আসুন, ইতিবাচক প্রতিবেদন করি

২৫ অক্টোবর নীলফামারীর সৈয়দপুর বিমানবন্দর থেকে বিমান বাংলাদেশের একটি ফ্লাইট উড্ডয়নের সঙ্গে সঙ্গে খুলে পড়ে বিমানের একটি চাকা। শেষতক ফ্লাইটটি কোনো অঘটন না ঘটিয়েই ঢাকায় ল্যান্ড করে। তারপর এই ঘটনা নিয়ে পত্রিকা আর টিভিগুলোতে প্রচারিত হয় প্রতিবেদন। বলা বাহুল্য, সবই ছিল নেতিবাচক। কিন্তু খবরটিকে আমরা চাইলেই দারুণ ইতিবাচকভাবে উপস্থাপন করতে পারি। লিখেছেন আহমেদ খান

বিনয়ের কাছে ফিরে গেল চাকা
বিমান-সাহিত্য প্রতিবেদক
বিনয় মজুমদার বিখ্যাত কবি। তাঁর কবিতা পাঠের সঙ্গে সঙ্গে বুকের মধ্যে চিনচিনে ব্যথা হয়, এমন কথা অনেকে বলেছেন। তাঁর একটা কবিতার বই আছে, নাম ফিরে এসো, চাকা। কিন্তু এমন নামের বই লিখলে কী হবে? এত দিন কোনো চাকা বিনয় মজুমদারের কাছে ফিরে যায়নি। কবির এই আহ্বানে সাড়া দিতেই আজ বিকেলে সৈয়দপুর থেকে উড্ডয়নের সময় একটি বিমানের চাকা খসে পড়েছে নিচে। আসলে বিমানের চাকাটি ফিরে যেতে চাইছিল বিনয়ের কাছে। বিমানের চাকার মতো একটি বস্তু কবিতার প্রতি, কবির প্রতি যে আবেগ পুষে রেখেছিল, তা অভূতপূর্ব।

আকাশ থেকে খসে পড়া সেই চাকাটি বিনয়ের কাছে শেষ পর্যন্ত পৌঁছাতে না পারলেও কবিতাপ্রেমী অনেকেই আনন্দাশ্রুতে ভেসেছেন। তাঁরা বিনয়েরই কবিতা ধার করে উচ্চারণ করেছেন, ‘বিমান আকাশে গেলে প্রকৃত চাকা খসে যায়!’

অন্যদিকে ‘নিখিল বিশ্ব কবিতা সমিতি’ বিমানের এই বিশেষ চাকাকে সংবর্ধনা দেওয়ার চিন্তাভাবনা করছে। তারা বলে, ‘এই বিশেষ চাকার স্পিরিট পৃথিবীময় ছড়িয়ে দিতে হবে। একদিন নিশ্চয়ই বিমানের সব চাকা ফিরে যেতে চাইবে বিনয়ের কাছে। কবিকে এবং তাঁর কবিতাকে এভাবেই আমরা যুগে যুগে স্মরণ করে যাব।’

এক চাকা ছাড়াই বিমানের ফ্লাইটের সফল অবতরণ

ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি

বিমান বাংলাদেশের আরেকটি সফল পরীক্ষা, খুলে গেল সম্ভাবনার নতুন দুয়ার! ২৫ অক্টোবর সকালে বিমানের একটি ফ্লাইট আকাশে ওড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার একটি চাকা খুলে ফেলতে সমর্থ হয়। এটি ছিল দীর্ঘ এক গবেষণার প্রাথমিক পরীক্ষা। চাকাটি খুলে ফেলার সঙ্গে সঙ্গে নিচ থেকে গবেষকেরা হোই হোই করে আনন্দনৃত্য শুরু করেন। চাঁদে প্রথম উপগ্রহ পাঠানোর সঙ্গে তুলনা করে এক গবেষক বলেন, ‘চাঁদে মানুষ যাওয়ার সময় নভোযানের একটি অংশ খুলে ফেলতে হয়েছিল। এখানেও বিমানের ফ্লাইট তার চাকা খুলে ফেলতে সক্ষম হয়েছে। এটা ছিল এক আশাজাগানিয়া দুরন্ত মুহূর্ত! উত্তেজনায় আমাদের হাতের তালু ঘামছিল আর খুশিতে আমরা টগবগ করে ফুটছিলাম!’ গবেষক আরও জানান, এখানেই তাঁদের গবেষণা শেষ হয়ে যাচ্ছে না। তাঁদের মূল লক্ষ্য, চাকা ছাড়াই ফ্লাইটটি ল্যান্ড করাতে পারি কি না, তা পর্যবেক্ষণ করা।

মাধ্যাকর্ষণের সফল পরীক্ষা করল বিমান

বিশেষ প্রতিনিধি

এই প্রজন্ম আধখাওয়া আপেল নিয়ে ব্যস্ত। ভুলতে বসেছে নিউটনের আদি ও অকৃত্রিম আপেল-পতন গল্প, ভুলতে বসেছে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির মাহাত্ম্য। আর এসব ভুলে যাওয়ার কারণেই মানুষের পতন হচ্ছে প্রতিনিয়ত। মানবসভ্যতার এহেন ক্রান্তিলগ্নে বিমান নিয়েছে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। নিউটনের মাথায় যেমন আপেল পড়েছিল, বিমানও তেমনি ওপর থেকে ফেলেছে তার একটি চাকা। প্রমাণ করেছে, ওপর থেকে একটা বস্তু ফেলে দিলে নিচেই পড়ে, উড়ে মহাকাশে চলে যায় না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাতেকলমে বিজ্ঞান গবেষণার এমন উদাহরণ এর আগে কোথাও দেখা যায়নি। এরই মধ্যে বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিংস এক অভিনন্দনবার্তায় বিমান বাংলাদেশকে লিখেছেন, ‘স্যার আইজাক নিউটনের পর এত চমৎকারভাবে মাধ্যাকর্ষণ বিষয়টা আর কেউ বোঝাতে পারেনি। বিজ্ঞানে আপনাদের এই অবদান আমরা আজীবন শ্রদ্ধার সঙ্গে মনে রাখব।’