তামিমের বাড়িতে ঈদের ভোজ

ঈদুল আজহার দিন দুয়েক আগেই নড়াইলে নিজের বাড়ি গিয়েছিলেন ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মুর্তজা। ছিলেন টানা সাত দিন। ‘রান ফর নড়াইল’ পদযাত্রা, নিজের ক্লাবের অনুষ্ঠান, পরিবার বন্ধুদের সঙ্গে দারুণ সময় কাটিয়েছেন। আর মাশরাফিকে পেয়ে নড়াইলবাসী বরাবরের মতোই আনন্দে আত্মহারা। সারা দিন ভক্তদের ভিড় তাঁর বাড়ির সামনে। ওদিকে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচের কারণে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের ঈদের সময়টা কেটেছে চট্টগ্রামে। তাই তো ঈদের দিন দলের অনেক সদস্যই গেলেন চট্টগ্রামে ক্রিকেটার তামিম ইকবালের বাসায়। তামিমের আমন্ত্রণে ঈদের রাতের খাবারটা ওই বাড়িতে খেলেন তাঁরা। নড়াইলে মাশরাফির ঈদ এবং চট্টগ্রামে তামিমের বাসায় সতীর্থদের ঈদ-ভোজ নিয়ে এবারের প্রচ্ছদ প্রতিবেদন
ঈদের রাতে টেস্ট দলের অনেক সদস্যই হাজির হয়েছিলেন চট্টগ্রামে ক্রিকেটার তামিম ইকবালের বাসায়। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া
ঈদের রাতে টেস্ট দলের অনেক সদস্যই হাজির হয়েছিলেন চট্টগ্রামে ক্রিকেটার তামিম ইকবালের বাসায়। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

মেজবানি মাংসের লোভ কার না হয়। চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী এই খাবারের সুনাম দেশজুড়ে। তাই বন্দরনগরে এসে মেজবানি মাংসের স্বাদ না নিলে অপূর্ণতা থেকে যায়। ঢাকা টেস্টে অজিদের বধ করে চট্টগ্রামে এসে জনপ্রিয় খাবারটির স্বাদ নেয় টাইগার বাহিনী।

২ সেপ্টেম্বর ছিল ঈদুল আজহা। আকাশে মেঘ-বৃষ্টির খেলা চলছে। কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে ঈদের নামাজ আদায় করে বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা হোটেলে ফেরেন। এরপর মাঠের অনুশীলন। ঈদের দিনে কোথায় পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাবেন, খাওয়াদাওয়া চলবে, সেখানে অনুশীলন—এমন জীবন কার ভালো লাগে!

সেটা বলেও ফেললেন নাসির হোসেন, ‘পরিবারের বাইরে ঈদ করতে একটু খারাপ তো লাগেই। মিস করি খুব।’

ঈদের রাতে তামিমের বাসায় বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের কোচ ও কর্মকর্তারা।
ঈদের রাতে তামিমের বাসায় বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের কোচ ও কর্মকর্তারা।

তাঁদের এই খারাপ লাগা কিছুটা হলেও কমেছে ঈদের রাতে ঘরোয়া পরিবেশে মেজবানি মাংসের স্বাদ নিয়ে। চট্টগ্রাম নগরের কাজীর দেউড়ির ঐতিহ্যবাহী খান বাড়িতে তাঁরা এই স্বাদ নেন। বাংলাদেশ দলের সহ-অধিনায়ক তামিম ইকবালদের পৈতৃক বাড়ি এটি। ক্রিকেটাররা যেখানে অবস্থান করছেন সেই হোটেল র‌্যাডিসন ব্লু বে ভিউ থেকে বাড়িটির দূরত্ব মাত্র কয়েক শ গজ।

মূলত আকরাম খান ও তামিমের আমন্ত্রণেই টাইগার বাহিনী ঈদের দিন এই বাড়িতে অতিথি হয়ে যান। খেলোয়াড়েরা তো বটেই, বাংলাদেশ দলের কোচরাও ছিলেন অতিথি তালিকায়। শনিবার রাতে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে তাঁরা যান তামিমের বাড়ি।

এই বাড়িতে আগেও অনেকবার গেছেন ক্রিকেটাররা। ফলে আশপাশের লোকজনের আর বুঝতে বাকি থাকে না। সদ্য অস্ট্রেলিয়াকে হারানো ক্রিকেটারদের দেখতে উৎসুক মানুষের ভিড় লেগে যায়। যাক সে প্রসঙ্গ, শোনা যাক খাওয়াদাওয়ার গল্প।

টাইগার বাহিনীর জন্য খাবারের তালিকায় মেজবানি মাংস ছিল। এর সঙ্গে ছিল চট্টগ্রামের আরেকটি ঐতিহ্যবাহী খাবার গরু মাংসের কালা ভুনা। এ ছাড়া খাসির মাংস, মুরগি, শুঁটকিসহ চার রকমের ভর্তা, চিংড়ি, রুপচাঁদা মাছ, সবজি আরও কত কী।

তামিমের বাসায় বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের কয়েকজন সদস্য
তামিমের বাসায় বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের কয়েকজন সদস্য

এই মেজবানি মাংস খাওয়ার আবদার ক্রিকেটাররাই নাকি করেছেন। তামিমের চাচা বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক আকরাম খান বললেন, ‘তারা (ক্রিকেটাররা) কী খাবে জানতে চেয়েছিলাম। মেজবানি মাংস খেতে চাইল। তাই মেজবানি মাংসে আপ্যায়ন করা হয়। সঙ্গে আরও কিছু ছিল।’

ক্রিকেটাররা মজা করে খেয়েছেন। ঈদের রাতে দলের সঙ্গে যোগ দিয়ে সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিমও চলে যান তামিমের বাসায়। খাওয়াদাওয়া, মজা সবই চলেছে সমানে। চলেছে সেলফিও। তামিমের মা নুসরাত ইকবাল, ভাই ক্রিকেটার নাফিস ইকবালসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা তাঁদের খাওয়াদাওয়া তদারক করেন।

নাফিস ইকবাল বলেন, ‘ক্রিকেটাররা আমাদের পরিচিত। চাচা আকরাম খান আছেন। তামিম আছে। কিংবা আমিও এখনো খেলছি। ঈদের দিনে তারা পরিবারের বাইরে আছে। তাই তাদের জন্য একটু খাওয়াদাওয়ার আয়োজন করা হয়েছিল।’