শিশু অপুষ্টি: পরিস্থিতি ও করণীয়

গত ১১ মার্চ ২০১৮, প্রথম আলোর আয়োজনে ‘শিশু অপুষ্টি: পরিস্থিতি ও করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত আলোচকদের বক্তব্য সংক্ষিপ্ত আকারে এই ক্রোড়পত্রে প্রকাশিত হলো।

আলোচনা

আব্দুল কাইয়ুম: পুষ্টি নিয়ে আমাদের অনেকের মধ্যে ভুল ধারণা আছে। কারণ, অনেকে পেটভরে খাওয়াকেই প্রধান মনে করেন। কিন্তু বিভিন্ন খাবারে বিভিন্ন পুষ্টি আছে। ভাতের পাশাপাশি পরিমাণমতো ডাল, মাছ, মাংস শাকসবজি, ডিম, দুধ, ফলমূল শরীরের জন্য অত্যন্ত জরুরি। এ জন্য পুষ্টিকর খাবার সবার দরকার।পুষ্টি বিষয়ে মানুষের মধ্যে ব্যাপক সচেতনতা প্রয়োজন। এ বিষয়ে এখন আলোচনা করবেন সাজেদুল হাসান।

সাজেদুল হাসান
আমি সূচনা প্রকল্পের সঙ্গে কাজ করছি। সূচনা একটা মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রাম। আমরা সিলেট ও মৌলভীবাজার জেলার ২০টি উপজেলার ১৫৭টি ইউনিয়নে ২ লাখ ৫০ হাজার দরিদ্র পরিবারের সঙ্গে কাজ করছি। ২০১৫ সালে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ২০২২ সালে এটা শেষ হবে। ডিএফআইডি ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন আমাদের এ কাজের অর্থায়ন করছে। আমাদের উদ্যোগের জন্য সিলেট ও মৌলভীবাজারে ব্যাপকভাবে অপুষ্টি দূর হয়েছে। কিন্তু সিলেট অঞ্চলে খর্বাকৃতি শিশুর সংখ্যা অন্যান্য জেলা থেকে বেশি।

সরকারের আটটি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সহযোগিতার ভিত্তিতে আমরা কাজ করব। এ কাজের মধ্য দিয়ে অপুষ্টি দূর করার একটা টেকসই উপায় বের করব। ভবিষ্যতে এ ধারণা প্রয়োগ করে যেখানে অপুষ্ট শিশু থাকবে, তাদের পুষ্টির আওতায় আনা সম্ভব হবে।

সিলেট অঞ্চলে খর্বাকৃতি শিশুর সংখ্যা ৪৯ দশমিক ৬ শতাংশ। দেশে খর্বাকৃতি শিশুর গড় হলো ৩৬ দশমিক ১ শতাংশ। খুলনাতে খর্বাকৃতি শিশুর সংখ্যা হলো ২৮ শতাংশ।

ওয়ার্ল্ড ফিশ, হেলেন কেলার ইন্টারন্যাশনাল, আইডিই, এফআইভিডিবি, িসএনআরএস, আরডিআরএস আমাদের সঙ্গে আছে। আইসিডিডিআরবি গবেষণার মাধ্যমে সহযোগিতা করছে। আরও অনেক প্রতিষ্ঠান বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছে। অপুষ্টি দূর করার জন্য শিক্ষা, পরামর্শ, প্রশিক্ষণ, সচেতনতা সৃষ্টি, আয় বৃদ্ধিকরণের উদ্যোগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সূচনা প্রকল্প কাজ করছে।

তাহমিদ আহমেদ
২০১৩ সালে ল্যানসেট জার্নাল নিউট্রিশন সিরিজ লেখা বের করেছিল। সে জার্নালে পুষ্টির ক্ষেত্রে বিশেষ উৎস ও পুষ্টিনির্ভর কার্যক্রমের বিষয়ে বলা হয়েছিল।

পুষ্টির বিশেষ উৎস হলো ব্রেস্ট ফিডিং, ভিটামিন এ সাপ্লিমেন্টেশন জিংক। এর মাধ্যমে মাত্র ২০ শতাংশ খর্বাকৃতি কমানো যেতে পারে। পুষ্টির নির্দিষ্ট উৎস ও পুষ্টিনির্ভর কার্যক্রমের মধ্যে সমন্বয় করতে পারলে সম্পূর্ণ খর্বাকৃতি দূর করা সম্ভব। সূচনা প্রকল্প সেটা করার চেষ্টা করছে। ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল, পাকিস্তান, সাউথ আফ্রিকা, তানজানিয়া, ব্রাজিল, পেরু এই আটটি দেশের কিছু শিশুর ওপর জন্ম থেকে দুই বছর পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করেছি।

