে, গানের ছলে, নাচের ছলে বাচ্চারা শিখছে। তারা কিছুটা আনন্দ পাচ্ছে।

আমাদের বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের মাধ্যমে বাচ্চারা খেলার প্রতি খুব বেশি আন্তরিক হচ্ছে। একসময় মেয়েদের বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্ট ছিল না। এখন আমরা দেখি মেয়েরা এর প্রতি অনেক উৎসাহিত হচ্ছে। কোনো বিদ্যালয়ে মাঠ না থাকলে পার্শ্ববর্তী মাঠে গিয়ে তারা যেকোনোভাবে আসর আয়োজনের চেষ্টা করে। কলসিন্দুরের মেয়েদের কথা আমরা জানি। সরকার থেকে আগের তুলনায় বেশি সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।

শীপা হাফিজা
শীপা হাফিজা

শীপা হাফিজা
সুন্দর শৈশব শিশুর অধিকার। এটা মানবাধিকারও বটে। সুন্দর শৈশব কেবল বাবা-মা কিংবা পাড়া-প্রতিবেশী তৈরি করবেন না, এটার জন্য রাষ্ট্রেরও দায়িত্ব আছে। আর যখন রাষ্ট্রের ওপর দায়িত্ব বর্তায়, তখন সেটা মানবাধিকারের পর্যায়ে পড়ে।

বাংলাদেশে ১০ থেকে ১১ লাখ পথশিশু রয়েছে। সেভ দ্য চিলড্রেনের একটি সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা যায়, ৭৫ শতাংশ শিশু কখনো ডাক্তারের কাছে যেতে পারে না। ৪০ শতাংশের বেশি শিশুর কোনো বিছানা নেই। এই শিশুদের শৈশব বলতে কিছু নেই। বিদ্যালয়ে মাঠ আছে কি নেই সেটি তাদের শৈশবে কোনো প্রভাব ফেলে না। কারণ, তারা বিদ্যালয়েই যেতে পারছে না।

বস্তিতে যখন আমরা কাজ করেছি, তখন দেখেছি ৫ থেকে ৭ শতাংশ শিশু প্রতিবছর হারিয়ে যায়। কারণ, তাদের মা বাইরে কাজ করেন, সুতরাং তাদের দেখভাল করার কেউ নেই। এই দেশে ৪৪ শতাংশ মেয়ের শিশু অবস্থায় বিয়ে হয়ে যাচ্ছে। এই শিশুরা যখন সন্তান জন্মদান করছে, তখন মায়ের জীবন ঝুঁকিপূর্ণ তো হচ্ছেই, পাশাপাশি বাচ্চাটিও হয় খর্বাকৃতির ও অপুষ্ট। ফলে তাদের ঠিকমতো মেধার বিকাশ হয় না।

শাহীন আনাম
শাহীন আনাম

শাহীন আনাম
বাংলাদেশের শিশুদের মোটা দাগে দুই ভাগে ভাগ করা যায়—মধ্যবিত্ত ও উচ্চমধ্যবিত্ত এবং নিম্নমধ্যবিত্ত ও দরিদ্র। এই বিভিন্ন শ্রেণির শিশুদের চ্যালেঞ্জ, বঞ্চনা, আনন্দ ও দুঃখের জায়গাগুলো পুরোপুরি ভিন্ন।

সবচেয়ে আগে আমাদের নিশ্চিত করতে হবে শিশুদের ন্যূনতম চাহিদা। যারা মধ্যবিত্ত, তাদের শৈশব আনন্দময় না। কারণ, তাদের ওপর পড়ালেখার খুব চাপ। তাদের প্রথম হতে হবে, ‘ও লেভেলে’ দশটা ‘এ’ পেতে হবে, সারা দিন তাদের কম্পিউটারে বসে গুগল করে পুরো পৃথিবী দেখতে হবে, কোথায় কী তারা আরও শিখতে পারে, সারা দিন তাদের কোচিংয়ে যেতে হবে, তৃতীয় শ্রেণির বাচ্চাকে ব্যক্তিগত শিক্ষকের কাছে পড়তে হবে ইত্যাদি ইত্যাদি।

