ম্যালেরিয়া ঠেকাতে রোবট গবেষক

ওষুধ প্রতিরোধী ম্যালেরিয়া জীবাণুর হুমকি দিনে দিনে বাড়ছে। সাম্প্রতিক হিসাব বলছে, বছরে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষের মৃত্যু হয় ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে। বিশেষ করে আফ্রিকা ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে স্ত্রী অ্যানোফিলিস মশার বিচরণ বেশি হওয়ায় সেখানকার লোকজন সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে। এ ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার একটি রোবট আশা দেখাচ্ছে। টুথপেস্টে থাকে এমন একটি উপাদান শনাক্ত করেছে এই রোবট, যা দিয়ে ম্যালেরিয়া জীবাণু ঠেকানো যাবে।

গবেষণাগারে কাজ করা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ওই রোবটের নাম ইভ। এটির উদ্ভাবন-সংক্রান্ত একটি গবেষণা প্রতিবেদন যুক্তরাজ্যভিত্তিক নেচার পাবলিশিং গ্রুপের সাময়িকী সায়েন্স রিপোর্টস-এ প্রকাশ হয়েছে।

ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে পাইরিমেথামিন ওষুধ ব্যবহার করা হয়। যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যমতে, এই ওষুধ ম্যালেরিয়া জীবাণুর ডিএইচএফআর নামের একটি বিশেষ এনজাইমের বিস্তারে বাধা দেয়। কিন্তু ম্যালেরিয়ার জীবাণু ওষুধ প্রতিরোধী হয়ে উঠলে এটি আর তেমন কাজে দেয় না। ইভ নামের ওই রোবট উদ্ভাবন করেছে, ট্রাইক্লোসান নামের একটি উপাদান দিয়ে ওষুধ প্রতিরোধী ম্যালেরিয়া জীবাণুও ঠেকানো সম্ভব। সাধারণত সব টুথপেস্টেই এই উপাদান থাকে।

গবেষণা নিবন্ধটির মূল লেখক এলিজাবেথ বিলস্ল্যান্ড। তিনি বর্তমানে ব্রাজিলের ক্যামপিনাস বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত। তাঁর ভাষ্য, ‘আমাদের রোবট সহকর্মী ইভের এই উদ্ভাবন ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে নতুন আশা দেখাচ্ছে।’ তিনি জানান, ম্যালেরিয়া জীবাণুর জীবনচক্রের যে দুই দশায় এগুলো যকৃৎ ও রক্তে ছড়িয়ে পড়ে, সেই দশাগুলোয় ট্রাইক্লোসান দিয়ে রোগীর দেহে প্রতিরোধ গড়ে তোলা সম্ভব হবে বলে আশা করছেন তাঁরা।

আর কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়নের অধ্যাপক স্টিভ অলিভার মনে করছেন, ম্যালেরিয়ার জীবাণু যেভাবে ওষুধ প্রতিরোধী হয়ে উঠছে, তাতে নতুন ওষুধের অনুসন্ধান জরুরি হয়ে পড়েছে। এ ক্ষেত্রে আশার আলো দেখিয়েছে রোবট ইভ।