রাস্তা বন্ধ করে সাংসদকে সংবর্ধনা

নেতা আসবেন বলে লাখো মানুষের চলাচল আটকে দেওয়া হলো! আওয়ামী লীগের সাংসদ এ কে এম রহমতউল্লাহ দলটির ঢাকা মহানগর (উত্তর) শাখার সভাপতি। তিনি বিদেশ থেকে ফিরবেন বলে মহাখালী থেকে টঙ্গী পর্যন্ত রাস্তা আটকে সংবর্ধনা চলল। নেতা ফিরেছেন মহাসমারোহে, কিন্তু সাধারণ মানুষের বাড়ি ফেরা আটকে থাকল ঘণ্টার পর ঘণ্টা। পুলিশ চেয়ে চেয়ে দেখল!
নেতা-নেত্রীরা কাজে-অকাজে বিদেশ ভ্রমণ শেষে ফিরলেই বিমানবন্দরে সংবর্ধনা দেওয়ার রাজকীয় রীতি চালু আছে বাংলাদেশে। বিমানবন্দর তো পল্টন ময়দান নয় যে সেখানে রাজনৈতিক জমায়েত করতে হবে। কেবল বিমানবন্দর নয়, গতকাল এহেন সংবর্ধনার জন্য বিমানবন্দরের আগে-পরের দুই দিকের সড়কে বেআইনিভাবে মিছিল নামে। যান চলাচল বন্ধ করে জনস্বার্থের জন্য ক্ষতিকর এসব মিছিল আটকানোর কথা ছিল পুলিশের। তার বদলে তারা বরং মিছিল যাতে যেতে পারে, তার জন্য যান চলাচলই বন্ধ করে দেয়। মহাখালী থেকে টঙ্গী পর্যন্ত বিরাট এলাকার মূল সড়ক অচল হয়ে যায়।
নেতা নিশ্চয়ই এর জন্য গর্ববোধ করেছেন। কিন্তু জনপ্রতিনিধি ও সরকার পরিচালনাকারী দলের নেতা হিসেবে জনস্বার্থের কথা ভেবে তিনি কি পারতেন না কর্মীদের এ রকম গোলযোগ করা থেকে বিরত রাখতে? এ সংবর্ধনার তো কোনো রাজনৈতিক গুরুত্বও ছিল না। আনুগত্য প্রদর্শনের এই মহড়া তো তিনি আগে থেকে নির্দেশ দিয়ে বন্ধ করতে পারতেন। অথবা দিন শেষে কর্মক্লান্ত মানুষের বিপুল ভোগান্তির জন্য যারা দায়ী, তিনি তো এখনো পারেন তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত তৈরি করতে! তবে বাংলাদেশে এমন কোনো নজির নেই।
স্কুলের শিশুদের রোদ-বৃষ্টির মধ্যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে নেতার সংবর্ধনার ব্যবস্থা করতে আমরা দেখেছি। আমরা দেখেছি সরকারি দলের সমাবেশের জন্য রাজধানী অচল হয়ে থাকতে। আমরা কি সামান্য সৌজন্য ও সভ্যতার যোগ্য হয়ে উঠিনি?