নদী

দেশের জন্য মন আবার চঞ্চল হয়ে উঠল। আমার সামনে দিয়ে বয়ে যাচ্ছে ডার্লিং নদী। অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম প্রধান নদী এটি। যেটি অ্যাডিলেড, নিউ সাউথ ওয়েলস হয়ে ব্রিসবেন গিয়ে পৌঁছেছে। যাওয়ার পথে হাত বাড়িয়ে ছুঁয়েছে ক্যানবেরাকেও।

বাইনারি ও অ্যালগরিদম করে হাঁপিয়ে উঠলে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ডার্লিং নদীর তীরে এসে বসি। এখানে এসে যেন হাঁপ ছেড়ে বাঁচি। আমার মতো অনেকেই আসেন—তাঁদের কেউ চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, আবার কেউ আমার মতোই ছাত্র।

আজ গাছপালার ছায়ায় ঘেরা নির্জন উঁচু জায়গাটায় তাঁবু টানিয়েছি। তীরের একটা উঁচু পাথরে বসে আছি নদীতে ছিপ ফেলে। বাতাসে লাইলাক ফুলের তীব্র সুবাস। উদাসী বাতাস এখানে কেমন যেন নিজের সম্পর্কে অনিশ্চিত, গাছগাছালির ফাঁক-ফোকরে হারানো কী যেন খুঁজে ফিরছে। তখনই আমার মন চলে গেল আমাদের বাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ছোট্ট নদীটির কাছে। আহা, আমার নদী। কত বিকেল সন্ধ্যায় গিয়ে ঠেকেছে নদীর তীরে বসে। বুক চিরে বেরিয়ে এল দীর্ঘশ্বাস।

সন্ধ্যাটা স্থির। কিন্তু আঁধার ঘনিয়ে এসেছে এরই মধ্যে। মাথার ওপর আকাশ অবশ্য এখনো স্বচ্ছ নীল। অস্তরাগ ছড়িয়ে বিদায় নিয়েছে সূর্য। ছিপ গুটিয়ে নিলাম দ্রুত। ক্যাম্পে ফেরার সময় নেটসহ তুলে নিলাম ধরা পড়া মাঝারি আকৃতির দুটো ট্রাউট মাছ। আনমনে বাংলা গানের সুর ভাঁজতে ভাঁজতে ক্যাম্পের উদ্দেশে পা বাড়ালাম।

অনির্বাণ

গ্রিফিথ বিশ্ববিদ্যালয়, অস্ট্রেলিয়া