এই তো জীবন

খচমচ আওয়াজে ঘুমটা ভেঙে গেল। মুখের ওপর থেকে কাঁথাটা সরিয়ে দেখি আলামিন ভাই খিচুড়ি খাচ্ছে। জানালার পর্দার ফাঁক গলে আলো আসছে ভেতরে। রাগস্বরে বলি, ‘এই সাতসকালে দিলেন তো ঘুমটা নষ্ট করে।’

‘সকাল নয়টা বাজে, অফিসে যাবেন না? এ জন্যই তো শব্দ করেছি।’ উত্তর দিয়েই আলামিন ভাই বেরিয়ে গেল। দুই দিন ধরে সারা দেশে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি হচ্ছে। শীতকালের অভাগা বৃষ্টি!

গতকাল সারা দিন বিছানায় কাটিয়েছি। মোবাইলে টিভি দেখছি, আবহাওয়ার খবরে বলছে, আরও দুই দিন থাকতে পারে এই বৃষ্টিপাত। পত্রিকায়ও সেটাই পড়লাম। সিদ্ধান্ত নিয়েছি আজ আর অফিসে যাব না।

কিছুক্ষণ পর মোবাইলে প্রচারণার মেসেজ। সেটা পড়তেই দেখি এমডি স্যারের মেসেজ। বেলা সাড়ে তিনটায় মিটিং, সবাইকে থাকার অনুরোধ।

তড়িঘড়ি করে বেরিয়ে পড়ি। বাসের জানালার ফাঁক দিয়ে দেখি, শ্রমিক কাজ করছে, বাচ্চা মেয়েটা ফুল হাতে দাঁড়িয়ে, এই ঠান্ডা আবহাওয়ায় কেউ কেউ বলছে, ‘এই পানি আছে, পানি।’ চানাচুর বিক্রেতাও মাথায় গামছা বেঁধে এক গাড়ি থেকে অন্য গাড়িতে ছুটছে।

আসলেই তো, এমন আবহাওয়া তো গরিবের জন্য না। আমার মতো নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে অন্য আর দশটা সাধারণ দিনের চেয়ে বেশি যন্ত্রণার।

মিজানুর রহমান

ঢাকা