খর্বাকৃতি হওয়ার প্রধান কারণ হিসেবে দেখেছি, জন্মের সময় যে শিশুর ওজন কম, তাদের খর্বাকৃতি হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। দ্বিতীয় প্রধান কারণ হলো, যে মায়ের পুষ্টির অভাব ও উচ্চতা কম, তাঁদের সন্তানের খর্বাকৃতি হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেশি।

বস্তিসহ অস্বাস্থ্যকর এলাকাগুলোর পানি ও পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থা খারাপ। এ জন্য শিশুদের পেটে অ্যান্টারোপ্যথোজেনস নামক একধরনের জীবাণু থাকে। এ জীবাণু সরাসরি খর্বাকৃতিতে ভূমিকা রাখে।

এসব শিশু যে খাবার খাচ্ছে এসব খাবারে প্রোটিনের মাত্রা ও প্রোটিনের মান খুবই কম। খর্বাকৃতি দূর করার জন্য সূচনার মতো আরও অনেক প্রকল্পের  কাজ করা উচিত এবং করছেও।

মো. শাহনেওয়াজ
ন্যাশনাল প্ল্যান অব অ্যাকশন ফর নিউট্রিশন নামে সরকারের ১০ বছর মেয়াদি পুষ্টি কার্যক্রম রয়েছে। এ কার্যক্রমের ব্যয় ধরা হয়েছে ১২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। ১৭টা মন্ত্রণালয় এই কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত।

এই কার্যক্রমের মধ্যে খর্বাকৃতির বিষয়টি বিশেষভাবে গুরুত্ব পেয়েছে। খর্বাকৃতির অন্যতম কারণ হলো অপর্যাপ্ত ব্রেস্ট ফিডিং। খাবারে পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাব। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও দুর্বল পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থা। সরকারের দৃষ্টিভঙ্গিতে এ বিষয়টা এসেছে এবং এটাকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করছে।

সরকার এটাও অনুভব করেছে যে এটা শুধু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একার কাজ না। অন্যদেরও এ কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে হবে। এ জন্য ১৭টা মন্ত্রণালয় এ কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ১২ হাজার ৫০০ কোটি টাকার ব্যবস্থা করবে। এ ক্ষেত্রে প্রস্তুতির পর্বও শেষ হয়েছে।   

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু প্রথম বাংলাদেশ ন্যাশনাল নিউট্রিশন কাউন্সিল গঠন করেছিলেন। বহু বছর এ কার্যক্রম প্রায় বন্ধ ছিল। ১৯৯৭ সালে চালু হয়। বিভিন্ন কারণে আবার বন্ধ হয়ে যায়।

২০১৫ সালের ২২ সেপ্টেম্বর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আবার এটাকে চালু করেন। ২০১৭ সালের ১৩ আগস্ট এ সম্পর্কিত সভা হয়। এ সভায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় তাদের করণীয় সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট বক্তব্য দেয়।

নাজমা শাহীন
সূচনা প্রকল্প সিলেট অঞ্চলে অপুষ্টি ও খর্বাকৃতি কমাতে ভালো উদ্যোগ নিয়েছে। সারা দেশে এমন কার্যক্রম নেওয়া প্রয়োজন।

ইতিমধ্যে আলোচনায় এসেছে খর্বাকৃতির প্রধান কারণ নবজাতকের কম ওজন। মায়ের কম উচ্চতা এবং খাবারে পুষ্টির অভাব। এ বিষয়গুলো সরাসরি মায়ের সঙ্গে জড়িত। তাহলে অপুষ্টি চক্রের মধ্যে শুধু শিশুকে গুরুত্ব দিলে হবে না। পুষ্টি কার্যক্রমের মধ্যে অবশ্যই মাকেও আনতে হবে।

বিশেষ করে কিশোরী মা যাঁরা প্রথম সন্তান জন্ম দিতে যাচ্ছেন। কিশোরী মায়ের যদি পুষ্টির অভাব না থাকে, তিনি যদি সব দিক থেকে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকেন তাহলে তিনি কম ওজনের সন্তান জন্ম দেবেন না। ফলে নবজাতক সুস্থতার সঙ্গে বেড়ে উঠতে পারবে।

পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার খেতে হলে কিছু বিষয় মানতে হবে। খাদ্য সরবরাহপদ্ধতি ঠিক থাকতে হবে। খাদ্যের মান ও পরিবেশ ঠিক থাকতে হবে। ভোক্তাদের খাদ্যগ্রহণ প্রবণতায় পরিবর্তন আনতে হবে এসব ক্ষেত্রে যদি আমরা উন্নতি করতে পারি, তাহলে এসডিজি অর্জনও সম্ভব হবে।

প্রোটিনের মধ্যে এমন ১০টা অ্যামাইনো অ্যাসিড আছে, যা আমাদের শরীর তৈরি করতে পারে না। এটা অবশ্যই খাবারের মাধ্যমে আসতে হবে। এর অভাব হলে শরীরের বৃদ্ধি ঠিকভাবে হবে না। ক্ষয় পূরণ হবে না। মা ও শিশু উভয়ের জন্য এটা গুরুত্বপূর্ণ। শিশুদের জন্য দুধ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দুধের মধ্যে এমন সব উপাদান আছে, যা শিশুর শরীর ঠিক রাখতে কার্যকর ভূমিকা রাখে। পুষ্টি নিয়ে বেশি কাজ হচ্ছে। ভবিষ্যতে এর সুফল আমরা পাব।

ইশতিয়াক মান্নান
বর্তমান সরকার পুষ্টির উন্নয়নের বিষয়টা অনেক গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে প্রধান করে নিউট্রিশন কাউন্সিল করা হয়েছে। ১৭টা মন্ত্রণালয় পুষ্টি উন্নয়নের সঙ্গে যুক্ত আছে।

বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পুষ্টির বিষয়টা পরীক্ষা–নিরীক্ষা করা হয়েছে। পুষ্টি একটা পুরোনো ইস্যু। পুষ্টি উন্নয়নে কী করতে হবে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাই জানি। আমাদের হয়তো একই সঙ্গে ১০টা খাতে বিনিয়োগ করা প্রয়োজন। কিন্তু সম্পদের পরিমাণ সীমিত। এ ক্ষেত্রে বিবেচনা করতে হবে কোথায় বিনিয়োগ করলে সবচেয়ে বেশি সুবিধা পাওয়া যাবে।

সব বিবেচনায় পুষ্টিকে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দিতে হবে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের আচরণ ভিন্ন। ব্রেস্ট ফিডিংয়ের বিষয়ে যতই আলোচনা হোক, টেলিভিশনে বিজ্ঞাপন দেওয়া হোক, এতে ব্রেস্ট ফিডিং বাড়বে না। একজন নতুন মা জানেন না কীভাবে ব্রেস্ট ফিডিং করাতে হয়। নবজাতককে কীভাবে ধরতে হবে,  এমন কিছু বিষয় মাকে শিখিয়ে দিতে হবে।

প্রথম ঘণ্টায় যখন সন্তানকে ঠিকমতো ধরতে পারবেন না তখন তিনি ঠিকভাবে দুধ পান করাতে পারবেন না। নিয়ম মেনে ব্রেস্ট ফিডিং না করালে মা ব্রেস্টে ব্যথা পাবেন। যতই তাঁকে বিজ্ঞাপন দিয়ে বলা হোক না কেন তিনি সন্তানকে ব্রেস্ট ফিডিং করানো থেকে বিরত থাকবেন।

আয় বাড়লেই যে সবাই পুষ্টিকর খাবার খাবে তা-ও না। প্রথম দিকে সবকিছু নিবিড়ভাবে শেখাতে হবে। তারপর নিজ থেকেই সচেতন হবে।

মো. আমিনুজ্জামান তালুকদার
সূচনা একটা বড় প্রকল্প। বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় এ প্রকল্প কার্যকর করা হয়েছে। সূচনা বিভিন্ন প্রকল্পে থেকে অভিজ্ঞতা গ্রহণ করেছে এবং সেটা কাজে লাগাচ্ছে।

দেশে খাদ্যশস্য, শাকসবজি, মাছ ইত্যাদি ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মানে এই না যে আমাদের পুষ্টি বৃদ্ধি পেয়েছে। শুধু খাদ্য খেলেই মা ও শিশুর স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিশ্চিত হয় না। বড় সমস্যা হলো খাদ্যের সঠিক ব্যবহার হচ্ছে না। দেশে অনেক শিশু খর্বাকৃতি। এটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। এটা মোকাবিলা করতে হবে। সঠিক মানের ও সঠিক মাত্রার খাদ্য শিশুর অপুষ্টি দূর করতে পারে। খর্বাকৃতি রোধ করতে পারে।

ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি িরসার্চ ইনস্টিটিউট গবেষণা করে দেখেছে, ৬ বা ৯ মাস পর থেকে শিশু যদি একটা করে ডিম খায়, এটা খর্বাকৃতি কমাতে ভূমিকা রাখে। তাদের আরও গবেষণায় শিশুর খর্বাকৃতি কমানোর উপায় দেখানো হয়েছে। আমাদের কাছে খর্বাকৃতি কমানোর অনেক বিষয়ও আছে। 

রেশমা বেগম
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রতি ৬ হাজার মানুষের জন্য একটা কমিউনিটি ক্লিনিক করেছেন। এর মাধ্যমে আমরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা পেয়ে থাকি। এখানে কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ সহকারী বসেন। তাঁরা শিশু ও কিশোরীদের বড় অসুখ হলে চিকিৎসাসেবা দিতে পারছেন না।

আমরা কিশোরীরা অনেক ক্ষেত্রে প্রয়োজনমতো স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছি না। কিশোরীদের বয়ঃসন্ধির সময় রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়। এ ক্ষেত্রে অনেক সময় প্রয়োজনমতো আয়রন ট্যাবলেট পাই না।

অনেক ইউনিয়ন হেলথ কেয়ার সেন্টার ও কমিউনিটি ক্লিনিক শিশু ও কিশোরীদের জন্য যথেষ্ট উপযোগী না। শিশু ও কিশোরীদের জন্য যে আলাদা ব্যবস্থা থাকা দরকার, তা নেই।

অনেক ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট ও বিশুদ্ধ পানি নেই। এ জন্য শিশু ও কিশোরীরা সঠিক সেবা পাচ্ছে না। সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে দুপুরে খাবার দিচ্ছে। অনেক বিদ্যালয়ে খাবার দেওয়া হয় অাবার অনেক বিদ্যালয়ে এ কর্মসূচি নেই।

বাল্যবিবাহ রোধে প্রশাসন কাজ করলেও অনেক মেয়ের বাল্যবিবাহ হচ্ছে। অনেক শিশু শ্রম দিতে বাধ্য হচ্ছে। এদের কীভাবে বিদ্যালয়মুখী করা যায়, সে জন্য সবাইকে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য অনুরোধ করব।

মামুনুর রশিদ
ক্রমান্বয়ে আমরা সামনের দিকে এগোচ্ছি। ২০১৭ সালের গ্লোবাল রিপোর্টে দেখা যায়, বিশ্বে সাড়ে ১১ কোটি শিশু খর্বাকৃতি। ৮৮ শতাংশ দেশ পুষ্টি ঘাটতির চ্যালেঞ্জে আছে। এ অবস্থায় আমরা ভালোই করছি। ভবিষ্যতে এটা আরও ভালো হবে।

আমাদের আরও অনেক কিছু করতে হবে। এ জন্য কার্যকর পরিকল্পনা করতে হবে। আরও বেশি কৌশলী হতে হবে। তাহলে পুষ্টি ও খর্বাকৃতির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারব।

পুষ্টি নীতিমালায় কী করতে হবে, কীভাবে করতে হবে, সবই উল্লেখ আছে। এখন প্রয়োজন কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ। কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ এবং বাস্তবায়নে সমস্যা আছে। এ সমস্যা দূর করতে পারলে আমরা আরও অগ্রগতি অর্জন করতে পারব।

রেশমা কিছু সমস্যার কথা বলল। এর অর্থ হলো, নীতি ঠিকমতো প্রয়োগ করতে পারছি না। বা নীতি সঠিকভাবে কাজ করছে না। 

শফিকুল ইসলাম
এক হাজার দিনের একটি কর্মসূচি বাংলাদেশ সরকারের আছে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আজও আমরা সেটাকে কার্যকর করতে পারিনি। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গবেষণার আলোকে এক হাজার দিন হলো মায়ের গর্ভের পুরো সময় এবং নবজাতক জন্মের পর দুই বছর পর্যন্ত সময়। এর মধ্যে ছয় মাস এক্সক্লুসিভ ব্রেস্ট ফিডিং। পরবর্তী সময়ে ইমুনাইজেশনসহ অন্যান্য ব্যবস্থা। এক হাজার দিনের এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে পারলে মায়ের স্বাস্থ্য, নিওনেটাল, পোস্টনেটাল যত্ন ও পুষ্টিসহ অনেক বিষয় কাজ হবে।

