হাসিনাপুত্রের অতিথি-রাজনীতি!

পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়কে অভিষিক্ত করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়কে অভিষিক্ত করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

একসময় গণমাধ্যমে শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়ার নাম হারিয়ে যাবে। আসবে অন্য দুটি নাম—সজীব ওয়াজেদ জয় ও তারেক রহমান। পদ্ধতি বদলাবে না কিন্তু নাম বদলাবে। এ-ও তো পরিবর্তন! কিন্তু তা-ও আমরা জলবৎতরলং পাচ্ছি না। খোঁজ নিয়ে জানলাম, রাজনীতির দুই নতুন ‘রাজপুত্তুরের’ মধ্যে সজীব ওয়াজেদ এখনই হাল ধরছেন না। সম্প্রতি তিনি কয়েকটি দৈনিকের সম্পাদকদের সঙ্গেও কথা বলেন। সেখানে তিনি বলেন, রাজনীতিতে নয়, তিনি মাকে সাহায্য করতে এসেছেন। অর্থাৎ রাজনীতিতে তিনি এখনো অতিথি। মির্জা ফখরুলের ভাষায় ‘বিদেশি সেনাপতি’। রাজনীতিতে তর্ক তুলে সজীব ওয়াজেদ বিদেশে চলে গেছেন। উত্তরাধিকারের রক্তাক্ত লড়াই ইতিহাসে আছে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পরে ভীতসন্ত্রস্ত ইন্দিরা গান্ধী নিজের ও তাঁর পরিবারের অনুরূপ পরিণতি কল্পনা করে শিউরে উঠতেন। রাসেলকে ভেবে রাহুলের জন্য তাঁর প্রাণ কাঁদত। তিনি ঘুমানোর ঘর বদলান। ছেলে সঞ্জয়ের পাশের কক্ষে ঠাঁই নেন। ইন্দিরার জীবনচরিত লেখক অধ্যাপক ক্যাথরিন ফ্রাঙ্ক পরিহাসভরে লিখেছেন, তবে ইন্দিরা জানতেন না, তাঁর অজান্তে তাঁরই ছেলে (সঞ্জয়) তাঁর বৃহত্তম হুমকি হয়ে উঠছেন। সেই অবস্থা থেকে আমরা এখনো মুক্ত। বিএনপিতে তারেক অপ্রতিদ্বন্দ্বী। কিন্তু আওয়ামী লীগে শেখ হাসিনার পরে কে আসবেন, তা অনিশ্চিত। বঙ্গবন্ধুর পরে কে, সেটি কম-বেশি জানা ছিল। অন্তত শেখ ফজলুল হক মণির প্রস্তুতি ছিল। মামা মুজিবের ওপর তাঁর অস্বাভাবিক প্রভাব ছিল। মুজিবের প্রশ্রয়ে তাজউদ্দীন আহমদের বিরুদ্ধে তিনি তাঁর অসন্তুষ্টি প্রকাশে অকুতোভয় ছিলেন। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের তৃতীয় পদ সৃষ্টির পর জল্পনা ছিল, সজীব ওয়াজেদই এ পদে আসছেন। কিন্তু পরে সেই শূন্য পদ জাহাঙ্গীর কবির নানক পূরণ করেন। তখনো হয়তো সজীব ওয়াজেদের ব্যাপারে মনস্থির করতে পারেননি শেখ হাসিনা। তবে হার্ভার্ডপড়ুয়া, মুজিবের নাতি, প্রধানমন্ত্রী-পুত্রের পরিচয় যাঁর আছে, তিনি যে ৪২ বছর পেরোনোর পরও আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্য থেকে গেলেন, সেটা কম আশ্চর্যের নয়। বাংলাদেশের রাজনীতি বিষয়ে তাঁর সংকল্পের তল মাপতে এটা বড় মাপকাঠি। কেন তিনি এখন পর্যন্ত সার্বক্ষণিক দলীয় রাজনীতি থেকে দূরে? এর আগে আমরা শেখ রেহানার লক্ষণীয় উপস্থিতি দেখেছিলাম। তাঁর ছেলে ববি কি রাজনীতিতে আসবেন? আমরা এখনো ইঙ্গিত পাই না। ৩২ নম্বরের সিংহাসনের উত্তরাধিকারের প্রশ্নটি এখনো অমীমাংসিত।
