মাঠের বাইরে যেমন তারা

দেশের ক্রিকেট মেতেছে এখন বিপিএল উৎসবে! ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক এই টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট খেলতে বাংলাদেশে এসেছেন ও আসবেন বিশ্ব ক্রিকেটের অনেক বড় বড় তারকা। একেক দলে একেক ভূমিকা তাঁদের। কেউ খেলছেন অধিনায়ক হিসেবে, কেউ শুধুই খেলোয়াড়। কেউ-বা এসেছেন দলের কোচ হয়ে। মাঠের খেলার বাইরে বিদেশি ক্রিকেটারদের ব্যক্তিজীবনটা কম বর্ণাঢ্য নয়। জীবনযাপনে তাঁদের পছন্দ-অপছন্দের কথা থাকছে এই প্রতিবেদনে।

ড্যারেন স্যামি
ড্যারেন স্যামি


ড্যারেন স্যামি (রাজশাহী কিংস)

সব সময়ই হাসিখুশি থাকতে পছন্দ করেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপজয়ী এই অধিনায়ক। মানুষের চিৎকার-চেঁচামেচি তাঁর ভীষণ অপছন্দ। সংগীতপ্রিয় ক্যারিবীয় তারকা পছন্দ করেন বব মার্লে, শন পল আর কেলির গান শুনতে। প্রিয় ফিকশনাল হিরো সুপারম্যান। যদি ক্রিকেটার না হতেন, তবে কী হতেন—এই প্রশ্নে একবার বলেছিলেন, ‘সম্ভবত পাদরি হতাম।’ ক্রিকেটের বাইরে তাঁর প্রিয় খেলা টেবিল টেনিস, প্রিয় খেলোয়াড় রজার ফেদেরার ও উসাইন বোল্ট।

মাহেলা জয়াবর্ধনে
মাহেলা জয়াবর্ধনে


মাহেলা জয়াবর্ধনে (খুলনা টাইটানস)

খুবই ভোজনরসিক এই লঙ্কান কিংবদন্তি। খাবারের প্রতি তাঁর এতটাই টান যে প্রিয় বন্ধু সাঙ্গাকারার সঙ্গে কলম্বোয় চালু করেছেন রেস্তোরাঁ। তাঁদের ‘মিনিস্ট্রি অব ক্রাব’ তো এরই মধ্যে বিখ্যাত হয়ে উঠেছে। সাঙ্গাকারার মতো মাহেলারও প্রিয় খাবার রাইস ও কারি। তবে জয়াবর্ধনের খাবারে ডাল থাকতেই হবে। ব্রেন টিউমারে মাত্র ১৬ বছর বয়সে ছোট ভাই ধিশালের মৃত্যুটা ভীষণ ধাক্কা দিয়েছিল। খেলাই ছেড়ে দিয়েছিলেন। পরে আবারও ক্রিকেটে ফিরে এসেছেন। ভাইয়ের জন্য কিছু করার তাগিদে যুক্ত হয়েছেন দাতব্য কাজে। নিজেকে জড়িয়েছেন শ্রীলঙ্কার হোপ ক্যানসার হাসপাতাল প্রকল্পের সঙ্গে।

মিসবাহ-উল-হক
মিসবাহ-উল-হক


মিসবাহ-উল-হক (চিটাগং ভাইকিংস)

তাঁর পুরো ক্যারিয়ারটা যেন চমকে ভরা! এই বুঝি তাঁর ক্যারিয়ার শেষ—যখনই এমনটা ভাবা হয়েছে তখনই ফিরেছেন চমকে দিয়ে। গত মে মাসে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছেড়ে দেওয়া মিসবাহ এবার বিপিএলে চিটাগং ভাইকিংসের নেতৃত্ব দেবেন, সেটিই বা কে ভেবেছিল! মাঠে ও মাঠের বাইরে ভীষণ শান্ত-স্থির, যেটি পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের মধ্যে দেখা যায় কমই। পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের মধ্যে আরও একটি দিক থেকে তিনি ব্যতিক্রম—ক্রিকেটের সঙ্গে সমান গুরুত্ব দিয়েছেন পড়াশোনাকেও। স্নাতক সম্পন্ন করে পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএবিএ করেছেন। ক্রিকেটের বাইরে পছন্দ করেন হকি ও ফুটবল।