নিম্নমধ্যবিত্ত ও দরিদ্র শিশুদের বঞ্চনার জায়গা ভিন্ন। বাধ্য হয়ে তাদের ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম করতে হয়। আমাদের সমাজকে আরও শিশুবান্ধব হতে হবে। শিশুবান্ধব করতে হলে যে আইনগুলো তাদের নিরাপত্তার জন্য করা হয়েছে, সেই আইনগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।

সাবিনা সুলতানা
সাবিনা সুলতানা

সাবিনা সুলতানা
আনন্দময় শৈশবের জন্য তিনটি বিষয় দরকার; ইতিবাচকভাবে বাবা-মায়ের শিশুদের লালন-পালন, আনন্দময় শিক্ষাক্ষেত্র ও সামাজিক যোগাযোগ। শিশুদের সঙ্গে বাবা-মায়ের সংযোগ খুব গভীর হতে হবে। যেখান থেকে তার আবেগীয় বিষয় পরবর্তী জীবনে কাজে লাগবে। শিশুরা যেন শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের শিকার না হয়, সে বিষয়টা বাবা-মাকে বিচক্ষণতার সঙ্গে খেয়াল করতে হবে। শিশুর শারীরিক বিকাশের জন্য খেলাধুলার পাশাপাশি শিশুকে প্রকৃতির কাছে নিয়ে যেতে হবে। প্রকৃতির বিশালত্বে তার বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ ঘটবে। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে তার মধ্যে সামাজিক আস্থা ও সামাজিক নিরাপত্তাবোধ তৈরি হবে।

শিক্ষাক্ষেত্র আনন্দময় হতে হবে। ফলে শিশুর শারীরিক বিকাশের সঙ্গে মানসিক বিকাশও ঘটবে। কিন্তু আমাদের বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা ভীতিকর হয়ে গেছে। শিক্ষকদের একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে যেন তাঁরা ‘তুমি ভালো, তুমি খারাপ’ এমন তুলনামূলক রায় না দেন।

মোহিত কামাল
মোহিত কামাল

মোহিত কামাল
খেলার মাধ্যমে যে শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ঘটে, এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্যটি বাচ্চার মায়ের মাথায় দিতে হবে। সকালে বাচ্চা ঘুম থেকে উঠে ব্যাগ কাঁধে করে বিদ্যালয়ে যায়, স্কুল থেকে আসার পর কোচিংয়ে যায়, কোচিং থেকে আসার পর সে হুজুরের কাছে বসে, হুজুরের কাছে শেষ করার পর যখন সে খেলতে যাবে, তখন বলা হয়, ‘যেয়ো না, তোমার শিক্ষক আসবেন’। শিক্ষক পড়া শেষ করার পর মা আবার নিয়ে বসবেন। ফলে শিশুরা দৈনন্দিন চাপে থাকে। এই চাপে থাকলে তারা পড়াশোনায় মনোযোগী হবে না, পড়াশোনা আনন্দময় হবে না।

প্রতি ১০০ গ্রাম মস্তিষ্ক টিস্যুতে প্রতি মিনিটে ৫৫ মিলিলিটার রক্তের প্রবাহ দরকার, ৫.৫ মিলিগ্রাম গ্লুকোজ দরকার, ৩.৫ মিলিলিটার অক্সিজেনের প্রবাহ দরকার। তাহলে বাচ্চার মেধার বিকাশ ত্বরান্বিত হবে, সে সৃজনশীলভাবে বিকশিত হবে, বুদ্ধিদীপ্ত আর শাণিত স্মৃতিশক্তির অধিকারী হবে। সুবিধাবঞ্চিতদের কথা বাদ দিলাম, সুবিধাভোগীরাও কি সেটা দিতে পারছি? সুতরাং আমাদের বাচ্চাগুলো খামারের মুরগির মতো হয়ে বড় হয়। তারা প্রতিকূল পরিবেশ মোকাবিলা করতে পারে না।

