খাদ্য মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ অনিয়ম

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সার্বিকভাবে দেশের দুর্নীতি রোধে কতটা কার্যকর, সেই প্রশ্ন সব সময় প্রাসঙ্গিক থাকছে, কিন্তু বাড়তি উপসর্গ হিসেবে তাদের ললাটে আরেকটি তকমা জুটেছে সেটা হলো, সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের দায়মুক্তি দেওয়া। তবে দুদক দাবি করতেই পারে যে তারা শুধু মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়, তাতে কখনো অনেকের নাম বাদ পড়ে, তারা কাউকে কোনো দায়মুক্তির সনদ প্রদান করে না। কিন্তু কার্যত যাঁদের নাম বাদ পড়ে, তাঁরা বাস্তবে সেটাকে একটা দায়মুক্তিপত্র হিসেবেই ব্যবহার করে থাকেন।
৪৬ আসামিরই দায়মুক্তি খাদ্য অধিদপ্তরের তৃতীয় শ্রেণির ১০ ক্যাটাগরিতে দেড় হাজারের বেশি শূন্যপদ পূরণে ব্যাপক অনিয়মের তদন্তে দুদক প্রশংসনীয়ভাবে এগিয়ে এসেছিল। কিন্তু পরে দেখা গেল ৫৩ আসামির বিরুদ্ধে মামলা হলো আর তার মধ্যে ৪৬ জনই বেরিয়ে গেলেন। এখন বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ উঠেছে যে যাঁরা আসামি হিসেবে অভিযোগপত্রভুক্ত হয়েছেন, তার মধ্যে নির্দোষ আছেন আবার দায়মুক্তিপত্র পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে দোষী রয়েছেন।
লক্ষণীয় হলো দুদকের তদন্তকারী ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের দুই কর্মকর্তার মন্তব্য। কেন এত বিপুলসংখ্যক ছাড়া পেলেন, তখন দুদকের তদন্তকারী বলেননি যে তদন্তের ফলাফলের ভিত্তিতেই তাঁরা মাত্র সাতজনকে অভিযুক্ত হিসেবে ঠাওর করতে পেরেছেন। তিনি বরং বলেছেন, কমিশন যেভাবে বলেছে, সেভাবে তাঁরা আসামির সংখ্যা ধার্য করেছেন। অন্যদিকে খাদ্য অধিদপ্তরের একজন অভিযুক্ত কর্মকর্তা বলেছেন, একজন যুগ্ম সচিবের নেতৃত্বাধীন সরকারি কমিটি বলেছে, পুরো নিয়োগ শতভাগ ত্রুটিমুক্ত! এমন তদন্ত কী করে হলো, তারও তদন্ত করা দরকার।
দুদকে সম্প্রতি নতুন চেয়ারম্যান ও সদস্য অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। দুদক আইন দুদককে সহজেই আগের ভুল সিদ্ধান্ত ওলটানোর এখতিয়ার দিয়েছে। সুতরাং আমরা পুনর্গঠিত দুদকের কাছে এই মামলার বিষয়টি পুনর্বিবেচনার দাবি জানাব। দুদকের নতুন চেয়ারম্যান দুর্নীতি দমনে নতুন করে অঙ্গীকার করেছেন। আশা করব তিনি দুদকের ওই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করবেন।