ভক্তের মেলায়

ফ্যান ফেস্টে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করেছেন আবদুল মান্নান
ফ্যান ফেস্টে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করেছেন আবদুল মান্নান

ব্যাপারটা অনেকটা দুধের সাধ ঘোলে মেটানোর মতো। আরেকটু সহজ করে বললে গ্যালারির সাধ ‘ফ্যান ফেস্টে’ মেটানো।

বিশ্বের আনাচকানাচ থেকে বহু লোক হাজির হয়েছেন রাশিয়ায়, ফুটবল বিশ্বকাপ দেখবেন বলে। টিকিট পেয়ে যাঁরা গ্যালারিতে বসে খেলা দেখছেন, তাঁরা নিশ্চয়ই সৌভাগ্যবান। আর যাঁরা টিকিট পান না, তাঁদের মধ্যে অনেকে চলে যান ফ্যান ফেস্টে। রাশিয়ায় ফ্যান ফেস্ট হলো বিশাল এক মেলার মতো। ফুটবল-ভক্তদের মেলা বলতে পারেন। নানা দেশের হাজারো মানুষ এখানে জড়ো হন। বিশাল বিশাল প্রজেক্টরে খেলা দেখেন। এলাহি কারবার বটে!

আমি বাংলাদেশের ছেলে। থাকি রাশিয়ার সামারা স্টেটে। এখানকার সামারা ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সুবাদে এবারের বিশ্বকাপে আমি ফ্যান ফেস্টে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। ধন্যবাদ দিতে হয় রাশিয়ান কালচার ফর এডুকেশনের প্রধান নির্বাহী ইলেনা বাস ম্যামকে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে তিনি আমাকে সাহায্য করেছিলেন।

হাজার হাজার লোক এসেছে খেলা দেখতে, আর আমরা স্বেচ্ছাসেবকেরা নিজ নিজ জায়গায় দাঁড়িয়ে দায়িত্ব পালন করেছি। এই কাজের জন্য অবশ্য কিছু সম্মানীর ব্যবস্থাও ছিল।

ফ্যান ফেস্টে বাইরে থেকে খাবার নিয়ে প্রবেশ করা নিষেধ। তার অবশ্য প্রয়োজনও পড়ে না। কারণ, ঐতিহ্যবাহী রুশ খাবার, কনসার্ট, খেলাধুলার ব্যবস্থা—সবই থাকে এখানে। আমার কাছে সবচেয়ে আশ্চর্য লেগেছে, এত মানুষ একসঙ্গে জড়ো হয়, অথচ কোনো বিশৃঙ্খলা হয় না। সব সাজানো-গোছানো। সবাই বন্ধুসুলভ, হাস্যোজ্জ্বল। একে অপরের সঙ্গে সেলফি তোলে, কথা বলে। ভাষা না মিললেও এখানে মনের ভাব আদান-প্রদান কোনো সমস্যা নয়। কোনো না কোনোভাবে কথাবার্তা হয়েই যায়।

ফুটবল বিশ্বকাপ উপলক্ষে এখানকার স্থানীয়রা একটা প্রীতি ফুটবল ম্যাচ আয়োজন করেছিল। সেখানে আমিও খেলেছি। খেলায় জিতেছে আমার দল। কখনো ভাবিনি, ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’-এর মৌসুমে খুব কাছ থেকে ফুটবলের উন্মাদনা দেখার সুযোগ হবে। এখনো এই অভিজ্ঞতা স্বপ্নের মতো মনে হয়।