শিশুর আনন্দময় শৈশব নিশ্চিত করতে হলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো উদ্বেগমুক্ত পারিবারিক পরিবেশ নিশ্চিত করা। কারণ, বাচ্চা মা–বাবার আচরণ দেখে শিখবে। সে ভুল করে শিখবে, সে অনুকরণ করে শিখবে। এই বিষয়গুলো পরিবেশকে কেন্দ্র করেই গড়ে ওঠে। শিশুদের শুধু খেলাধুলা নিশ্চিত করলে হবে না। বাচ্চা কোথায় খেলছে, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। নোংরা পরিবেশের মধ্যে বাচ্চাকে খেলতে দেওয়া যাবে না। পর্যাপ্ত অক্সিজেনের প্রবাহ আছে এমন মনোরম পরিবেশে তাকে খেলতে দিতে হবে। ক্ষতিকর গ্যাসের মধ্যে খেললে বাচ্চার বুদ্ধির ঘাটতি হবে।

কিছুদিন আগে একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ৯৫ শতাংশ বাচ্চার লালার মধ্যে নিকোটিনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। আমাদের ঘরকে মাদকমুক্ত করতে হবে। আমাদের ঘরকে ধূমপানমুক্ত করতে হবে। না হলে বাচ্চার মধ্যে যে উপাদানগুলো যায়, তার সবকিছু বাচ্চার মেধার বিকাশের জন্য ক্ষতিকর।

মাহফুজা খাতুন শিলা
মাহফুজা খাতুন শিলা

মাহফুজা খাতুন শিলা
পড়াশোনার পাশাপাশি একজন অ্যাথলেট হিসেবে সামাজিকতার সঙ্গে টিকে থাকা খুব কঠিন ব্যাপার। একজন মেয়ের একসঙ্গে পড়াশোনা করা, খেলাধুলা করা, চাকরি করা কঠিন। অ্যাথলেট হওয়ার জন্য ভালো কথাও শুনতাম, তবে খারাপ কথাটা একটু বেশি শুনতাম। মেয়ে খেলাধুলা করে, হাফপ্যান্ট পরে, এভাবে দৌড়াদৌড়ি-ছোটাছুটি করে ইত্যাদি। যখন আমি সাঁতারকে পেশা হিসেবে নিলাম, সেটা আরও বেশি ভয়াবহ হলো।

যখন বিকেএসপিতে (বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান) ভর্তি হই, তখন গ্রাম্য লোকজনের কাছে আরও বেশি কথা শুনতে হতো। একটা সময় মা–বাবাাকে বললাম, আমি আর খেলাধুলা করব না। সবাই আমাকে নিয়ে কথা বলে, যা আমার কাছে খুব কষ্টদায়ক লাগে। আমার বাবা-মা আমাকে একটা কথাই বলতেন, ‘তুমি যদি কিছু করতে পারো, তাহলে সবকিছু ঢেকে যাবে। যেহেতু তুমি ঢাকা পর্যন্ত যেতে পেরেছ, আরও ভালো কিছু করতে পারবে।’

খেলাধুলাকে অনেকে এখন পেশা হিসেবে নেয়, অনেক বড় সুযোগ আছে, অনেকে পছন্দও করে। গ্রামে যারা থাকে, তাদের খেলার মাঠের খুব বেশি অভাব নেই, কিন্তু নিরাপত্তার ঘাটতি রয়েছে। আমি আমার বোনকে খেলতে দিতে সাহস পাই না।

মেহেরুন নাহার
মেহেরুন নাহার

মেহেরুন নাহার
পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি শিশুর শৈশব বিপন্ন। সেভ দ্য চিলড্রেনের ২০১৭ সালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা যায়, ৭০০ মিলিয়ন শিশু তাদের শৈশবকে হারিয়ে ফেলেছে। আমরা বলি, শৈশব চুরি হয়ে গেছে। আমরা বড়রা চুরি করেছি। সিরিয়া, আফগানিস্তান, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা শিশুরা এর বড় উদাহরণ।

