আমি কেন কাঁদছি

লতিফুর রহমান। ফাইল ছবি
লতিফুর রহমান। ফাইল ছবি

পরিচয় তো তাঁর আরও আছে। তবে আমার কাছে একটা পরিচয়ই বড়। তিনি প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টার পত্রিকার উদ্যোক্তা।

লিখতে গিয়েছিলাম, তিনি প্রথম আলো আর ডেইলি স্টারের মালিক। থমকে গেলাম। ‘মালিক’ কথাটা যে তাঁর সঙ্গে একটুও যায় না। কেন যায় না, সেটি লতিফুর রহমান এসেছেন, এমন একটি দিনে আপনি প্রথম আলো অফিসে উপস্থিত থাকলে আমাকে আর বুঝিয়ে বলতে হতো না। সাধারণত স্যুট-টাই পরেই আসতেন বলে তাঁকে আলাদা করা যেত। কিন্তু ওটুকুই।

কোনো প্রতিষ্ঠানের মালিক কালেভদ্রে অফিসে এলে কর্মীদের মধ্যে একটা সন্ত্রস্ত ভাব ফুটে ওঠাটাই স্বাভাবিক। সেই স্বাভাবিক ব্যাপারটিই ঘটত না। লতিফুর রহমানের দিকে সবাই যে দৃষ্টিতে তাকাতেন, সেটিতে একটা অনুভূতিই ফুটে উঠত। অকৃত্রিম শ্রদ্ধা!

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান ছাড়া বলতে গেলে প্রথম আলো অফিসে তাঁর পা-ই পড়ত না। নানা আনুষ্ঠানিকতার পর তিনি একটা বক্তৃতা দিতেন। তাতে প্রথম আলোর কথা থাকত, কর্মীদের কথা থাকত, আর থাকত বাংলাদেশকে নিয়ে তাঁর স্বপ্ন আর সাংবাদিকতার কথা। নৈতিকতার প্রচ্ছন্ন একটা শিক্ষাও। একটা কথা প্রায়ই বলতেন, তাঁর ও তাঁর পরিবারের সবার একটাই পাসপোর্ট। বাংলাদেশকে নিয়েই তাঁর সব স্বপ্ন। বলতেন প্রথম আলোকে নিয়ে স্বপ্নের কথাও। এত মানুষের দেশে একটা দৈনিক পত্রিকার প্রচারসংখ্যা কেন দশ লাখ হবে না?

সাংবাদিকতা নিয়ে যখন বলতেন, মনে হতো এই বিষয়েই হয়তো তাঁর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা, এটি নিয়েই তিনি সারা বছর কাজ করেন। সাংবাদিকতার মূল চেতনা আর নতুন নতুন চ্যালেঞ্জটা অনেক সাংবাদিকের চেয়েও তিনি বেশি বুঝতেন। প্রতিবছরই ওনার বক্তৃতা শোনার পর মনে হতো, বাইরের কেউ এটি শুনলেই প্রথম আলো আর ডেইলি স্টারের সাফল্যের রহস্যটা বুঝে ফেলতেন। আনুষ্ঠানিকতা শেষে আমাদের কয়েকজনকে নিয়ে বসতেন বোর্ড রুমে। মিষ্টিমুখ হতো, কখনো একটু আগের কোনো আলোচনার রেশ ধরে তাতে নতুন কিছু সংযোজন-বিয়োজন, খুনসুটি...।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর প্রায় সব অনুষ্ঠানেই আমি কিছু না কিছু বলতাম। সবাই সিরিয়াস সিরিয়াস কথা বলছে দেখে আমি মূলত দুষ্টুমিই করতাম। সেটিতে কে সম্পাদক, কে মালিক, এসব মনে রাখতাম না। প্রথম আলোর তখনকার সংস্কৃতি অনুযায়ী সেটি রাখার প্রয়োজন পড়ত না বলেই। আমার সেসব রসিকতা নিয়ে ওই আড্ডায় কখনো কখনো নতুন করে হাসতেন। আচার ব্যবহার, কথাবার্তার মতো সেই হাসিতেও থাকত পরিমিতির ছাপ।