সজীব ওয়াজেদ নানাভাবে আলোচিত। তারেকের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ থেকে শিক্ষা নেওয়া-সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে সজীব ওয়াজেদ এটিএনকে একটি অসতর্ক মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, শিক্ষা নেওয়ার দরকার নেই। ছোটবেলা থেকে মা বলেছেন, তোমরা কার নাতি মনে রাখবা। ভাইবোনদের মধ্যে মাস্টার্সের নিচে কেউ নেই। আমাদের মেধা আছে। তাই দেশের টাকা চুরি করার দরকার নেই। বোঝাই যাচ্ছে, সজীব ওয়াজেদ গজদন্ত মিনারে আছেন। তাঁর কথার সরল মানে দাঁড়াচ্ছে, যাঁদের মেধা নেই, যাঁদের ডিগ্রি নেই তাঁদের চুরি করার দরকার পড়ে! বাংলাদেশের একশ্রেণীর মিডিয়া অবশ্য সজীব ওয়াজেদের বিবাহবিচ্ছেদ ঘটিয়েছিল। সেটা নিছক অপপ্রচার। তবে সাম্প্রতিক সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভরাডুবির আগে বা পরে সজীব ওয়াজেদের মুখে কখনো দলীয় আত্মশুদ্ধি বা সংস্কারের কথা শোনা যায়নি। একজন তথ্যপ্রযুক্তিবিশেষজ্ঞ হিসেবে তাঁর আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর উপদেষ্টা পরিচয় বোধগম্য। শেখ হাসিনার আগের সরকার থেকেই তিনি তাঁর মায়ের সঙ্গে বড় কূটনৈতিক সফরের সঙ্গী হয়েছেন। আন্তর্জাতিক সম্মেলনে দলনেতা হিসেবে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। কিন্তু দলের মাঠেঘাটের রাজনীতি বা দলের সিদ্ধান্ত গ্রহণের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় সজীব ওয়াজেদকে দেখা যায় না। তাই দলের পুনর্বিজয় সম্পর্কে তাঁর আকস্মিক মন্তব্য সংগত কারণেই প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। তিনি দেশে থাকতেই ঢাকায় বিলবোর্ড-অভ্যুত্থান ঘটেছে। কথিত মতে, র‌্যাব গুলি করে যুবলীগের নেতার সন্দেহভাজন ঘাতক হিসেবে যাঁকে হত্যা করেছে, তিনিও যুবলীগের নেতা। কিন্তু এসব ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়ে’ আমরা তাঁর মন্তব্য জানতে পারিনি। অথচ এই যুবলীগের ইফতার অনুষ্ঠানেই তিনি ক্ষমতার রাজনীতিবিষয়ক বক্তব্য দেন। আমরা চিন্তিত আগামী তিন দশক নিয়ে। মুজিব ও জিয়ার দুই উত্তরসূরি আমাদের তিন দশক নেতৃত্ব দিয়েছেন। কারও দাবি, আরও খারাপের কবল থেকে তাঁরা দেশকে বাঁচিয়েছেন। তাঁদের উত্তরসূরিরা কত বছর নেবেন? হাসিনা-খালেদা দলের হাল ধরেছিলেন যথাক্রমে ৩৪ ও ৩৬ বছর বয়সে। সজীব ও তারেকের বয়স এখন যথাক্রমে ৪২ ও ৪৬। অন্তত বয়সের কারণেও তাঁরা দুই নেত্রীর রেকর্ড ভাঙতে পারবেন না। সে কারণে দুই ‘রাজপুত্তুরের’ অভিষেক যত তাড়াতাড়ি হয় ততই মঙ্গল। তবে তাঁরা একই সঙ্গে দলের ও সরকারের প্রধান হয়ে গণতন্ত্রের লালবাতি আরও দীর্ঘ প্রহর জ্বালাবেন না আশা করি। দুই দলের রাজনীতিবিদদের প্রতি অনুরোধ, দ্রুত তারেক ও সজীবকে ক্ষমতার শীর্ষে আনুন। আওয়ামী লীগের আগামী মেয়াদের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে একজন হার্ভার্ডপড়ুয়াকে পেলে খুশি হব। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী পদে এই দুই ‘রাজপুত্তুরের’ সম্ভাব্য অভিষেকের চিত্রটি পরিষ্কার নয়। পীরগঞ্জের জনসভায় সজীব ওয়াজেদ এ ইঙ্গিত দেননি যে আগামী নির্বাচনে ওই আসন থেকে তিনি নির্বাচন করবেন। বরং সম্পাদকদের সজীব ওয়াজেদ জানিয়েছেন, তাঁর মায়ের কিছু অঙ্গীকার পূরণ এখনো বাকি। তাই আরও এক মেয়াদে তাঁর প্রধানমন্ত্রী থাকা দরকার। প্রশ্ন দাঁড়ায়, এটা কোন গণতন্ত্র? শেখ হাসিনা দেশে ফিরে মার্কিন রাষ্ট্রদূত মরিয়ার্টির কাছে ২০০৮ সালের ১৬ নভেম্বর বলেছিলেন, ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে বিএনপিকে ছাড়াই তিনি নির্বাচনে যেতে প্রস্তুত। এ সময় তিনি মরিয়ার্টিকে আরও বলেছিলেন, এটাই হয়তো তাঁর শেষ নির্বাচন! এরপর তিনি উত্তরসূরি খুঁজবেন। ২০০৬ সালের ৩ আগস্ট রিচার্ড বাউচার ধানমন্ডির বাসভবনেই শেখ হাসিনার সঙ্গে মিলিত হন। সজীব ওয়াজেদ তখন উপস্থিত ছিলেন। এর বিবরণ দিয়ে পাঠানো মার্কিন তারবার্তা যা বলেছে তা আজও যথার্থ। এতে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার স্বেচ্ছা-অবসর প্রায় অচিন্তনীয়, যতক্ষণ তাঁর প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী খালেদা জিয়া ও তাঁর ছেলে রাজনীতির মাঠ থেকে সরে না দাঁড়ান।
সজীব ওয়াজেদ আগামী নির্বাচনে প্রচারাভিযানের পুরো ভাগে থাকবেন। শুনেছি, একজন পশ্চিমা কূটনীতিকের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছেন, বর্তমান সরকারের তেমন ব্যর্থতা নেই। বড় সমস্যা পাবলিসিটির। কথাটি হয়তো বিলবোর্ড-অভ্যুত্থানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। অনৈতিক ও অশোভন এই অভ্যুত্থান রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা অপব্যবহারের উদাহরণ।
আগামী নির্বাচনে তারেকের সংসদ সদস্য হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। কারণ, গণেশ না উল্টালে তিনি হয়তো দেশে আসবেন না। তাহলে আরও পাঁচ বছর বাংলাদেশের রাজনৈতিক মঞ্চে হয়তো দুই নেত্রী থেকে যাবেন। নাটকীয়তা নাকচ করা যাবে না। সাধারণ নির্বাচনের পর উপনির্বাচনে জয়ী করে এনে নতুন নেতৃত্বের অভিষেক ঘটানো সম্ভব। এমন প্রতিযোগিতায় তারেক আপাতত এগিয়ে আছেন। কারণ, সম্ভাবনা নির্দেশ করে যে আগামী নির্বাচন যখন এবং যেমন সরকারের অধীনেই হোক, তার প্রেক্ষাপট সজীবের চেয়ে তারেকের জন্য বেশি অনুকূল হতে পারে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে দুই নেত্রী এসেছিলেন বৈরী পরিবেশে। এখন তাঁদের উত্তরসূরিরা কি থিতু হবেন অনুকূল পরিবেশে? নাকি ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটবে, সেটা দেখার বিষয়।
বাংলাদেশে ধর্মীয় উগ্রবাদের উত্থানের অন্যতম মূল কারণ দুই প্রধান দলের বিরাজনীতিকীকরণ। বিএনপি ক্ষমতায় এলে জঙ্গিবাদের চাষ হবে, আওয়ামী লীগ থাকলে হবে না। এটা কতটা সত্য? হেফাজতের বিস্ময়কর উত্থানের আংশিক দায় আওয়ামী লীগের সেই নেতৃত্বের, যাঁরা তাঁদের নেতৃত্ব টেকাতে অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রায়ণে দলীয় নেতৃত্বের বিকাশ রুদ্ধ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রভাবশালী থিঙ্কট্যাঙ্ক পিউ ফাউন্ডেশন গত বছর জরিপ করে দেখেছে, বাংলাদেশের ২৬ শতাংশ মানুষ আত্মঘাতী বোমা হামলা আর ৮২ শতাংশ লোক শরিয়া আইন সমর্থন করেন। সমাজমানসে এ ধরনের একটা বিমূর্ত কল্পনা তৈরি হতে পেরেছে অপশাসনজনিত হতাশা থেকেই। শাসনকার্যে, দলের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় নাগরিকের কার্যকর শরিকানা নেই বলে। হোন্ডা-গুন্ডা এখন ভোটের বাক্স ভরতে নয়, নেতা তৈরি ও তাঁকে ওপরে তোলার কাজে লাগে।
তারেক রহমান বগুড়ায় গণতন্ত্র পরীক্ষা করেছিলেন। জেলার সব স্তরে গোপন ব্যালটে ভোটের ফলের ভিত্তিতে কমিটি হয়েছিল। কিন্তু এই ব্যবস্থা বেশি দিন টেকেনি। কিছুকাল পরই দেখা গেছে পেশিশক্তি, বিশেষ করে খুনখারাবির সঙ্গে জড়িতরাই তারেক রহমানকে ঘিরে ফেলেছে। কিন্তু ধরাধরির কমিটির দিনবদলে গোপন ব্যালটই সঠিক পথ।