আমি সরাসরি পাহাড়ে চলে যাচ্ছি। পাহাড়ের কথা ভাবলেই আমরা ভাবি সুন্দর প্রকৃতি, ঝরনা, সবুজ প্রকৃতির মানুষগুলো প্রকৃতির মতো সুন্দর। কিন্তু তাদের জীবনযাপন যদি আমরা দেখি, তাহলে দেখব পাহাড়ের শিশুরাও ভালো নেই। বৈশ্বিক উষ্ণতা, গাছ কাটা ইত্যাদি কারণে পাহাড় বিপন্ন হচ্ছে, প্রকৃতি বিরূপ হচ্ছে। আগে যেমন পাহাড়ি ঝরনাতে মাছ পাওয়া যেত, সেগুলো এখন হারিয়ে যাচ্ছে। ছড়াগুলোর পানি শেষ হয়ে আসছে, নদী শুকিয়ে যাচ্ছে, আগে গাছে যে রকম ফল ধরত, সেই ফলগুলো এখন আর ধরছে না, সেখানে পুষ্টির অভাব হচ্ছে।

পাহাড়ে প্রাথমিক স্কুল আছে, কিন্তু বেশির ভাগ শিক্ষক উপজেলা পর্যায়ে বাস করেন। সপ্তাহে তিন দিন হয়তো তিনি স্কুলে যান। দুর্গম পাহাড়ি পথে তাঁরা হেঁটে যেতে চান না। ফলে আদিবাসী শিশুরা মানসম্মত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আর শিশুশ্রম তো অর্থনৈতিক কারণে আছেই। এই হচ্ছে আমাদের পাহাড়ের শিশুদের এখনকার অবস্থা।

শাবনাজ জাহেরীন
শাবনাজ জাহেরীন

শাবনাজ জাহেরীন
আমাদের ঢাকা শহরের মাঠগুলো এখন সব বাণিজ্যিকীকরণের কবলে। আগে যেমন খেলার মাঠ ছিল, এখন সে রকম নেই। কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রের বাচ্চাদের বেশি খেলাধুলা করা দরকার। কারণ, তাদের মানসিক ঘাটতির কারণে তারা হয়তো একটা অপরাধ করে এসেছে। কিন্তু আমরা গিয়ে দেখলাম সেখানে তারা খেলার সামগ্রীগুলো তালা মেরে রেখেছে। এমনকি মাঠসহ বিভিন্ন অবকাঠামো থাকলেও তাদের খেলতে দেওয়া হয় না। এ কারণে আমরা দেখছি কিশোর-কিশোরীরা অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে যাচ্ছে। উত্তরায় আমরা দেখেছি ‘সেভেন স্টার গ্যাং’, যেখানে শিশু ও কিশোরেরা ভয়াবহ অপরাধে জড়িয়ে যাচ্ছে।

মাঠগুলোকে উদ্ধার করে শিশুদের জন্য উন্মুক্ত করার ব্যবস্থা করতে হবে। ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং যুব উন্নয়নের সঙ্গে যাঁরা জড়িত আছেন, তাঁদের বিষয়টা দেখতে হবে।

শারমিন লাকি
শারমিন লাকি

শারমিন লাকি
সমস্যাগুলো আসলে অনেক গভীর। শিশুদের খেলার মাঠগুলো অনেক ক্ষেত্রে দখল হয়ে য়ায়। আজকাল অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও শিশুরা খেলার সুযোগ পায় না। গরিব শিশুরা তো দূরের কথা, মধ্যবিত্তদেরও খেলার স্থান নেই। শিশুদের মানসিক িবকাশের জন্য খেলাধুলার কোনো িবকল্প নেই। খেলাধুলার সুযোগ না পেলে িশশু–কিশোরদের মাথায় খারাপ চিন্তা আসে। এ জন্য স্বাভাবিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হতে পারে।

