বিজিবিতে নারীর প্রবেশ

দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশে (বিজিবি) প্রথমবারের মতো নারী সদস্য যোগ দিচ্ছেন। প্রথম দফায় ১০০ জন নারী সদস্যকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অবশ্য তাঁদের মধ্যে তিনজন প্রশিক্ষণ শেষ করতে পারেননি। তবু বলা যায়, এই রেকর্ড সাফল্যজনক। সমাজে নারী-পুরুষ সমতা সৃষ্টির পথে এভাবেই এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। একটি সশস্ত্র সুশৃঙ্খল বাহিনী হিসেবে বিজিবিতে নারীদের অংশগ্রহণ সব ক্ষেত্রে পুরুষের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে চলায় নারীদের উৎসাহিত করবে।
বিজিবিতে এই ৯৭ জন নারী সদস্যের কাজের বিষয়ে বিজিবির মহাপরিচালক জানিয়েছেন, প্রাথমিক পর্যায়ে যেসব এলাকায় নারীরা চোরাচালানে যুক্ত হন, যেমন টেকনাফ, বেনাপোল—এসব জায়গায় তাঁদের নিয়োগ দেওয়া হবে। বিজিবির পাঁচটি হাসপাতালেও তাঁরা নিয়োগ পাবেন। বিজিবির সদর দপ্তর পিলখানাতেও তাঁরা কাজ করবেন। এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায়, যেখানে তাঁদের পদায়ন হোক না কেন, তাঁরা দক্ষতা ও কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখবেন। কারণ সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, নৌবাহিনী, পুলিশ বাহিনীতে নারী ও পুরুষ যথেষ্ট সাফল্যের পরিচয় দিচ্ছেন। আমাদের সমাজে ঐতিহ্যগতভাবে এমন ধারণা রয়েছে যে এই সব বাহিনীতে শুধু পুরুষেরাই অংশ নেবেন, এসব কাজ নারীদের উপযোগী নয়। কিন্তু নারীদের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে সে ধারণা ধীরে ধীরে বদলে যাচ্ছে।
সশস্ত্র বাহিনীগুলোর পুরুষকেন্দ্রিক বাস্তবতায় পরিবর্তন আনার জন্যও নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানো দরকার। নারী ও পুরুষের কিছু স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য ও গুণাবলি রয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীগুলো সম্পূর্ণ পুরুষপ্রবণ হওয়ায় নারীর নিজস্ব দক্ষতা, চিন্তা ও মেধা থেকে এসব প্রতিষ্ঠান বঞ্চিত হয়। নারীর অংশগ্রহণ যত বাড়বে এসব প্রতিষ্ঠান ততই পূর্ণতা অর্জনে সফল হবে।
সম্পূর্ণ পুরুষনির্ভর বিজিবিতে ছোট্ট একদল নারীর প্রবেশকে আমরা অত্যন্ত উৎসাহব্যঞ্জক ঘটনা বলে মনে করি। সমাজ ও রাষ্ট্রের সব ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ সমতা সৃষ্টির লক্ষ্যে এ রকম আরও পদক্ষেপ চাই।