দুই সাংসদকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করুন

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দুই সাংসদকে ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা নিয়ে পুলিশের টালবাহানা দেখে প্রশ্ন জাগছে, তাঁদের আইনানুগ শাস্তি নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার আইনি লড়াইয়ে পুলিশ কি জোরালো ভূমিকা রাখবে?
আইন সবার জন্যই সমান—সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর এ কথা মিথ্যা হয়ে যাচ্ছে এ দুই সাংসদের ক্ষেত্রে। তাঁদের একজন একটি হত্যা মামলার সন্দেহভাজন, অন্যজন গুলি করে আহত করেছেন এক শিশুকে। কিন্তু স্পিকারের কথারও কোনো ফল দেখা যাচ্ছে না। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে শাহাদাত নামের এক শিশুকে গুলি করার দায়ে সেখানকার সরকারদলীয় সাংসদ মনজুরুল ইসলামকে গ্রেপ্তারের সোচ্চার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, তাঁকে ছাড় দেওয়া হবে না। কিন্তু গুলির ঘটনার পর নয় দিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ এই সাংসদকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। পুলিশ বলছে, তারা সাংসদকে খুঁজে পাচ্ছে না। কিন্তু সাংসদ মনজুরুল ঢাকায় আছেন, তিনি জামিন পাওয়ার চেষ্টা করছেন—এ কথা তিনি নিজেই মুঠোফোনে প্রথম আলোর প্রতিবেদককে বলেছেন।

সাংসদ মনজুরুলকে আত্মসমর্পণ করার জন্য সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে বলে সাংবাদিকদের বলেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। এ বড় অদ্ভুত কথা। কারণ, কোনো ব্যক্তি কোনো ফৌজদারি অপরাধ করার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দায়িত্ব হয়ে ওঠে। এখানে আসামিকে আত্মসমর্পণ করতে বলা বা সে জন্য সময় বেঁধে দেওয়ার কোনো সুযোগ আইনত নেই। সাংসদ মনজুরুল এখন উচ্চ আদালতে আগাম জামিনের আবেদন করেছেন। এটা বোঝা যায় যে মনজুরুল ইসলামকে এ সুযোগ দেওয়া হয়েছে এ কারণে যে তিনি ক্ষমতাসীন দলের সাংসদ।
দলীয় স্বার্থের কথা ভাবলে এ দুই সাংসদকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করাই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জন্য বেশি লাভজনক। কিন্তু সেটা কোনো সুযুক্তি নয়। তাঁদের এখনই গ্রেপ্তার করা উচিত আইনের শাসনের স্বার্থে।