এস এম রেজাউল করিম
এস এম রেজাউল করিম

এস এম রেজাউল করিম
এখন আর আমাদের আনন্দময় শৈশব নেই। শহর বলি আর গ্রাম বলি। শহরে পাঁচ কাঠা জমির ওপর ২০টি ফ্ল্যাট উঠিয়ে মানুষ থাকছে। মাঠ দখলমুক্ত করতে কেউ যদি আমাদের কাছে আইনি সহায়তা চায়, আমরা সে ক্ষেত্রে সহযোগিতা করব।

বর্তমানে আনন্দময় শৈশব নেই বলে শিশুরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। এই নির্যাতন বন্ধ করার জন্য আমরা ব্লাস্ট থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। আমরা একটা মামলাও করেছিলাম। সেই মামলায় নির্দেশনা জারি হয়েছে যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেন কেউ শারীরিক নির্যাতনের শিকার না হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পরিপত্র জারি করা হয়েছে। কিন্তু তারপরও শিশুরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর চেয়ে মাদ্রাসার অবস্থা আরও ভয়াবহ।

ইউ এম হাবিবুন নেসা
ইউ এম হাবিবুন নেসা

ইউ এম হাবিবুন নেসা
অপরিকল্পিত নগরায়ণের ফলে গ্রাম ধীরে ধীরে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। আমরা একসময় খরস্রোতা খালে সাঁতার কাটতাম, সেগুলো এখন বিলীন হয়ে যাচ্ছে। হারিয়ে যাওয়া প্রকৃতি ফিরিয়ে আনার জন্য যে আইনগুলো আছে, সেগুলোর দিকে নজর দিতে চাই। শিশু আইন, শিশু একাডেমী আইনগুলো এখন যুগোপযোগী করতে হবে, শিশুবান্ধব করতে হবে। প্রায় ৩৬টি আইন শিশুর স্বার্থসংশ্লিষ্ট কথা বলে, সেগুলোকে বিচ্ছিন্নভাবে না দেখে এক জায়গায় এনে আইনগুলোকে যুগোপযোগী করা প্রয়োজন। যাতে সেগুলোর অপপ্রয়োগ বন্ধ করা যায় এবং যথাযথভাবে প্রয়োগ করা যায়।

সমাজসেবা অধিদপ্তর এখন পরিবার, নারী ও শিশুদের কল্যাণে অনেক কাজ করছে। কিন্তু এগুলোর সমন্বয় জরুরি। শিশুদের নিয়ে কাজ করা প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয় প্রয়োজন।

মুরশীদ আকতার
মুরশীদ আকতার

মুরশীদ আকতার
আনন্দময় শৈশব ও খেলার মাঠ ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এটা শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে খেলাধুলা বড় প্রভাব ফেলে, যা মেয়েশিশুদের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করে, তাদের সমস্যা সমাধানের সক্ষমতার বিকাশ ঘটায়। কিছু সমস্যা আছে, যা হয়তো আমরা এই মুহূর্তে নিয়ন্ত্রণ করতে পারব না। কিন্তু কিছু আছে, যা নিয়ন্ত্রণ করতে পারব। আমাদের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক যে পাঠ্যক্রম রয়েছে, তাতে শারীরিক শিক্ষার বিষয়টা বাধ্যতামূলক। সংগীত, চারু ও কারুকলাও বাধ্যতামূলক। কিন্তু আমরা যে তথাকথিত ভালো বিদ্যালয়গুলো বলি, তার অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটার কোনো অনুশীলন নেই।