গবেষণা মতে, শিশুর এক হাজার দিনের কার্যক্রমের ফলে ১০ গুণ রোগপ্রতিরোধক্ষমতা বেড়ে যায়। এরা শিক্ষার ক্ষেত্রে ভালো করে। অন্যদের চেয়ে অনেক বেশি সৃজনশীল হয় এবং ২১ শতাংশ বেশি উপার্জন ক্ষমতা বেড়ে যায়।

এরা যখন পরিবার তৈরি করে, এসব পরিবারও অনেক বেশি সুস্থ-সবল হয়। তাই এখন সময় এসেছে এক হাজার দিনের ওই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করার। সরকারের পুষ্টি ভাতা কার্যক্রম রয়েছে। এ কার্যক্রমের মাধ্যমে মায়েদের পুষ্টি ভাতা দেওয়া হয়। মায়েরা সত্যিকার অর্থে পুষ্টি ভাতা পাচ্ছেন কি না, সেটা মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।

এ ভাতা পেলে মায়েরা পুষ্টির জন্য ব্যয় করেন নাকি অন্য কোনো খাতে ব্যয় করেন, সেটা দেখা উচিত। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ যেসব সংস্থা পুষ্টি বিষয়ে কাজ করছে, সবার মধ্যে একটা সমন্বয় থাকা জরুরি।

এস এম মোস্তাফিজুর রহমান
স্বাধীনতার পর থেকে স্বাস্থ্য পুষ্টিসহ সব ক্ষেত্রে আমরা উন্নতি করছি। কিন্তু উন্নতি হয়তো প্রয়োজনমতো হচ্ছে না। আমরা যেখানে যেতে চাই, সেখানে যেতে হলে আরও অনেক কিছু করতে হবে। আর এ উন্নতির জন্য আমাদের সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা আছে।

ন্যাশনাল প্ল্যান অব অ্যাকশন আছে। বাংলাদেশ নিউট্রিশন কাউন্সিল আছে। বিভিন্ন ধরনের সেক্টর প্রোগ্রাম আছে। আরও অনেক কর্মসূচি রয়েছে। এসব উদ্যোগের জন্য ভবিষ্যতে আমরা পুষ্টি সমস্যা দূর করতে পারব। রাস্তাঘাটে অপুষ্টি শিশু যে এখন খুব বেশি দেখা যায়, তা কিন্তু নয়।

প্রথম থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় মনে করত পুষ্টির কাজটি সম্পূর্ণ তাদের দায়িত্ব। এখন এর সঙ্গে অনেক মন্ত্রণালয় যুক্ত হয়েছে। সবাই সমন্বিতভাবে একসঙ্গে কাজ করবে। একটাই উদ্দেশ্য, পুষ্টির অভাব দূর করা। মানুষের পকেটে পয়সা আছে। আমাদের বাজারগুলোয় পুষ্টিকর খাবারও আছে। সরকারের কার্যকর পরিকল্পনার সঙ্গে মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি হলে পুষ্টির ক্ষেত্রে দ্রুত আরও উন্নতি করতে পারব। এ ক্ষেত্রে নির্বাচিত নেতা-নেত্রীদেরও এগিয়ে আসতে হবে।

গোলটেবিলসহ বিভিন্ন সমাবেশে জননেতাদের পুষ্টির কথা বলতে হবে। এ বিষয়টি সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে। গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার করতে হবে। সবার সহযোগিতা ও সচেতনতার মাধ্যমে আমরা এগিয়ে যাব।

ওয়াসিম আকরাম
পুষ্টির ব্যবস্থার ক্ষেত্রে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের একটা বড় ভূমিকা রয়েছে। তারা পুষ্টির বিষয়টিকে কীভাবে দেখে, এ ব্যাপারে তারা কতটা সচেতন, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। তারা পুষ্টির ক্ষেত্রে কতটুকু করছে বা আদৌ করছে কি না, এখন সময় এসেছে এটা দেখার।

খাদ্যনিরাপত্তা নিয়ে মাঠপর্যায়ে কাজ করি। গর্ভবতী মায়েদের সঙ্গে, তাঁদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলি। অনেক পরিবারের লোকজন গর্ভবতী মায়েদের সম্পর্কে বলেন উনি অসুস্থ।

