সড়ক ছাড়া সেতু

শুক্রবার প্রথম আলোয় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, তুইতাল গ্রামের তুইতাল স্কুলের সামনে মধুরভিটা রাস্তার ওপর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সেতু বা কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্প ২০১৫-১৬-এর অধীনে ২১ লাখ টাকা ব্যয়ে ওই সেতু নির্মাণ করা হয়। মেসার্স ইছামতি ট্রেডার্স নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এটি নির্মাণ করে।

এক মাস আগে সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হলেও দুই পাশের সংযোগ সড়ক সংস্কার করা হয়নি। এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগও নেই। সংযোগ সড়ক সংস্কার না করায় সেতুটি মানুষের কোনো কাজে আসছে না। প্রতিদিনই দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে ১০ গ্রামের মানুষকে। বিশেষ করে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের ভীষণ অসুবিধা হচ্ছে। রাস্তা খারাপ হওয়ার কারণে প্রায়ই তারা নির্ধারিত সময়ে স্কুলে পৌঁছাতে পারে না।

বৃষ্টি হলে তো কথাই নেই। তখন রাস্তা এতটাই কর্দমাক্ত হয়ে পড়ে যে হেঁটে যেতেও অসুবিধা হয়। অসুস্থ ব্যক্তিরাও একই সমস্যার মধ্যে পড়ছেন। এলাকার কৃষকেরা তাঁদের উৎপাদিত পণ্য সেতু দিয়ে নিয়ে যেতে পারছেন না। অনেক পথ ঘুরে তাঁরা পণ্য বাজারে নিয়ে যান। এতে করে তাঁরা প্রতিনিয়ত লোকসানের মুখে পড়ছেন। অথচ এই রাস্তা ব্যবহারের উপযোগী হলে খুব সহজেই তাঁরা পণ্য বাজারে সরবরাহ করতে পারতেন।

সেতু নির্মাণ করা হয় মানুষের চলাচলের সুবিধার জন্য, অথচ এখানে দেখা যাচ্ছে সংযোগ সড়ক সংস্কার না করায় মানুষ উল্টো ভোগান্তিতে পড়েছে। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। তাহলে লাখ লাখ টাকা ব্যয় করে এই সেতু নির্মাণের অর্থ কী, তা যদি মানুষের কাজেই না লাগল।

সংযোগ সড়ক সংস্কারের বিষয়টি উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তার (পিআইও) কার্যালয়ের অধীনে। তাঁর চোখে কি সাধারণ মানুষের এই দুর্ভোগ চোখে পড়ছে না? এটা স্পষ্টতই তাঁর অবহেলা। এ ধরনের অবহেলা ও গাফিলতি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনই–বা কী করছে? তারা সক্রিয় ও দায়িত্বশীল না হলে এ ধরনের সমস্যার সমাধান করা যায় না। ফলে তাদের উদ্যোগী ভূমিকা জরুরি।

উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমান অবশ্য জানিয়েছেন, ওই সেতুর সংযোগ সড়ক করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। আমরা আশা করছি, জনগণের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে বরাদ্দ পাওয়ার ব্যাপারে পিআইও তৎপর হবেন এবং জরুরি ভিত্তিতে সংযোগ সড়কগুলো সংস্কারে উদ্যোগী হবেন।