স্কুল চলাকালীন প্রতিদিন অন্তত এক ঘণ্টা শিশুদের খেলাধুলার জন্য ছেড়ে দেওয়া উচিত। সারা বিশ্বের পাঠ্যক্রম পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, প্রাক্-প্রাথমিক পাঠ্যক্রমে খেলা ছাড়া আর কিছু নেই। খেলা দিয়েই শিশুর শারীরিক, সামাজিক, আবেগীয়, মানসিক ও যোগাযোগীয় বিকাশ ঘটানো সম্ভব।
মাঠ উদ্ধার, নতুন মাঠ বানানোর মতো বিষয়গুলো দীর্ঘমেয়াদি হলেও এই এতটুকু স্বল্প মেয়াদেই সম্ভব। আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, তিন থেকে পাঁচ বছর বয়সী বাচ্চাদের একাডেমিক কোনো পড়াশোনার প্রয়োজন নেই। সারা বিশ্বে একটি আন্দোলন গড়ে উঠছে, প্রাক্-প্রাথমিক এই সময়ে একাডেমিক শিক্ষা সম্পূর্ণরূপে বাদ দেওয়া যায় কীভাবে। এই কাজটুকু করতে হবে। শিশুদের শিশুর মতো বড় হওয়ার সুযোগ দিতে হবে।

আইরিস ফারিনা
আইরিস ফারিনা

আইরিস ফারিনা
ওয়াইডব্লিউসিএ (ইয়াং উইমেন ক্রিশ্চিয়ান অ্যাসোসিয়েশন) উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গত সপ্তাহে ক্রীড়া সপ্তাহ পালন করা হয়েছে। বিদ্যালয় তখন ছুটি ছিল। আমাদের প্রতিবেশী অধিকাংশ বাচ্চা বিদ্যালয়টিতে পড়ে। কিন্তু তাদের বেশির ভাগই সেদিন যায়নি। যাদের চিনি, জিজ্ঞেস করলাম, তারা যাচ্ছে না কেন। তাদের তো আজকে খেলাধুলার দিন। পঞ্চম শ্রেণির একটি বাচ্চা বলল, সে ঘুমাবে তাই ক্রীড়া সপ্তাহের আয়োজনে যাবে না। এটা যারা সপ্তাহে ছয় দিন চাকরি করেন, তঁাদের কথা হতে পারে। একটি পঞ্চম শ্রেণির শিশুর কথা হতে পারে না। তার আরও আগ্রহী হয়ে বলার কথা, আজকে তাদের ক্রীড়া সপ্তাহ, সে অংশগ্রহণ করবে। অংশগ্রহণ না করতে পারলেও অন্তত ঘুরতে যাবে, দেখতে যাবে। আমাদের কথা বলার তুলনায় কাজ বেশি করতে হবে। ব্যক্তিগতভাবে যার যতটুকু সম্ভব করতে হবে। একটা শিশুকে জায়গা করে দিয়ে বলতে পারি, ‘হ্যাঁ, তুমি আমার এখানেই খেলো।’

মঞ্জুর আহমেদ
মঞ্জুর আহমেদ

মঞ্জুর আহমেদ
আন্তর্জাতিক শিশু অধিকার সনদ রয়েছে। ১৯৮৯ সালে চিলড্রেনস কনভেনশন অন দ্য রাইটস অব দ্য চাইল্ড গ্রহণ করা হয়েছে। বাংলাদেশও সেখানে অঙ্গীকার করেছে ১৯৯০ সালে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সোমালিয়া ও দক্ষিণ সুদান ছাড়া পৃথিবীর ১৯৪টি দেশ এটা গ্রহণ করেছে। যার মধ্যে শিশুর জীবন রক্ষা, টিকে থাকা, তার সব রকম বিকাশ, উন্নয়ন ও সুরক্ষাবিষয়ক ৫৪টি ধারা আছে এবং সেখানে নানা রকম নির্দেশনা দেওয়া আছে। সে অনুসারে আমাদের দেশে আমরা কাজ করার চেষ্টা করছি। শিক্ষাব্যবস্থা এবং তার লক্ষ্যগুলো আমরা এমনভাবে নির্ধারণ করছি, যাতে শিশুর শৈশবকে অপহরণ করা হচ্ছে। শিশুর শৈশবকে ফিরিয়ে আনার জন্য শিক্ষাব্যবস্থাকে নতুনভাবে সাজাতে হবে।