২০১২ সালে ব্যবসায় নৈতিকতার স্বীকৃতি হিসেবে বিজনেস ফর পিস অ্যাওয়ার্ড পাওয়ার পর প্রথম আলো অফিসে তাঁকে একটা সংবর্ধনামতো দেওয়া হলো। আমাদের দেশের পুরোনো সব ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে বলে কপট আক্ষেপ করে আমি মনে মনে রচিত একটা মানপত্র পাঠ করলাম। যাতে রীতি অনুযায়ী ‘হে বিজয়ী’, ‘হে মহান বীর’, ‘হে অন্নদাতা’ এসব বিশেষণও ছিল। বাকি সবাই হেসে কুটিকুটি। লতিফুর রহমানও হাসলেন। তবে তাঁর সেই ট্রেডমার্ক নীরব হাসি।

ওই হাসিটার মতোই স্নিগ্ধ একটা আলো বিকিরিত হতো তাঁর ব্যক্তিত্ব থেকে। ভদ্রতা, সৌজন্য, বিনয়—এই শব্দগুলোর প্রকৃত অর্থও যা বুঝিয়ে দিত সবাইকে। দৈনন্দিন অভিজ্ঞতায় আমরা যেগুলোকে অর্থ, ক্ষমতা আর প্রতিপত্তির সঙ্গে বিপরীত সমানুপাতিক বলেই জানি।

ওই ভদ্রতা-সৌজন্য-বিনয়ের ব্যাপারটা পাত্রভেদেও রূপ বদলাত না। উদাহরণ অনেক আছে। তার একটি বলি। একবার প্রথম আলোর বয়োজ্যেষ্ঠ এক অফিস সহকারীকে অঝোরে কাঁদতে দেখে সবাই অবাক। কী হয়েছে? কী হয়েছে? নির্ঘাত এই মাত্র কোনো নিকটাত্মীয় কারও মৃত্যুসংবাদ পেয়েছেন। কিন্তু তিনি যে কাঁদতে কাঁদতে অস্ফুটে বলে যাচ্ছেন, ‘উনি আমাকে আগে সালাম দিয়েছেন।’ ‘উনি আমাকে আগে সালাম দিয়েছেন।’ একটু পর ঘটনা যা জানা গেল, তা মোটেই বিয়োগান্ত কিছু নয়। সম্পাদক মতিউর রহমানের সঙ্গে কোনো কাজে সন্ধ্যার পর সম্ভবত পূর্বঘোষণা ছাড়াই প্রথম আলো অফিসে এসেছেন লতিফুর রহমান। প্রথম আলো অফিস তখন সিএ ভবনে। সেটির দোতলায় নিউজ রুমের ভেতর থেকে সুইচ টিপে ওই অফিস সহকারী দরজা খুলে দিতেই তাঁকে সালাম দিয়েছেন লতিফুর রহমান। ওই অফিস সহকারী সারা জীবনই সবাইকে আগে সালাম দিয়ে এসেছেন। বেশির ভাগ সময় সেটির উত্তরও পাননি। সেখানে ‘মালিক’ তাঁকে আগে সালাম দিয়েছেন! দীর্ঘ কর্মজীবনে এই অভিজ্ঞতার সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়নি কখনো। সম্মান না পেতে পেতে এতেই অভ্যস্ত হয়ে পড়া ওই অফিস সহকারীর জন্য ওই সালাম তাই বিস্ময়-অবিশ্বাস-আনন্দের এক ধাক্কা হয়ে এসেছে। মনে স্তূপীকৃত অবজ্ঞা আর অবহেলার সঙ্গে বিক্রিয়ায় তা পরিণত হয়েছে চোখের জলে।

