যৌন আসক্তি বলে কিছু নেই, বলছেন বিশেষজ্ঞরা!

চলচ্চিত্র প্রযোজক হার্ভি উইনস্টেইন এখন অনেকের চোখেই যৌনতায় আসক্ত। ছবি: এএফপি
চলচ্চিত্র প্রযোজক হার্ভি উইনস্টেইন এখন অনেকের চোখেই যৌনতায় আসক্ত। ছবি: এএফপি

হলিউডের ডাকসাইটে চলচ্চিত্র প্রযোজক হার্ভি উইনস্টেইনের বিপক্ষে যৌন হয়রানির অভিযোগে প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো অভিনেত্রী মুখ খুলছেন। সংখ্যাটা ৩০ ছাড়িয়ে গেছে, যাঁদের মধ্যে রয়েছেন অ্যাঞ্জেলিনা জোলি, কেট বেকিনসেল, হিদার গ্রাহাম, গিনেথ প্যালট্রোর মতো অভিনেত্রীরা। এদিকে অ্যারিজোনার একটি পুনর্বাসন সেন্টারে শুক্রবার নিয়ে যাওয়া হয় উইনস্টেইনকে। অনেকে বলছেন, বিতর্ক থেকে মুখ বাঁচাতেই তিনি আশ্রয় নিয়েছেন পুনর্বাসন সেন্টারে। 

কিন্তু উইনস্টেইনের সর্বনাশ যা হওয়ার সেটা আগেই হয়েছে। ‘পাল্প ফিকশন’, ‘মালেনা’, ‘কিংস স্পিচ’, ‘শেক্‌সপিয়ার ইন লাভ’-এর মতো সিনেমার এ প্রযোজক এখন গোটা বিশ্বের চোখে যৌনতায় আসক্ত বিকৃত পুরুষ। তাঁর ভাই বব উইনস্টেইনের ভাষ্য, ‘আমার ভাই হার্ভি অবশ্যই বেশ অসুস্থ। এ ব্যাপারে পেশাদারি সাহায্য নেওয়ার জন্য আমিই তাকে বুঝিয়েছি।’
উইনস্টেইনের মতো যৌনতায় আসক্ত মানুষের সংখ্যা একেবারে কম নয়। এর আগে গলফ কিংবদন্তি টাইগার উডসের একের পর এক চমকে দেওয়া কেলেঙ্কারির খবর ফাঁস হয়েছিল। মাদকের মতো যেন যৌন আসক্তির নেশায় পড়েছিলেন উডস। তবে যৌন চিকিৎসক এবং মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন ভিন্ন কথা। তাঁদের মতে, যৌনতায় আসক্ত বলে কিছু নেই, অন্তত এ সমস্যাটাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় তাঁরা ‘রোগ’ বলতে রাজি নন!
২০১২ সালের এক গবেষণায় ‘হাইপার সেক্সুয়াল ডিসঅর্ডার’ কিংবা যৌনতায় আসক্তিকে প্রথমবারের মতো সংজ্ঞায়িত করেছে ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, লস অ্যাঞ্জেলেস (ইউসিএলএ)। তাদের মতে, কাউকে ‘আসক্ত’ হিসেবে চিহ্নিত করা যায়, যদি এসব (যৌন) কল্পনা তাঁর ব্যক্তিগত ও পেশাদার জীবনে ভীষণভাবে প্রভাব রাখে এবং সেটা যদি ড্রাগ, অ্যালকোহল কিংবা অন্য কোনো মানসিক সমস্যার জন্য না ঘটে থাকে।
পাঁচ বছর আগে ইউসিএলএর সেই গবেষণাকে ভিত্তিমূল হিসেবে ধরে পরে আরও বিস্তৃত পর্যায়ে গবেষণা হয়েছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাসোসিয়েশন অব সেক্সুয়ালিটি এডুকেটরস, কাউন্সিলরস অ্যান্ড থেরাপিস্টদের সংগঠন (এএএসইসিটি) মনে করছে, ২০১২ সালের সেই গবেষণা নাকি স্রেফ ফালতু কথার ঝুড়ি ছাড়া আর কিছুই নয়।
দেশটির নিবন্ধিত যৌন চিকিৎসক টম মারে মেইল অনলাইনকে বলেছেন, যৌনতায় আসক্তিকে শ্রেণিভুক্ত করার ব্যাপারে কোনো সমর্থন খুঁজে পায়নি এএএসইসিটি। এর ফলে এ নিয়ে অন্যরা যতই শোরগোল ফেলুক, চিকিৎসকদের বড় অংশ এখনো মনে করে না এটি কোনো রোগ, তা সে মানসিকই হোক, কিংবা শারীরবৃত্তীয়। সূত্র: ডেকান ক্রনিকল।