রংধনু ডাইনোসর

পাখিদের পূর্বপুরুষ কে? অনেকেই বলবেন, ডাইনোসর। এই তত্ত্বের পেছনের যুক্তিকে আরও দৃঢ় করতে চীনে নতুন প্রজাতির একটি ডাইনোসরের জীবাশ্মের সন্ধান পাওয়া গেছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই ডাইনোসরের মাথা, বুক আর লেজের পালকগুলোয় যেন রংধনুর রং খেলা করত।

ডাইনোসরটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘কায়হং জুজি’। মান্দারিন এই শব্দ যুগলের অর্থ, ‘বড় ঝুঁটিতে রংধনু’। ডাইনোসরটি নিয়ে চায়নিজ একাডেমি অব সায়েন্সেসের গবেষক দলের রচিত একটি নিবন্ধ গতকাল সোমবার যুক্তরাজ্যভিত্তিক নেচার পাবলিশিং
 গ্রুপের সাময়িকী নেচার কমিউনিকেশনস-এ প্রকাশ হয়েছে।

চীনের ওই বিজ্ঞানীরা জানান, চীনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় হেবেই প্রদেশে জীবাশ্মটির সন্ধান পান স্থানীয় এক কৃষক। ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে কর্তৃপক্ষ তাঁর কাছ থেকে জীবাশ্মটি বুঝে নেয়। এরপর শেনিয়াং নরমাল ইউনিভার্সিটির জীবাশ্মবিদ ডঙ্গিউ হু এটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। ডাইনোসরটির পালকে যে রং ছিল, সেটা তাঁর চোখেই প্রথম ধরা পড়ে। এরপর চায়নিজ একাডেমি অব সায়েন্সেসের বিজ্ঞানীদের হাতে আসে জীবাশ্মটি। আকারে এটি বড়জোর একটি হাঁসের সমান হবে। তবে এর পালকগুলোর বিন্যাস এমনই ছিল যে দেখতে বর্তমান সময়ের হামিংবার্ডের মতো ছিল। এই পাখির পালকগুলো এমন যে দৃষ্টিকোণের পরিবর্তনের সঙ্গে এতে প্রতিফলিত আলোর রং বদলে যায়। নতুন প্রজাতির ডাইনোসরটির মাথার গঠন অনেকটা ভেলোসিরাপ্টর প্রজাতির ডাইনোসরের মতো বলে জানিয়েছেন গবেষকেরা।

চায়নিজ একাডেমি অব সায়েন্সেসের গবেষক দলের ধারণা, সামাজিক যোগাযোগ অথবা প্রজননে ডাইনোসরটির বর্ণিল পালক বিন্যাসের ভূমিকা থাকতে পারে।

গবেষণা নিবন্ধটির সহলেখক সিয়াং সু। চায়নিজ একাডেমি অব সায়েন্সেসের এই জীবাশ্মবিদ জানান, রংধনু ডাইনোসরেরা বনবাদাড়ে বাস করত। এক গাছ থেকে অন্য গাছে উড়ে বেড়াত তারা। ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণী আর গিরগিটি ছিল তাদের খাবার। সিয়াং সু বলেন, ‘আমি এর আগেও বহু পালকযুক্ত ডাইনোসরের জীবাশ্ম দেখেছি, সেগুলো নিয়ে কাজ করেছি। কিন্তু এবারের ডাইনোসরটির বর্ণিল পালক বিন্যাস দেখে আমি অভিভূত।’