একজন মায়ের গর্ভে সন্তান এ অবস্থায় পরিবারের লোকজন যদি প্রতিনিয়ত তাঁকে অসুস্থ বলেন, এটা ওই মায়ের মনের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলে। এ প্রভাব তাঁর সন্তানের ওপর পড়ে। এ ক্ষেত্রে আমাদের কাজ করার প্রয়োজন আছে। আমরা অনেক সময় বলে থাকি, অনেক জানা হয়েছে।

অনেক গবেষণা হয়েছে। এখন কাজ করা দরকার। প্রতিনিয়ত জানা এবং গবেষণা, এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া। এর জন্য যথেষ্ট বিনিয়োগের প্রয়োজন আছে।

কিছুদিন আগে কৃষি সম্প্রসারণ অফিসারদের তালিকা দেখছিলাম। সেখানে নারীদের সংখ্যা অত্যন্ত কম। অথচ অধিকাংশ দরিদ্র নারী কৃষিকাজের সঙ্গে জড়িত। এখানে যদি বেশিসংখ্যক নারী কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার থাকতেন, তাহলে দরিদ্র কৃষক নারীরা বেশি সুবিধা পেতেন।

আসফিয়া আজিম
বাংলাদেশে পুষ্টির সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য একটা মুভমেন্ট আছে। একে বলে স্কেলিং আপ নিউট্রিশন। সংক্ষেপে বলে সান। এ মুভমেন্টের সঙ্গে সরকার, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা, ব্যবসায়ী কমিউনিটি এবং নাগরিক সমাজের মানুষ আছে।

পুষ্টির ক্ষেত্রে নাগরিক সমাজের যে অ্যালায়েন্স, সেখানে সচিব হিসেবে আমি কাজ করছি। নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, গণমাধ্যমের প্রতিনিধি, সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধি—সবাই নাগরিক সমাজ অ্যালায়েন্সের সদস্য।

আলোচনায় সচেতনতার কথা এসেছে। আচরণ পরিবর্তনের কথা এসেছে। কিন্তু সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লোকসংখ্যা এত বেশি নেই যে তারা এ কাজগুলো করতে পারবে। এ কাজে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা সহায়তা করতে পারেন।

পুষ্টি উন্নয়নের জন্য একটা ন্যাশনাল প্ল্যান অব অ্যাকশন হয়েছে। আমরা যখন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাই, সরকারের সেখানকার বিভিন্ন বিভাগ যেমন সমাজকল্যাণ, ফিশারিজ, কৃষি তারা জানেই না যে পুষ্টি উন্নয়নের জন্য এমন একটা পরিকল্পনা হয়েছে। এ জন্য এ ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা কী হবে, সেটা তারা বুঝতেও পারছে না।

ফলে এ ক্ষেত্রে তারা কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না। নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা সমাজের িবভিন্ন শ্রেণির মানুষের মধ্যে   সচেতনতা সৃষ্টির ভূমিকা পালন করতে পারেন।

নাওকি মিনামিগুচি
আজ বিভিন্ন ধরনের আলোচনা হয়েছে। পুষ্টি নীতিমালার দিক থেকে কিছু বলতে চাই। এফএওর ২০১৭ সালের এক প্রতিবেদন অনুসারে বাংলাদেশে ১৫ শতাংশ মানুষের ক্ষুধার সমস্যা রয়েছে। তবে বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত এ অবস্থার উন্নতি হচ্ছে।

বাংলাদেশের ফুড প্ল্যানিং মনিটরিং ইউনিটের ২০১৭ সালের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০১০ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে ১৬ বিলিয়ন ইউএস ডলার মোবিলাইজ করেছে খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তার জন্য। এই ১৬ বিলিয়ন ইউএস ডলারের মাত্র ২ শতাংশ পুষ্টি উন্নয়নের জন্য খরচ করা হয়েছে।

পুষ্টির বিষয়ে আজকের আলোচনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সময়োপযোগী। এ মাসেই বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে আসবে। বাংলাদেশের মানুষের জন্য এটি একটি আনন্দের সংবাদ। দেশে বেশি বন্যা হওয়ায় ২০১৭ সালে বাংলাদেশের খাদ্যঘাটতি ছিল। জরুরি ভিত্তিতে পর্যাপ্ত খাদ্য আমদানি সম্ভব হয়নি। বাংলাদেশের  কিছু নীতিমালা অত্যন্ত ভালো।