ক্রিস গেইল
ক্রিস গেইল


ক্রিস গেইল (রংপুর রাইডার্স)

টি-টোয়েন্টির সবচেয়ে বড় নাম। বিস্ফোরক ব্যাটিং বোলারদের আত্মারাম খাঁচাছাড়া করতে ভীষণ পারঙ্গম গেইল ক্রিকেটের বাইরে পছন্দ করেন ফুটবল। প্রিয় খেলোয়াড় ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, উসাইন বোল্ট। রোনালদো যে দলে খেলেন সেটিই প্রিয় হয়ে ওঠে এই জ্যামাইকান ওপেনারের কাছে। প্রিয় মাঠ জ্যামাইকার স্যাবাইনা পার্ক ও কেপটাউনের নিউল্যান্ডস। প্রিয় চলচ্চিত্র তারকা ব্রুস উইলস ও জেট লি। সংগীতপ্রিয় গেইল পছন্দ করেন আর অ্যান্ড বি এবং রেগে। প্রিয় সংগীত তারকা বিনি ম্যান। পছন্দ করেন জ্যামাইকার ঐতিহ্যবাহী খাবার অ্যাকি। ছুটি কাটাতে পছন্দ করেন অস্ট্রেলিয়ায়।

জস বাটলার
জস বাটলার


জস বাটলার (কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস)

নিজেকে যদি এক শব্দে বর্ণনা করেন, কী বলবেন? ‘শান্ত, কোনো কিছুতেই খুব একটা বিরক্ত হই না’—নিজেকে এভাবেই বর্ণনা করেন বাটলার। উচ্চকণ্ঠ নয়, কথা বলতে পছন্দ করেন নরম সুরে। ডেভিড ব্যাকহামের বিরাট ভক্ত। বাটলারের মতে, সাবেক এই ইংলিশ ফুটবলারের যত বয়স হচ্ছে ততই নাকি তরুণ হচ্ছেন! কুমিল্লার ইংলিশ টপঅর্ডার এই ব্যাটসম্যানের পছন্দের তালিকায় আছেন জেমস বন্ডও। যদি প্রাণী হওয়ার সুযোগ থাকত, কোন প্রাণী হতেন? এই প্রশ্নে ইংলিশ উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান বলেছিলেন, ‘সিংহ, সারা দিন ঘুমায়! কী দারুণ জীবন তাদের!’

কুমার সাঙ্গাকারা
কুমার সাঙ্গাকারা


কুমার সাঙ্গাকারা (ঢাকা ডায়নামাইটস)

শ্রীলঙ্কান এই কিংবদন্তি অগুনতি ক্রিকেটারের আদর্শ। তবে তাঁর প্রিয় খেলোয়াড় ব্রায়ান লারা ও স্যার ভিভ রিচার্ডস। প্রিয় খাবার শ্রীলঙ্কান রাইস ও কারি। ঘুরতে পছন্দ করেন দক্ষিণ আফ্রিকায়। তাঁর প্রিয় বন্ধু কে, সেটি কী আর বলতে! মাহেলা জয়াবর্ধনে। ঢাকায় এসে সবচেয়ে বেশি পছন্দ করেন এখানকার মানুষ ও আতিথেয়তাকে। ‘ফ্যান্টাসটিক’ শব্দটা খুবই পছন্দ তাঁর। তবে নিজেকে খুবই অগোছালো মানুষ হিসেবেই দাবি করেন। ঢাকা ডায়নামাইটসের এই শ্রীলঙ্কান ওপেনারের কাছে সবচেয়ে শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি নেলসন ম্যান্ডেলা। স্যামির মতো সাঙ্গারও প্রিয় ফিকশনাল চরিত্র সুপারম্যান। কেন জানেন? সুপারম্যান অন্তর্বাসটা বাইরে পরে বলে! সাঙ্গাকারার কাছে সুখের সংজ্ঞা হচ্ছে পরিবার।

তথ্যসূত্র: ক্রিকইনফো, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, অল আউট ক্রিকেট