শুভ নববর্ষ

নতুন স্বপ্ন ও নতুন আশা নিয়ে এল একটি নতুন বছর: ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দ। অর্জন-ব্যর্থতা, সুখ-দুঃখ সবকিছু নিয়ে ইতিহাসের গর্ভে চলে গেল ২০১৬। ভুলত্রুটি ও ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে, আরও নতুন নতুন সাফল্যময় অর্জনের প্রয়াসী হওয়ার সংকল্প নিয়ে নতুন বছর শুরু করার এই মুহূর্তে আমরা আমাদের পাঠক, লেখক, শুভানুধ্যায়ী সবাইকে শুভেচ্ছা জানাই। শুভ নববর্ষ!
ফেলে আসা বছরটিতে রাজনীতি ছিল অনেকটাই গতানুগতিক। দুই প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির জাতীয় সম্মেলন হলেও অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রচর্চার ক্ষেত্রে অগ্রগতি ঘটেনি। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির মধ্যে কোনো কার্যকর রাজনৈতিক সম্পর্কও এ বছর সূচিত হয়নি। ইউপি নির্বাচনকেন্দ্রিক হাঙ্গামায় দেড় শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। তবে বছর শেষের দুটি ঘটনা রাজনৈতিক অঙ্গনে ক্ষীণ আলোক রেখার আভাস দিচ্ছে। নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন সম্পন্ন হওয়া এবং নতুন নির্বাচন কমিশন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে রাষ্ট্রপতির আলোচনা শুরু।
অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে, কিন্তু বিনিয়োগ আগের মতোই থেমে আছে। তাই চলমান প্রবৃদ্ধির ধারা কতটা টেকসই হতে পারে, এমন প্রশ্ন বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ তুলেছেন। বছরজুড়েই বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরিসহ ব্যাংকিং খাতের নানা কেলেঙ্কারি আলোচনায় থাকলেও এর হোতাদের চিহ্নিত বা শাস্তির আওতায় আনা যায়নি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির গুরুতর অবনতি ঘটেছে: নারী ও শিশুদের প্রতি নৃশংসতার বেশ কিছু ঘটনায় জাতি স্তম্ভিত হয়েছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন প্রতিহত করতে সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো দুঃখজনক ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।
ধর্মীয় উগ্রপন্থী গোষ্ঠীগুলো কয়েক বছর ধরে যে বিচ্ছিন্নভাবে গুপ্তহত্যা চালিয়ে আসছিল, গত বছর তা অতি ভয়ংকর প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারি রেস্তোরাঁয় হামলার মধ্য দিয়ে। তারপর সরকার জঙ্গিবিরোধী অভিযান জোরদার করলেও জঙ্গি তৎপরতা বন্ধ হয়নি। আমরা আশা করব, সরকার এ ব্যাপারে সতর্ক নজরদারি অব্যাহত রাখার পাশাপাশি জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় সামাজিক আন্দোলন ও অন্যান্য কার্যক্রমে জোর দেবে।
জাতীয় জীবনের মূলধারায় রাজনৈতিক পরিবেশের প্রভাব গভীর। সেই পরিবেশে যে স্থবিরতা বিরাজ করছে, নতুন বছরে তা কাটানোর জন্য সব পক্ষ আন্তরিক হবে বলেই প্রত্যাশা।