সবচেয়ে বড় মৌলিক সংখ্যা

মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, মৌলিক সংখ্যা কী? যে সংখ্যাকে ১ এবং সেই সংখ্যা ছাড়া অন্য কোনো সংখ্যা দিয়ে নিঃশেষে ভাগ করা যায় না, তা-ই মৌলিক সংখ্যা। উদাহরণ হিসেবে ২, ৩, ৫, ৭-এর কথা বলা যেতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসি অঙ্গরাজ্যের এক তড়িৎ প্রকৌশলী সবচেয়ে বড় মৌলিক সংখ্যা আবিষ্কারের দাবি করেছেন। এতে ২ কোটি ৩০ লাখ অঙ্ক রয়েছে।

এ পর্যন্ত জানা যত মৌলিক সংখ্যা রয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে ছোটটি হলো ২। ১ মৌলিক সংখ্যা নয়, কারণ এই সংখ্যাকে তাকে ছাড়া দ্বিতীয় কোনো সংখ্যা দিয়ে নিঃশেষে ভাগ করা যায় না। বহু যুগ ধরে গণিতবিদেরা সবচেয়ে বড় মৌলিক সংখ্যার সন্ধান করছেন। এরই অংশ হিসেবে ১৯৯৬ সালে যাত্রা শুরু করে গ্রেট ইন্টারনেট মারসেন প্রাইম সার্চ (জিআইএমপিএস) প্রকল্প। এটিস্বেচ্ছাসেবীদের একটি প্রকল্প, যাঁরা সফটওয়্যারের মাধ্যমে সবচেয়ে বড় মৌলিক সংখ্যার অনুসন্ধান করেন। জনাথন পেস নামের ওই তড়িৎ প্রকৌশলী এ প্রকল্পেরই সদস্য। ১৪ বছরের চেষ্টায় তিনি সবচেয়ে বড় মৌলিক সংখ্যাটি আবিষ্কার করেছেন। সংক্ষেপে এর নাম দেওয়া হয়েছে M77232917।

জিআইএমপিএসের নামকরণ করা হয়েছে ফরাসি গণিতবিদ মেরিন মারসেনের নামে। ১৭ শতকের গোড়ার দিকে তিনি মৌলিক সংখ্যা নির্ণয়ের একটি সূত্র দেন। এই সূত্র অনুযায়ী, ২-এর ঘাত (পাওয়ার) ইংরেজি ‘এন’ ধরে প্রাপ্ত ফলাফল থেকে ১ বাদ দিলে যা পাওয়া যায়, তা-ই মৌলিক সংখ্যা। জনাথন ২-এর ঘাত হিসেবে ৭ কোটি ৭২ লাখ ৩২ হাজার ৯১৭ ধরে তার মান নির্ণয় করেন। তারপর তা থেকে ১ বাদ দিয়ে মৌলিক সংখ্যাটির সন্ধান পেয়েছেন। এ জন্য তাঁকে টানা ছয় দিন কম্পিউটারে হিসাব কষতে হয়েছে।

জনাথনের পাওয়া এই মৌলিক সংখ্যা মারসেন মৌলিক সংখ্যা সিরিজের ৫০তম এবং জিআইএমপিএস প্রকল্পের ১৬তম আবিষ্কার। আগের সংখ্যাটির সন্ধান মিলেছিল ২০১৬ সালে।

তবে এখনই স্বীকৃতি পাচ্ছেন না জনাথন। চারটি আলাদা কম্পিউটারে আলাদা প্রোগ্রামের মাধ্যমে তাঁর প্রাপ্ত ফলাফল যাচাই করা হবে। নির্ভুল প্রমাণিত হলে জনাথনকে জিআইএমপিএস গবেষণায় আবিষ্কারের স্বীকৃতি হিসেবে তিন হাজার মার্কিন ডলার পুরস্কার দেওয়া হবে।

টেনেসির মার্টিন শহরে অবস্থিত ইউনিভার্সিটি অব টেনেসির অধ্যাপক ও গণিতবিদ ক্রিস কালডওয়েল বলেছেন, তিনি বিস্মিত, কারণ এবারের মৌলিক সংখ্যাটির সন্ধান বেশ দ্রুতই মিলেছে।