শিক্ষার সুবিধাভোগী শিশুদের অবস্থাও ভালো না। সুবিধাবঞ্চিত, অর্থনৈতিকভাবে অসচ্ছল শিশুদের তো শিক্ষার সুযোগই নেই। তারা নানা রকমের শিশুশ্রমের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। ২০১৩ সালে একটি সমন্বিত শিশু বিকাশ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এটা ধরে সব মন্ত্রণালয়, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, আন্তর্জাতিক সংগঠন, গণমাধ্যম সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

নজরুল ইসলাম: শিশুবিষয়ক চিন্তাভাবনা রাষ্ট্রীয়, সামাজিক ও পারিবারিক সবখানেই থাকা বাঞ্ছনীয়। বাংলাদেশে নির্দিষ্ট মন্ত্রণালয় আছে, অধিদপ্তর আছে, তারা কাজ করছে। পাশাপাশি বেসরকারিভাবে অনেক কিছু হচ্ছে। কিন্তু তারপরও আমাদের ছোট দেশে বিশাল জনসংখ্যার কারণে অনেক সমস্যা রয়ে গেছে। সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করলে সমাধান হবে। তার জন্য আন্তরিকতা থাকতে হবে। শিশুদের জীবন আনন্দময় হোক।

গওহার নঈম ওয়ারা: আমাদের শিশুদের আনন্দময় শৈশব ফিরিয়ে দিতে হলে তাদের খেলাধুলার সুযোগ দিতে হবে। আর খেলাধুলা করতে হলে অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণে উন্মুক্ত খেলার মাঠ প্রয়োজন। প্রথম আলোর পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ।

যাঁরা অংশ নিলেন
নজরুল ইসলাম: সভাপতি, সেন্টার ফর আরবান স্টাডিজ
মঞ্জুর আহমেদ: সহসভাপতি, গণসাক্ষরতা অভিযান, ইমেরিটাস অধ্যাপক, ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব এডুকেশনাল ডেভেলপমেন্ট
শাহীন আরা বেগম: প্রাইমারি শিক্ষা কর্মকর্তা, ঢাকা জেলা
শীপা হাফিজা: নির্বাহী পরিচালক, আইন ও সালিশ কেন্দ্র
শাহীন আনাম: নির্বাহী পরিচালক, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন
সাবিনা সুলতানা: সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার, মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রাম অন ভায়োলেন্স অ্যাগেইনস্ট উইমেন (এমএসপিভিএডব্লিউ), মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়
মোহিত কামাল: অধ্যাপক, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট
শাবনাজ জাহেরীন: বিশেষজ্ঞ, শিশু সুরক্ষা, ইউনিসেফ
তানজিন ফেরদৌস আলম: পরিচালক, হোম কেয়ার, ইউনিলিভার
মেহেরুন নাহার: প্রকল্প পরিচালক, আদিবাসী শিশু শিক্ষা, সেভ দ্য চিলড্রেন
এস এম রেজাউল করিম: পরিচালক, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট)
মুরশীদ আকতার: হেড অব এডুকেশন, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল
ইউ এম হাবিবুন নেসা: সভাপতি, নারীপক্ষ
মাহফুজা খাতুন শিলা: খেলোয়াড়, সাঁতার, (সাউথ এশিয়ান গেমসে দুটি স্বর্ণপদক জয়ী)
শারমিন লাকি: উপস্থাপিকা ও মডেল
আইরিস ফারিনা: সাংবাদিক, ডেইলি স্টার
সুপ্রিয়া মুন্ডা: শিশু শিক্ষার্থী, আদিবাসী, সাঁওতাল
সঞ্চালক
গওহার নঈম ওয়ারা: উপদেষ্টা, প্রধম আলো
আব্দুল কাইয়ুম: সহযোগী সম্পাদক, প্রথম আলো