লতিফুর রহমানের সঙ্গে কোথাও দেখা হবে জানলে এই একটা ব্যাপারেই একটু ‘সন্ত্রস্ত’ হয়ে থাকতাম। আগে সালাম দিতে পারব তো? বেশির ভাগ দিনই পারিনি। সালাম তো দিতেনই, নাম ধরে ধরে কুশল জিজ্ঞাসা করে হাতও মেলাতেন সবার সঙ্গে।

এসব ছিল বাড়তি গুণ, যা না থাকলেও কিছু আসত-যেত না। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের ইতিহাসে ঠিকই অমর হয়ে থাকতেন লতিফুর রহমান। প্রথম আলো কেন প্রথম আলো হতে পেরেছিল, সেটি সাংবাদিকতার ছাত্রদের একটা গবেষণার বিষয় তো হতেই পারে। নির্মোহভাবে সত্যিই যদি কেউ তা করেন, অবধারিতভাবেই তাতে বড় একটা অধ্যায় বরাদ্দ থাকবে লতিফুর রহমানের জন্য। যেখানে ‘যা করেছেন’-এর সমান বা তার চেয়েও বেশি গুরুত্ব দিয়ে লেখা থাকবে ‘যা করেননি’। আদর্শ গণমাধ্যম মালিক হতে হলে কখনো কখনো করার চেয়েও ওই না-করাটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে সবচেয়ে কঠিন হলো হস্তক্ষেপ না করা। পেশাদারদের ওপর আস্থা রেখে তাঁদের কাজ তাঁদের করতে দেওয়া। বড় বড় বিষয়ের কথা বাদই দিই। ছোট্ট দুটি ঘটনা বলি। এক-এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় একেক দিন একেকটা তালিকা বের হচ্ছে। সন্দেহভাজন ‘দুর্নীতিবাজ’দের তালিকা। এমনই একটি তালিকা হাতে পাওয়ার পর দেখা গেল, তাতে লতিফুর রহমানের নামও আছে। বাংলাদেশের বাস্তবতায় এরপর কী হতে পারে, সেটি আপনি অনুমান করতেই পারেন। সেই অনুমান আসলে যা ঘটেছিল, সেটির নাগাল পাবে বলে মনে হয় না। লতিফুর রহমান নিজেই আগে অন্য দশটা তালিকা যেভাবে ছাপা হয়েছে, সেদিনেরটাও সেভাবেই ছাপাতে বলেন। অবশ্যই তাঁর নামসহ। তদন্ত-টদন্ত করার পর ওই তালিকা থেকে যে তাঁর নাম কাটতে হয়েছিল, প্রাসঙ্গিক হবে বলেই এই তথ্যটা মনে করিয়ে দিই।

একেবারে ব্যক্তিগত একটা অভিজ্ঞতার কথা বলি। আপাত গুরুত্বহীন ঘটনা, কিন্তু সেটিও অনেক কিছু বুঝিয়ে দেয়। প্রতিবছরই ট্রান্সকম গ্রুপ একটা গলফ টুর্নামেন্ট আয়োজন করে এবং প্রায় প্রতিবছরই আমি সেটির খবর বা ছবি খেলার পাতায় ছাপতে ভুলে যাই। পরদিন সকালে ডেইলি স্টারে ছবি বা খবরটা দেখে জিবে কামড় দিই। বড় করপোরেট হাউসের বেশির ভাগই গলফ টুর্নামেন্ট করে। বিজ্ঞাপন বিভাগের তাগাদায় বা ওই প্রতিষ্ঠানের পরিচিত কারও অনুরোধে সেসবের বেশির ভাগই ছাপা হয়। অথচ ট্রান্সকম গ্রুপের পত্রিকা প্রথম আলোতে ট্রান্সকম গলফের খবরই থাকে না! এরপর কী হতে পারে, অনুমান করতেই পারেন। সেই অনুমান একটুও মিলবে না।

