নকল খাবারটাই বেশি লোভনীয়!

জিবে জল আসে, এমনই আকর্ষণীয় দেখতে খাবারটা। কিন্তু তা আসলে সত্যিকারের খাবার নয়, প্রতিরূপ। জাপানি রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীরা খদ্দের টানতে এ রকম ‘নকল খাবার’ সাজিয়ে রাখেন। এভাবেই চলে ক্ষুধার্ত ক্রেতাদের মনোযোগ কাড়ার প্রতিযোগিতা।
ভোজনবিলাসীদের দেশ জাপানে এমন দৃশ্য খুবই চেনা। প্রতিটি রেস্তোরাঁর সামনের দিকে থাকে নানা রকমের খাবারের প্রদর্শনী। ৭৯ বছর বয়সী নোরিয়ুকি মিশিমা দীর্ঘ ছয় দশক ধরে নকল খাবার সজ্জার কাজ করেন। প্লাস্টিকের তৈরি একটি ‘বিফ রোস্টে’ রং মাখাতে মাখাতে তিনি বললেন, ‘গুনে তো দেখিনি। তবে এ রকম লাখো জিনিস বানিয়েছি, তা বলতে পারি। সঠিক রংটা খুঁজে পাওয়া কিন্তু কঠিন।’
মিশিমার মতো আটজন টোকিওর শহরতলিতে হাতানাকা নামের একটি প্রতিষ্ঠান চালান। তাঁরা নিজেদের শিল্পীই মনে করেন। এই শিল্পীরা ‘নকল খাবার’ বানাতে বেছে নেন টেকসই সিলিকন। জাপানে প্রথম এ রকম খাবারের প্রতিরূপ বানানো হয় শ খানেক বছর আগে। গত শতকের ২০-এর দশকে চিকিৎসকদের জন্য মানুষের অঙ্গপ্রত্যঙ্গের প্রতিরূপ শিল্পীরাই বানিয়ে দিতেন। তাঁদের কাছে রেস্তোরাঁর মালিকেরা গিয়ে ফরমাশ করলেন অবিকল খাবারের মতো কিছু জিনিস বানিয়ে দিতে। ধারণাটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং জনপ্রিয়তা পায়। গ্রামের লোকজন বিষয়টির সঙ্গে শুরুতে অপরিচিত ছিল। তারা প্রথম দিকে রেস্তোরাঁর সামনে বাহারি খাবারের প্রদর্শনী দেখে বাবুর্চির দক্ষতার বিশেষ প্রশংসা করত।
বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করতেও জাপানি রেস্তোরাঁগুলো এই কৌশল কাজে লাগায়। খদ্দেররা খাবারের প্রতিরূপ দেখে ফরমাশ করার পর সেই অনুযায়ী রান্না করে দেন বাবুর্চি।
নোরিহিতো হাতানাকাদের পারিবারিক ব্যবসার গোড়াপত্তন হয়েছিল ষাটের দশকের মধ্যভাগে। তিনি বললেন, নকল খাবারগুলো দেখতে এতটাই অবিকল যে গ্রাহকদের অনেকে চট করে ধরতে পারেন না।