কিন্তু খাদ্য মন্ত্রণালয়সহ অনেক প্রকল্প বহু বছরের পুরোনো। এগুলো বর্তমান অবস্থার সঙ্গে পুনর্বিন্যাস করা প্রয়োজন। পুষ্টিনির্ভর খাতগুলোতে এখন গুরুত্বের সঙ্গে বিনিয়োগ করতে হবে। সময় এসেছে সামাজিক নিরাপত্তা খাতগুলোকেও পুষ্টিনির্ভর করা।

কৃষকদের কিছুটা শিক্ষিত করা প্রয়োজন। কৃষক ও বাজারের ব্যবস্থার মধ্যে আরও ভালো যোগসূত্র তৈরি করা দরকার। খাদ্যের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা অত্যন্ত জরুরি। একশ্রেণির মানুষের খাদ্যের সংকট আছে। আবার একশ্রেণির মানুষ খাদ্যের অপচয় করছে, এ বিষয়টাও দেখা উচিত। অপুষ্টি দূর করার জন্য সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

বিনয় কুমার বর্মণ
পুষ্টিতে সমৃদ্ধ দেশ গড়তে হলে আমাদের আরও অনেক বিষয়ে উদ্যোগ নিতে হবে। আমাদের খাদ্য উৎপাদন পদ্ধতির ক্ষেত্রে কাজ করতে হবে। খাদ্যের পর্যাপ্ততা নিশ্চিত করতে হবে। কেবল খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলে হবে না। খাদ্য যেন সবার কাছে সমানভাবে পৌঁছায়, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।

দরিদ্র মানুষের যতটুকু সম্পদ আছে, সেটার মাধ্যমেও তাদের পুষ্টিনির্ভর খাদ্য দেওয়া সম্ভব। এখানে প্রয়োজন শুধু পরিকল্পনার।

গ্রামাঞ্চলের অধিকাংশ  দরিদ্র কৃষকের বাড়ির পাশে একটা ডোবা থাকে। একটু জমি থাকে। এই কৃষকদের কিছুটা সহযোগিতা করলে তাঁরা এখানে সারা বছরের মাছ ও শাকসবজি উৎপাদন করতে পারেন। এটাও পুষ্টিনির্ভর খাবারের উৎস হতে পারে। দেশব্যাপী এমন উদ্যোগ নিলে সহজেই আমরা পুষ্টির ক্ষেত্রে অনেকখানি এগিয়ে যেতে পারি।

মোহাম্মদ নাসিম
কিছুদিন আগে সচিবালয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে জাতীয় পুষ্টি কাউন্সিলের বৈঠক করেছিলাম। ওখানে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে একটা প্ল্যান অব অ্যাকশন উপস্থাপন করেছিলাম। ভবিষ্যতে পুষ্টির ক্ষেত্রে আমরা কী করতে চাই, সেটা উপস্থাপন করেছি।

এখানে ১৭টি মন্ত্রণালয় উপস্থিত ছিল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনেক গুরুত্বপূর্ণ মতামত দিয়েছেন। পুষ্টির বিষয়টি তিনি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখেন। তাঁর নির্দেশনামতো আমরা কাজ করছি।

এখন খর্বাকৃতি ও পেট মোটা শিশু তেমন একটা দেখা যায় না। শিশুর জন্মের প্রথম ছয় মাস ব্রেস্ট ফিডিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিশুর অপুষ্টি ও খর্বাকৃতি রোধে এটা ভূমিকা রাখে।

সন্তানের প্রথম সুস্থ থাকার বিষয়টি আসে মায়ের কাছ থেকে। সরকারের একার পক্ষে সব সময় অনেক কিছু করা সম্ভব হয় না। এ জন্য সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। বিশেষ করে মায়েদের সচেতন হতে হবে। পরিবারের লোকজনকে সচেতন হতে হবে।

সাধারণ মানুষের ব্রেস্ট ফিডিংয়ের উপকারিতা বুঝতে হবে। গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচার করা প্রয়োজন। স্বাভাবিক প্রসব কমে যাচ্ছে। বিশেষ করে, ধনী পরিবারের নারীরা সিজার করান। একবার সিজার করলে পরে সন্তান নিতে চাইলেও সিজার করতে হয়।

