ত্রিপুরায় মাছ রপ্তানি বন্ধ

গত রোববার থেকে ভারতীয় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ত্রিপুরায় বাংলাদেশের মাছ প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে। ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলার কয়েকটি বাজারের মাছে ফরমালিন পাওয়ার অভিযোগে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রতিদিন কোটি টাকার মাছ রপ্তানির এই বাজার বন্ধ থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সরকার, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বাংলাদেশের মাছ ব্যবসায়ীরা। বিষয়টি দ্রুত সুরাহা হওয়া প্রয়োজন।
ভারতীয় কাস্টমস কর্তৃপক্ষের এই পদক্ষেপের পেছনে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি। আগরতলার বাজারের যে মাছের নমুনায় ফরমালিন পাওয়া গেছে তা বাংলাদেশ থেকে গেছে কি না. তা নিঃসন্দেহে বলা যায় না। রপ্তানিকারকেরা দাবি করেছেন, বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষার পরই মাছ বরফ দিয়ে মোড়কজাত করা হয়। সব ধরনের পরীক্ষার পরই বাংলাদেশের কাস্টমস কর্তৃপক্ষ আগরতলায় মাছ রপ্তানির অনুমতি দেয়। এই মাছ প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে আগরতলায় যায়। আর যে মাছে ফরমালিন পাওয়া গেছে, তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে সকালের বাজার থেকে। তা ছাড়া, বাজারে ৪০টি নমুনার মধ্যে মাত্র ১১টিতে ফরমালিন পাওয়ায় বলা যায় না যে ওই ১১টি নমুনার মাছ বাংলাদেশের। বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সকালে নেওয়া ওই মাছ ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ থেকে গিয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে আখাউড়া স্থলবন্দর ব্যবহারকারী দুই দেশের ব্যবসায়ী, কাস্টমস কর্তৃপক্ষের মধ্যে জরুরি যোগাযোগ হওয়া প্রয়োজন। কূটনৈতিকভাবেও বাংলাদেশের এ নিয়ে উদ্যোগ থাকতে হবে। এর আগে পাট ও পাটপণ্যে ভারত একতরফাভাবে অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্ক আরোপের পদক্ষেপ নেয়। এ ধরনের প্রতিটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বাণিজ্য ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচিত নিজেদের দিক থেকে যুক্তি–প্রমাণে পরিষ্কার থাকা।
প্রতিদিন কোটি টাকার মাছ রপ্তানি বন্ধ হওয়া কোনো ছোট ব্যাপার নয়। মাছ ব্যবসায়ী ও রাজস্ব আদায়ে ক্ষতির পাশাপাশি দেশীয় পণ্যের সুনাম নষ্ট হওয়ার বিষয়টিকেও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে। বাংলাদেশের তরফে মাছের মান নিয়ন্ত্রণে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয় সেই প্রক্রিয়ার কোথাও কোনো ঘাটতি আছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। এই প্রক্রিয়ায় কোনো সমস্যা চিহ্নিত হলে তা দূর করার জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে। আমরা আশা করব, সরকারি উদ্যোগে বিষয়টি দ্রুতই নিষ্পত্তি হবে।