মালিকপক্ষের কেউ কোনো দিন এ নিয়ে হম্বিতম্বি দূরে থাক, একটা ফোন পর্যন্তও করেননি। বাংলাদেশের আর কোনো সংবাদপত্র বা টিভির কর্মীরা এই অভিজ্ঞতার সঙ্গে একাত্ম হতে পারবেন কি না, সন্দেহ হয়।

একজন লতিফুর রহমান ছিলেন বলেই হয়তো এমন একটা গল্প লেখার সুযোগ পেয়েছি। দেশের সবচেয়ে প্রভাবশালী দুটি দৈনিককে বাংলাদেশের ‘নিয়ম’ অনুযায়ী কাজে লাগিয়ে কত কিছুই না করতে পারতেন! তা তো করেনইনি, উল্টো এই দুটি পত্রিকার জন্যই প্রায় নিরবচ্ছিন্নভাবে অবিশ্বাস্য চাপ এবং কখনো কখনো প্রচণ্ড হয়রানির শিকারও হতে হয়েছে বলেই জানি। বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্য করেন, এমন কারও জন্য চ্যালেঞ্জটা কত বড় ছিল, তা অনুমান করা মোটেই কঠিন কিছু নয়। সেসব যন্ত্রণা তিনি হাসিমুখে সয়েছেন। কখনো কখনো হয়তো ব্যবসায়িক ক্ষতিও। বাংলাদেশে গণমাধ্যমের এমন মালিক তো আর দেখি না। লতিফুর রহমানের প্রয়াণ তাই শুধুই একজন মানুষের চলে যাওয়া নয়, এটি আরও সুদূরপ্রসারী তাৎপর্য নিয়ে দেখা দিতে পারে। আগামী দিনগুলোতে লতিফুর রহমানহীন প্রথম আলোর গতিপথ থেকে যে কৌতূহলের উত্তর হয়তো আমরা পাব।

লতিফুর রহমানকে নিয়ে লিখতে গিয়ে ‘মালিক’ শব্দটা ব্যবহারে কেন বাধো-বাধো লাগে, এর আরেকটা কারণ খুঁজে পাচ্ছি। যেটি আমি বিভিন্ন সময়ে অনেককে বলেছিও। বলেছি গল্পের ঢঙে। ধরুন, আপনি সম্পাদক মতিউর রহমানের সঙ্গে দেখা করতে প্রথম আলো অফিসে যাবেন। আপনি গিয়ে যে চেয়ারটায় বসবেন, প্রথম আলো অফিসে এসে লতিফুর রহমানও তাতেই বসবেন (আহা, এখন তো ‘বসতেন’ লিখতে হয়)। মালিক বলে তাঁর জন্য আলাদা কোনো ব্যবস্থা নেই। নিজস্ব কোনো রুমের তো প্রশ্নই ওঠে না। এমন তো কতবারই হয়েছে, ইউরিনালে দাঁড়িয়ে পেছনে অপেক্ষমাণ লতিফুর রহমানকে আবিষ্কার করেছি। বুক হাত দিয়ে বলুন তো, আমরা কজন তা করতে রাজি হতাম? আমার অফিসে বছরে এক দিন যাই বা দুদিন, আমার জন্য একটা আলাদা রুম থাকবে, আলাদা ওয়াশরুম—এটা তো খুবই স্বাভাবিক চাওয়া। লতিফুর রহমান তা চাননি।

