হাথুরুর পদত্যাগ, কিছু মন্তব্য

বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের পদত্যাগের ঘটনায় নানান মন্তব্য করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। মাঠঘাট ঘুরে বাতাসে ভেসে বেড়ানো সেসব মন্তব্য সংগ্রহ করেছেন রস+আলোর একান্ত নিজস্ব প্রতিবেদক শরীফ মজুমদার। আঁকা: রাকিব রাজ্জাক




বিদ্যামন্ত্রী

হাথুরুসিংহের পদত্যাগের ঘটনা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। আপনারা জানেন, আমাদের বিদ্যা মন্ত্রণালয় কোচিং ব্যবস্থার ওপর অনেক নিয়মকানুন আরোপ করেছে। বলা বাহুল্য, অলিতে-গলিতে গজিয়ে ওঠা কোচিং সেন্টারগুলোর মতো হাথুরুর কোচিংয়েও অনেক গলদ ছিল। হতে পারে কোচিং সেন্টারগুলো নিয়ে আমাদের সিদ্ধান্তে আঁতে ব্যাপক ঘা লাগাতেই হাথুরু এই ডিসিশন নিয়েছেন। এদিক দিয়ে হাথুরুর পদত্যাগ আমাদের বিদ্যা মন্ত্রণালয়ের জন্য একটা বিরাট সাফল্য বলা চলে।

সমালোচক

হায়রে! দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে কয়েকটা ম্যাচ হেরেই কুইট করে বসল? আসলে হাথুরুর মনোবলই দুর্বল। এমন একজন ভিতু মানুষ আর যা-ই হোক, একটা ন্যাশনাল টিমের হেড কোচ কীভাবে হয়, সেটা আমার বোধগম্য নয়। অথচ হ্যাট-ট্যাট পরে কী ভাবটাই না নিত! এখন তো ঠিকই বোঝা গেছে ওনার হ্যাডম কদ্দুর। ক্রিকেট কোচিং ছেড়ে হাথুরুর বরং কোনো কোচিং সেন্টারে মাস্টারি করা উচিত। আর যা-ই হোক, পণ্ডিতি তো উনি ভালোই পারেন।

উড়োজাহাজমন্ত্রী

এটি আমাদের জন্য এক বিরাট ধাক্কা। এমনিতেই বছর বছর আমরা লোকসান গুনে কূল পাই না, তার ওপর এমন একটা ঘটনা! হাথুরুর মতো একজন আন্তর্জাতিক মানের প্যাসেঞ্জার হারানোয় আমাদের লোকসানের অঙ্ক বেড়ে যাবে আরও কয়েক গুণ! তাঁর পদত্যাগে আমরা নিদারুণ শোকাহত।

কোচিং সেন্টারের মালিক

হাথুরু স্যারের এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে সম্পূর্ণভাবে একাত্মতা ঘোষণা করছি। আমরা কোচিংওয়ালারা কত কাঠখড় পুড়িয়ে ছেলেমেয়েদের জ্ঞান দিয়ে বেড়াই, অথচ দুষ্টু লোকেরা খালি বলে বেড়ায়, কোচিং সেন্টার এই রে, কোচিং সেন্টার সেই রে। এই লোকগুলোই হাথুরু স্যারের কোচিং নিয়ে উল্টাপাল্টা বলছিল। এখন স্যার যে পদত্যাগ করছেন, একদম উচিত কাজ হইছে।

মোটিভেশনাল স্পিকার

মোটিভেশন, জাস্ট একটু মোটিভেশনের অভাবে হাথুরু এই কাজটা করেছেন। দক্ষিণ আফ্রিকায় হেরে তাঁর মনোবল ভেঙে গিয়েছিল। কিন্তু লাইফে উত্থান-পতন, হার-জিত তো আছেই, তাই বলে কি হাল ছেড়ে দিতে হবে? ঠিক এই কথাটাই হাথুরুকে বলার মতো কেউ ছিল না। আমার মতে, সামনে যে কোচ আসবেন, তাঁর জন্য বিসিবি এখন থেকেই একজন মোটিভেশনাল স্পিকার নিয়োগ দিতে পারে। এই প্রসঙ্গে বলে রাখি, বিসিবি চাইলে আমার কোনো আপত্তি থাকবে না।

শুভাকাঙ্ক্ষী

হাথুরুসিংহে একজন মাটির মানুষ ছিলেন। কথাবার্তায়, আচার-আচরণে এমন নম্রভদ্র মানুষ খুব কমই দেখা যায়। এত বড় একজন ব্যক্তিত্ব, অথচ কী বিনয়! খুব সহজেই মানুষের সঙ্গে মিশে যেতে পারতেন। এক মুহূর্তেই যে কাউকে আপন করে নেওয়ার এক অদ্ভুত ক্ষমতা ছিল তাঁর। খেলোয়াড়দের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল ইয়ার-দোস্তের মতো। আর দারুণ সম্মোহনী ক্ষমতা ছিল তাঁর ব্যক্তিত্বে। এমন একজন মানুষের পদত্যাগে আমি যারপরনাই দুঃখিত। তাঁর উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করি।