দলের গণতন্ত্রহীনতায় সজীব ওয়াজেদের উদ্বেগ আছে বলেও টের পাই না। সজীব ওয়াজেদকে বুঝতে হবে, আওয়ামী লীগ জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। কেবল স্লোগানে যায় চেনা! দলটির সাংগঠনিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় সমাজের ভালো মানুষের সম্পর্ক নিতান্তই আলগা। দলটি রাজনীতির মাঠে বড় খেলোয়াড় হয়েই থাকবে। কিন্তু তাতে জামায়াত ও হেফাজতের মতো উগ্র দক্ষিণপন্থী দলগুলোর উত্থান ব্যাহত হবে না। আওয়ামী লীগ কেন শরিয়াচুক্তিতে সই করে? এটা কতটা শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে আর কতটা আওয়ামী লীগের প্রয়োজনে, সেই প্রশ্নের ফয়সালার সময় এসেছে। শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের গায়ে গণতান্ত্রিক রীতিনীতির বাতাস লাগতে দেননি এবং দিচ্ছেন না। অনেকটা সেই শূন্যতার গর্ভে জন্ম নেয় হেফাজত, সন্ত্রাসের উদ্বাহু নৃত্য করে জামায়াত। আওয়ামী সন্ত্রাসীদের তাণ্ডবলীলার বিচারহীনতাও তাদের বুকের ছাতি ফোলায়।
জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান সম্পর্কে সজীব ওয়াজেদকে তাঁর মায়ের ভাষায় নিন্দামুখর হতেই হবে, নইলে আওয়ামী লীগের রাজনীতি টিকবে না। কথাটি কি ঠিক? সাধারণভাবে তিনি যদি কথাবার্তায় অসংযত হন, অতীতকাতরতা দেখান, তাহলে মানুষ হতাশ হবে।
শেখ হাসিনা বাবার মৃত্যুর ছয় বছর ও খালেদা জিয়া স্বামীর মৃত্যুর দুই বছর পর দলের শীর্ষ পদে আরোহণ করেছেন। কেমব্রিজ-ফেরত রাহুল গান্ধীও প্রযুক্তিবিদ। সাত বছরের ব্যবধানে ঘাতকের গুলিতে দাদি ইন্দিরা ও বাবা রাজীবকে হারানোর ২২ বছরেও রাহুল মন্ত্রীর পদও নেননি। রাহুল সজীবের চেয়ে এক বছরের ছোট। ভারতীয় তরুণদের কাছে রাহুল আইকন। প্রবীণদেরও আস্থা অর্জন করেছেন তিনি। সজীবের তেমন চেষ্টা আছে বলে প্রতীয়মান হয় না। গত বছর কংগ্রেসের ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হওয়ার আগে ২০০৪ সাল থেকে একজন সাংসদ হিসেবে রাহুল ভূমিকা রেখেছেন। সজীব ওয়াজেদ বলেছেন, তাঁর মা তাঁকে বঙ্গবন্ধুর নাতি হতে বলেছেন। কিন্তু বাঙালির জীবনে মুজিব কখনো অতিথি হননি।
দুই নেত্রীর কাছে সাংসদ ও প্রধানমন্ত্রী বনে যাওয়া সমার্থক। তাঁদের দুই ছেলে কি তাঁদেরই পদাঙ্ক অনুসরণ করতে চলেছেন? এটা ত্বরান্বিত হোক। জাতির শাপমোচন বেগবান হোক।
একাত্তরের মধ্য ডিসেম্বর। নিউইয়র্কের পিয়েরে হোটেল। ফোন থামছে না। বেনজিরকে ভুট্টো শিখিয়ে দিয়েছেন, সোভিয়েতরা এখানে থাকলে ফোন ধরে আমাকে বলবে, চীনারা আপনাকে চাইছে। মার্কিন থাকলে আমাকে বলবে, রুশ বা ভারতীয়রা আপনাকে চাইছে। কিন্তু কাউকে বলবে না, সত্যিই কারা এখানে আছে। সব তাস একসঙ্গে টেবিলে রাখবে না। বেনজির লিখেছেন, ‘বাবার নির্দেশ পালন করেছিলাম। কিন্তু এই শিক্ষাটা আমি নিইনি। সর্বদাই সব তাস আমি টেবিলে রেখেছি।’
আমরা এটা জানতে আগ্রহী থাকব যে রাজনীতিতে এখনো অতিথি সজীব ওয়াজেদ তাঁর মায়ের কোন শিক্ষাটা পরিত্যাগ করবেন?
মিজানুর রহমান খান: সাংবাদিক।
[email protected]