তিনি যা চেয়েছেন, তা হলো প্রথম আলো আরও বড় হোক, প্রথম আলোর কর্মীরা আরও ভালো থাকুক। মানবসম্পদই যে একটা প্রতিষ্ঠানের প্রাণভোমরা, এই উপলব্ধির প্রমাণ তিনি এতবার দিয়েছেন যে তা বলে শেষ করা যাবে না। আমরা হয়তো দশ ভেবেছি, উনি বলেছেন, বিশ কেন নয়? প্রথম আলো যে সাংবাদিকদের গাড়ি দেয়, সেটির শুরুর গল্পটা শুধু বলি। গাড়ি কেনার জন্য লোন দেওয়া যায় কি না, আলোচনাটা এ নিয়েই শুরু হয়েছিল। বাংলাদেশের সংবাদপত্রের জন্য সেই চিন্তাটাই যথেষ্ট ব্যতিক্রমী ছিল। সাংবাদিকদের দৃষ্টিকোণ থেকে উচ্চাভিলাষীও। অথচ লতিফুর রহমান তা শুনে বলেন, লোন কেন, গাড়ি দিলে সেটি বিনা মূল্যেই দেওয়া উচিত। একটা নির্দিষ্ট সময় না হয় সেটি প্রথম আলোর নামেই থাকবে। ওই সময়টা পার হলে তা পেয়ে যাবেন কর্মীরা। এরপরই ওনার মনে হলো, শুধু গাড়ি দিলে তো অনেকের জন্য সেটি উল্টো বোঝা হয়ে যাবে। গাড়ি চালানোর জন্য একটা খরচও তাই বরাদ্দ হলো। লতিফুর রহমানকে বোঝাতে পারে, এমন আরও অনেক ঘটনাই মনে পড়ছে। তা বলার দায়িত্ব না হয় প্রথম আলোর অন্য কর্মীদের ওপরই ছেড়ে দিই।

প্রথম আলোর এক প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে দুষ্টুমি করে বলা আমার একটা কথা পরে সহকর্মীদের মুখে মুখে ফিরেছে। প্রথম আলো কেন প্রথম আলো হতে পেরেছে, এর পেছনে নানা কারণ উল্লেখ করে আমি যোগ করেছিলাম, ‘প্রথম আলোর এই সাফল্যে এমনকি মতি ভাইয়েরও অবদান আছে।’

প্রথম আলোর সাফল্যে মতি ভাইয়ের অবদান আবিষ্কার করা তো যুগান্তকারী ঘটনা। এই রসিকতাটা বুঝতে না পারার তাই কোনো কারণ দেখছি না। তবে একটা কথা আমি সিরিয়াসলিই বলে আসছি অনেক দিন। মতি ভাইকেও বলেছি। বাংলাদেশে মতিউর রহমানের মতো আরেকজন সম্পাদক পাওয়ার সম্ভাবনা ৫-১০ পার্সেন্ট থাকলেও থাকতে পারে, তবে লতিফুর রহমানের মতো আরেকজন সংবাদপত্র মালিক পাওয়ার সম্ভাবনা জিরো পার্সেন্ট।

শুধু লতিফুর রহমান সাহেব, প্রিয় শামীম ভাইকেই কখনো কথাটা বলা হয়নি। তাঁকে কতটা পছন্দ করি, সেটিও না। সেটিকে যে সবাই মালিকতোষণ বলে ভুল করত। প্রথম আলো থেকে চাকরি না ছাড়লে এই লেখাটাও হয়তো লেখা হতো না!

সেই পছন্দটা যে এই মাত্রার, সেটিই আগে বুঝতে পেরেছি নাকি! প্রথম আলো অফিসে বা প্রথম আলোর কোনো অনুষ্ঠানেই তো যা দেখা-সাক্ষাৎ। একবারই মনে হয় শুধু বাড়িতে গিয়েছিলাম। ঘনিষ্ঠতা বলতে যা বোঝায়, সেটি তো আর ছিল না। তারপরও মৃত্যুসংবাদটা পাওয়ার পর থেকে মনটা কেন এমন অসাড় হয়ে আছে! ছোট্ট একটা স্ট্যাটাস লিখতে বসে কেন সেটি আর শেষ করতে পারছি না! কে আমাকে দিয়ে এভাবে শব্দের পর শব্দ লিখিয়ে নিচ্ছে! লিখতে লিখতে আমি কাঁদছি কেন?

[ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে নেওয়া, ১ জুলাই ২০২০]

উৎপল শুভ্র: সাংবাদিক।