আজ বাল্যবিবাহের ক্ষেত্রে আমরা সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলেছি। বাল্যবিবাহ মা-সন্তান দুজনের জন্যই অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। সব এনজিও ঠিকভাবে কাজ করছে না। অনেক অফিসনির্ভর এনজিও আছে। তাদের আরও দায়িত্বশীল হতে হবে।

এখন কমিউনিটি ক্লিনিকে অনেক দরিদ্র মানুষ সেবা পাচ্ছে। পৃথিবীর মানুষ এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছে। পুষ্টি শুধু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ নয়। এর সঙ্গে খাদ্য, কৃষি, শিক্ষাসহ অনেক মন্ত্রণালয় জড়িত। সবাইকে সমন্বিতভাবে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

আব্দুল কাইয়ুম: আলোচনায় অপুষ্টি দূর করার সুপারিশ ও দিকনির্দেশনা এসেছে। সরকারি–বেসরকারি পর্যায়ে অনেক উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এগুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করবে বলে আশা করি। প্রথম আলোর পক্ষ থেকে সবাইকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ।

আলোচনায় সুপারিশ

  • পুষ্টির নির্দিষ্ট উৎস ও পুষ্টিসম্পর্কিত কার্যক্রমের মধ্যে সমন্বয় প্রয়োজন
  • খর্বাকৃতি রোধে পর্যাপ্ত ব্রেস্ট ফিডিং, পুষ্টি ও স্বাস্থ্যসম্মত পয়োনিষ্কাশন জরুরি
  • পুষ্টি কার্যক্রমে মা ও িশশুকে সমানভাবে গুরুত্ব দিতে হবে
  • পুষ্টি কার্যক্রমে গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজের আরও বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে হবে
  • অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এখন পুষ্টি খাতে বিনিয়োগ বাড়ানো প্রয়োজন
  • শিশুর অপুষ্টি দূর করতে হলে নিয়মিত দুধ, িডমসহ অন্যান্য পুষ্টিকর খাবার দিতে হবে
  • দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে িশশুদের দুপুরের খাবার দেওয়া দরকার
  •  শিশুর এক হাজার দিনের পুষ্টি কার্যক্রম জরুরি ভিত্তিতে সারা দেশে চালু করা উচিত

যাঁরা অংশ নিলেন

মোহাম্মদ নাসিম: মাননীয় সাংসদ, মন্ত্রী, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়

মো. শাহনেওয়াজ: মহাপরিচালক, বাংলাদেশ ন্যাশনাল নিউট্রিশন কাউন্সিল

ইশতিয়াক মান্নান: ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর, সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশ

সাজেদুল হাসান: চিফ অব পার্টি, সূচনা, সেভ দ্য চিলড্রেন

নাজমা শাহীন: পরিচালক, ইনস্টিটিউট অব নিউট্রিশন অ্যান্ড ফুড সায়েন্স, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

নাওকি মিনামিগুচি: চিফ টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার, ফুড অ্যান্ড অ্যাগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন (এফএও)

এস এম মোস্তাফিজুর রহমান: প্রোগ্রাম ম্যানেজার, জাতীয় পুষ্টিসেবা, জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান

শফিকুল ইসলাম: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা, ডিএফআইডি

ওয়াসিম আকরাম: প্রোগ্রাম ম্যানেজার, লাইভলিহুডস অ্যান্ড রেজিলিয়েন্স, ইউ

তাহমিদ আহমেদ: সিনিয়র ডিরেক্টর, নিউট্রিশন অ্যান্ড ক্লিনিক্যাল সার্ভিসেস, আইসিডিডিআরবি

মো. আমিনুজ্জামান তালুকদার: কান্ট্রি ডিরেক্টর, হেলেন কেলার ইন্টারন্যাশনাল

আসফিয়া আজিম: সেক্রেটারি, সিভিল সোসাইটি অ্যালায়েন্স ফর স্কেলিং আপ নিউট্রিশন

মামুনুর রশিদ: সিনিয়র পলিসি অফিসার, জাতিসংঘ বিশ্বখাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)

বিনয় কুমার বর্মণ: সিনিয়র সায়েনটিস্ট, ওয়ার্ল্ড ফিশ বাংলাদেশ অ্যান্ড সাউথ এশিয়া

রেশমা বেগম: কিশোরী প্রতিনিধি

সঞ্চালক

আব্দুল কাইয়ুম: সহযোগী সম্পাদক, প্রথম আলো